সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভালবাসার টানে অনায়াসে পার করা যায় সাত সমুদ্র তেরো নদী। কাউকে ভালবাসলে সমস্ত অসাধ্য সাধনই সম্ভব। এসব যে শুধুই কাব্যের লেখনি নয়, সে উদাহরণ তো অনেক আছে। কিন্তু পোষ্যকে ভালবেসে মালকিন যা করলেন, সে ঘটনাকে বিরল বলা যেতেই পারে।
সারমেয়কে খুঁজতে ৩৪৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেন উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। এই দীর্ঘ পথ অতিক্রান্ত করে তিনি পৌঁছে যান রাজধানী দিল্লিতে। পোষ্যর খোঁজে গত এক সপ্তাহ ধরে অন্তত ৪০০টি লিফলেটও বিলি করেছেন। যিনি কুকির (সারমেয়র নাম) খোঁজ দিতে পারবেন, তাঁর জন্য ১০ হাজার পুরস্কার অর্থও ঘোষণা করেন বছর একত্রিশের প্রজ্ঞা। শেষমেশ কি পাওয়া গেল তাকে? না, এখনও পর্যন্ত তার হদিশ মেলেনি।
ঘটনা গত মে মাসের। ব্যক্তিগত কাজে উত্তরাখণ্ড থেকে দিল্লি গিয়েছিলেন প্রজ্ঞা। দক্ষিণ দিল্লির গ্রেটার কৈলাসের এন ব্লকে রাস্তার ধারে একটি দেশি প্রজাতির সারমেয়কে দেখতে পান। প্রজ্ঞা বলেন, “ওকে দেখে মনে হচ্ছিল, ও নিজের প্রভুকে খুঁজছে। পরের দিন গিয়ে আবার দেখি একই জায়গায় বসে কাঁদছে সে। সঙ্গে সঙ্গে ওকে কোলে তুলে দিল্লির বাড়িতে নিয়ে আসি।” পোষ্যর সঙ্গে বেশ ভালই সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তাঁর। কিন্তু উত্তরাখণ্ডে তাকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই প্রজ্ঞা ঠিক করেন সেখানে ফেরার আগে কোনও এক পরিবারের হাতে তাকে তুলে দিয়ে যাবেন। এমন এক ব্যক্তির সন্ধানও পান। মার্কিন ব্যক্তি প্রজ্ঞাকে জানান, দু-এক মাসের মধ্যেই তিনি ভারতে আসবেন। তারপরই আট মাসের মহিলা সারমেয়কে বাড়ি নিয়ে যাবেন। তার জন্য ৫০০ ডলারও দেবেন বলে জানান। ততদিন কুকিকে পশু সুরক্ষা সেন্টারে রাখার পরামর্শও দেন তিনি। কুকির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তেমনটাই করেন প্রজ্ঞা।
গত ৮ জুন তাকে সেন্টারে রেখে উত্তরাখণ্ড চলে যান তিনি। কিন্তু ৬ জুলাই দিল্লিতে ফিরেই দুঃসংবাদ পান। সেন্টার থেকে পালিয়েছে কুকি। তারপর থেকেই নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে কুকির খোঁজ চালাচ্ছেন প্রজ্ঞা। পুলিশের দ্বারস্থও হয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ প্রথমে কোনও অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। পরে অবশ্য, পার্ক থানার পুলিশ জানায়, তারা লিখিত অভিযোগ নিয়েছে। সারমেয়র খোঁজ শুরু হয়েছে। এমন খবর জানার পর থেকে পশুপ্রেমীদের প্রার্থনা, শীঘ্রই যেন পোষ্যের হদিশ পান প্রজ্ঞা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.