শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ফাগুন শেষে আগুনই এখন মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে বন বিভাগের। গত পাঁচ মাস ধরে বৃষ্টি নেই। প্রাকৃতিক নিয়মেই ঝরে পড়ছে পাতা। আর এই শুকনো পাতায় আগুন লাগলে মুহূর্তের মধ্যে তা দাবানলের চেহারা নিতে পারে। অতীতের এমন বহু ঘটনার থেকে শিক্ষা নিয়ে সতর্কতা জারি করল বনদপ্তর। জঙ্গলের চারপাশে নজর রাখতে তৈরি করা হয়েছে ফায়ার ওয়াচার টিম।
সকাল বিকেল জঙ্গলের উপর নজরদারি চালাচ্ছেন তারা। একই সঙ্গে তৈরি করা হয়েছে অ্যান্টি পোচিং স্কোয়াডও। কারণ, দোল উৎসবকে কেন্দ্র করে শিকার উৎসবে মাতেন স্থানীয় আদিবাসী সমাজের একাংশের মানুষ। প্রাচীন এই উৎসবকে ঢাল করে চোরাশিকারীরা যাতে জঙ্গলে ঢুকে বন্যপ্রাণীর ক্ষতি না করতে পারে তার জন্য বন কর্মীদের পাশাপাশি পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এই স্কোয়াড তৈরি করা হয়েছে বলে বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।
বছর কয়েক আগে এই সময় জলদাপাড়া এবং বৈকুন্ঠপুরের জঙ্গলে আগুন লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বন্যপ্রানীদের বাসভূমি। দেখা গিয়েছে, ফাল্গুন, চৈত্র এই সময় গাছ থেকে ঝরে পড়া শুকনো পাতায় ভরে যায় জঙ্গলের চারপাশ। অভিযোগ, জঙ্গল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা গবাদি পশু পালকরা পরিকল্পিত ভাবেই শুকনো পাতায় আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে পুড়ে সাফ হয়ে যায় জমি। সেই জমি বর্ষার প্রথম জল পেয়ে সবুজ হয়ে ওঠে। জঙ্গলের সেই ঘাস গবাদি পশুর খাবার হিসেবে ব্যবহার করেন তারা। পরিবেশ কর্মী সংগঠনের সদস্য বিশ্বজিৎ দও চৌধুরী জানান, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আগুন জলপাইগুড়ি জঙ্গলে বেড়াতে যান তাদেরও এই সাবধানতা অবলম্বন জরুরি। কারণ তাদের অসাবধানতায় ফেলে দেওয়া বিড়ি, সিগারেটের টুকরোও এই সময় জঙ্গলের পক্ষে বিপজ্জনক।
জলপাইগুড়ি বন বিভাগের বনাধিকারিক বিকাশ ভি জানান, এই সব দিক বিবেচনা করেই ফায়ার ওয়াচার টিম তৈরি করা হয়েছে। চব্বিশঘণ্টা জঙ্গলের চারপাশে নজর রাখছেন তাঁরা। পাশাপাশি শিকার উৎসবের কথা মাথায় রেখে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে অ্যান্টি পোচিং স্কোয়াড। শিকার রুখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দোল উৎসবকে কেন্দ্র করে গরুমারা জাতীয় উদ্যান ও চাপরামারির জঙ্গলে পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.