Advertisement
Advertisement
কালী

ছদ্মবেশে দেখা দিয়েছিলেন দেবী, নির্দেশ মেনেই আজও চক্রবর্তী পরিবারে পূজিতা দক্ষিণাকালী

৩০০ বছর আগে চন্দ্রনারায়ণ চক্রবর্তীকে দেখা দিয়েছিলেন তিনি।

Know the amazing history of chandrakona's chakraborty familly's puja

ফাইল ছবি

Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:October 22, 2019 8:25 pm
  • Updated:October 22, 2019 8:25 pm

শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: নিষ্ঠায় মুগ্ধ হয়ে প্রায় তিনশো বছর আগে মা দক্ষিণাকালী নিজেই দেখা হাজির হয়েছিলেন চন্দ্রকোনার চক্রবর্তী বাড়িতে। নিজেই নৈবেদ্যর থালা থেকে তুলে নিয়েছিলেন কলা ও রসগোল্লা। তারপর বহুবছর কেটেছে। সময় পালটেছে। বাড়ির কর্তাও বদলেছে, কিন্তু আজও একই আড়ম্বরেই চন্দ্রকোনার চক্রবর্তী পরিবারে পূজিতা হন মা দক্ষিণাকালী।

প্রায় তিনশো বছর আগে মা দক্ষিণাকালী দেখা দিয়েছিলেন চন্দ্রকোনার কদমকুণ্ডুর চন্দ্রনারায়ণ চক্রবর্তীকে। রাত ১২ টায় লালপাড় শাড়ি পরিহিতা এক ৯০ বছরের বৃদ্ধার বেশে এসেছিলেন দেবী। সেই থেকেই দেবীর নির্দেশেই কদমকুণ্ডুর চক্রবর্তী বাড়িতে শুরু হয়েছে পুজো, এমনটাই জানালেন বর্তমান পূজক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী। পরিবারের দাবি, তিনশো বছর আগে কদমকুণ্ডু গ্রামে ছিল শ্মশান। সেই শ্মশানে তারপীঠের এক সাধক কালীর সাধনা করতেন। সেই সাধকের কাছে কালী সাধনার পাঠ নিয়েছিলেন যুবক চন্দ্রনারায়ণ চক্রবর্তী। চন্দ্রনারায়ণের নিষ্টা দেখে সেই সাধক দক্ষিণাকালীর পুজোর ভার দিয়ে তারাপীঠে চলে যান। আর ফেরেননি।

Advertisement

চন্দ্রনারায়ণের পুজোয় সন্তুষ্ট হয়ে মা দক্ষিণাকালী নিজেই পুজোর পথ বাতলে দিয়েছিলেন। প্রতি বছর মূর্তি তৈরি করে দক্ষিণাকালীর পুজো হয় চক্রবর্তী বাড়িতে। রয়েছে পঞ্চমুন্ডির আসনও। সেটিও তিনশো বছরের পুরানো। পুজোয় থাকে মাংস আর নানাবিধ মাছের পদ। বিশেষ করে চিংড়ি ও পোনা মাছ চাই। অন্তত দুটি পাঁঠাও চাই মায়ের। চাই দুই বোতল দেশি মদও। আগে মহিষ বলিও হত। এখন আর তা হয় না। তবে মাকে কাঁচা মাংসও নিবেদন করা হয়। রান্না করা মাংস তাঁর পছন্দ নয়। পছন্দ করেন তেলে ভাজাও। বিশ্বনাথবাবু বলেন, “এই মাংস ও মদ মায়ের উদ্দেশ্যে নিবেদিত হলেও তা কিন্তু দেওয়া হয় মায়ের সঙ্গী ডাকিনি-যোগিনীদের জন্য।” নৈবেদ্যের থালায় দিতে হয় অন্নভোগ সহযোগে পরমান্ন, খিঁচুড়ি, বেগুন ভাজা, পাকা মর্তমান কলা, মায়ের প্রিয় রসগোল্লা, লুচি, হালুয়া, গুড়ের পিঠে, মিষ্টি, মিষ্টান্ন প্রভৃতি।

Advertisement

বর্তমান পূজক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের পুর্বপুরুষ চন্দ্রনারায়ণ চক্রবর্তীর সঙ্গে মায়ের প্রায়ই কথা হত। স্বয়ং মা তাঁকে দর্শন দিতেন। আমরা যেমন কথা বলি মায়ের সঙ্গে তাঁর সেইরকমই কথা হত। এমন বড় সাধক ছিলেন চন্দ্রনারায়ণ। তাঁর নির্দেশিত পুজোর বিধান মেনে আমরা আজও মায়ের পুজো করি।” প্রথা মেনে আজও পুজোয় দুটি ঢাক বাজানো হয়। আজও প্রথা মেনে মায়ের উদ্দেশ্য নিবেদিত পাঁঠা রান্না করে অতিথিদের খাওয়ানো হয়। বিশ্বনাথবাবুর দাবি, মা দক্ষিণাকালী অত্যন্ত জাগ্রত। তাই অনেকে পাঁঠা মানত করে পুজোও দেন।” সেই শ্মশান আর নেই। সেখানে তৈরি হয়েছে মন্দির। রীতি মেনে হয় পুজো ও বিসর্জন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ