সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভালোবাসা আর সম্মানের বন্ধন বিয়ে। সঙ্গীর সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করা। কিন্তু জানেন কি, এমন বেশ কিছু দেশ রয়েছে যেখানে ইচ্ছা হলেই চার হাত এক করার সুযোগ হয় না মেয়েদের। তাঁদের ইচ্ছার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বিভিন্ন বিষয়। আর তাই এসব দেশে দিনে দিনে বেড়েই চলেছে কুমারীর সংখ্যা!
২০১০ সালে কুয়েতের জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘আল রাই’-এর একটি সমীক্ষায় চোখ বুলোলে চমকে উঠতে হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, মিশরে অবিবাহিত মুসলিম মহিলাদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সেখানে প্রায় ৯০ লক্ষ মহিলা অবিবাহিত। এই মহিলাদের বয়স ২৪ থেকে ৩৫-এর মধ্যে। মিশরের পরেই রয়েছে আলজেরিয়া যেখানে অবিবাহিত মহিলা রয়েছেন ৪০ লক্ষ। এই সংখ্যা ইরাকে ৩০ লক্ষ, ইয়েমেনে ২ লক্ষ। এমনকী সৌদি আরব, তিউনিসিয়া, সুদানে প্রায় ১.৫ লক্ষ মহিলা এখনও বিয়ে করেননি। এছাড়া সিরিয়ায় এই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ হাজার, এবং লেবাননে ৪৫ হাজার।
প্রশ্ন উঠছে, এইসব দেশগুলিতে অবিবাহিত নারীদের সংখ্যা এত বেশি কেন?
এর প্রধান কারণ, এই দেশগুলিতে বিবাহের রীতি-নীতি ও সামাজিক অনুষ্ঠানের খরচের পরিমাণ আকাশছোঁয়া। বিয়ের যৌতুক, উপহার, ব্যয়বহুল আনুষ্ঠানিকতা বহন করা বেশিরভাগ পরিবারের কাছেই খুব কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে, বহু বিয়ে এই জন্যই শেষ পর্যন্ত আর হয়ে ওঠে না। দ্বিতীয়ত, বিবাহিত জীবনে নারীদের নিরাপত্তার অভাব রয়েছে এইসব দেশগুলিতে। বিবাহপরবর্তী জীবনে পুরুষের হিংসাত্মক আচরণ ও ভোগসর্বস্ব মনোভাব নারীদের বিয়েতে নিরুৎসাহিত করে তুলেছে। তৃতীয়ত, মেয়েরা এখন নিজেদের প্রতিষ্ঠিত না করে বিয়েতে কোনও ভাবেই আগ্রহী নন। তাই, ব্যক্তিগত জীবনে বিয়ে নিয়ে তাঁরা কেউই খুব বেশি মাথা ঘামান না।
‘আল রাই’-এর প্রতিবেদনে আরও একটি বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে। জর্ডানে মেয়েদের বিয়ের গড় বয়স ৩০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩২ বছর। সামগ্রিক ভাবে আরব এবং উপসাগরীয় দেশগুলিতে সমাজ চিন্তাভাবনায় যে একটা পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে তা মিথ্যে নয়। নারীরা এখন বিয়ের চেয়েও বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে নিজের কেরিয়ারকে। এছাড়াও নিজের ব্যক্তিজীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত তারা নিজেরাই গ্রহণ করতে শিখেছে। সমাজের এই পরিবর্তন ধীর পদক্ষেপে দৃঢ় হতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.