Advertisement
Advertisement
আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ তৈরি

আবর্জনা থেকে তৈরি হবে বিদ্যুৎ-সার-রান্নার গ্যাস, দূষণ রুখতে অভিনব উদ্যোগ মেয়রের

মহারাষ্ট্রের ‘ভাসি’ মডেলের আদলেই গড়ে তোলা হবে 'নয়া ধাপা'। 

Kolkata mayor’s new initiative to make Kolkata pollution free
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:November 26, 2019 11:39 am
  • Updated:November 26, 2019 11:39 am

কৃষ্ণকুমার দাস: বাতাসে দূষণের মাত্রা বিপদসীমার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। তাই এবার ধাপায় জঞ্জাল পোড়ানো বন্ধের জন্য অভিনব উদ্যোগ নিল কলকাতা পুরসভা। শহর থেকে দূরে বিষ্ণুপুরের রসপুঞ্জে নতুন ‘ধাপা’ তৈরি করে জমা জঞ্জাল থেকে বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদন করবে কলকাতা পুরসভা। মহারাষ্ট্রের ভাসিতেও এভাবেই মুম্বই শহরের বিপুল পরিমাণ জঞ্জাল সংগ্রহ করে তা থেকেই বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং সার তৈরি করা হচ্ছে।

বস্তুত ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ থেকে শহরকে বাঁচাতে ‘ভাসি’ মডেলের আদলেই দ্বিতীয় ধাপা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিলেন পুরমন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিম। উৎপাদিত বিদ্যুৎ রাজ্য সরকারকে দেওয়া হবে। বিশেষত, শহরে চালু হওয়া বিদ্যুৎচালিত সরকারি বাস চার্জিং করার সেন্টারগুলিতেও রসপুঞ্জে উৎপাদিত শক্তির যোগান দেওয়া হবে। ধাপার পাশাপাশি তিলজলা, তপসিয়া এবং বানতলার মতো চর্মক্ষেত্রেও গত কয়েক বছর ধরে আগুন দিয়ে চামড়ার বর্জ্য অংশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। মহানগরে বায়ুদূষণ রুখতে এবার তাও নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত পুরসভার।

Advertisement

বাইপাস দিয়ে যাওয়ার সময় মাঝে মাঝেই অনেকের চোখে পড়ে ধাপা থেকে ওঠা ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশ ছুঁয়ে ফেলেছে। কখনও এই ধোঁয়ার দাপট পূর্ব কলকাতাকে গ্র‌াস করে নিচ্ছে। কিন্তু এই আগুন পুরসভার তরফে না জ্বালানো হলেও পরোক্ষে দায় এসে পড়ছে রাজ্য প্রশাসনের ঘাড়ে। পুরসভায় রিপোর্ট এসেছে, কাগজকুড়ানি থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহল নিজেদের স্বার্থে এই আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। বস্তুত ঠিক এই কারণেই সোমবার পুরভবনের এক বৈঠকে ধাপায় আগুন জ্বালানো কার্যত নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে জঞ্জাল সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদারকে এজন্য ধাপায় কড়া নজরদারি চালাতেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, “যে কোনও মূল্যে শহরের বাতাসে দূষণের মাত্রা বিপদসীমার নিচে নামাতেই হবে। বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের জোগান একদিকে বাড়াতে হবে, অন্যদিকে কার্বনের মাত্রা কমাতে হবে।”

[আরও পড়ুন: আবেগ-প্রযুক্তির মিশেলে নয়া যন্ত্র, চালককে সতর্ক করে দুর্ঘটনা রুখবে খুদে বিজ্ঞানীর আবিষ্কার ]

পুরসভার সিদ্ধান্ত, ধীরে ধীরে আগামী কয়েক বছরে ধাপা স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। ধাপায় আপাতত যে কয়েক লক্ষ টন জঞ্জাল জমা আছে তার একটা বড় অংশই তুলে শহরের বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে বলে এদিন বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ধাপায় জঞ্জাল ফেলা বন্ধ করার পর নাগরিক জীবনের নানা পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই ধাপার একাংশে গড়ে উঠেছে পি সি চন্দ্র গার্ডেনের মতো পার্ক। তবে শহরের জঞ্জাল ফেলার ঠিকানা বন্ধ করার পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে রসপুঞ্জে নতুন জঞ্জাল ফেলার জন্য নয়া ধাপা তৈরির কাজও শুরু হচ্ছে। মহারাষ্ট্রের ভাসিতে এমন যে বিকল্প বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সার তৈরির ব্যবস্থা আছে তা আগেই দেখে এসেছেন মেয়র পারিষদ দেবব্রত মঞ্জুমদার। নয়া ধাপার জন্য ভূমি ও ভূমিসংস্কার দপ্তরকে ইতিমধ্যে জমি চেয়ে পাঠিয়েছেন মেয়র। 

এপ্রসঙ্গে দেবব্রত জানান, “আপাতত নয়া ধাপার জন্য ৫০ একর জমি লাগবে। ভূমিসংস্কার দপ্তর ওই জমি দিলেই কাজ শুরু হবে। শহরের যাবতীয় জঞ্জাল দ্রুত সার ও বিদ্যুৎ তৈরির ব্যবস্থা হওয়ায় এখনকার ধাপার মতো উচু ঢিপি তৈরি হবে না রসপুঞ্জে। সার ছাড়াও আরও নানা সামগ্রী তৈরি হবে নয়া জঞ্জালক্ষেত্রে। যা সাধারণ মানুষের কাজে লাগবে।” মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শহরের পরিবেশ দূষণ রুখতে কার্যত জেহাদ ঘোষণা করে নেমে পড়েছেন ফিরহাদ। মাস খানেক আগে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য সেরা সম্মান পেয়েছেন তিনি।

[আরও পড়ুন: বেআইনিভাবে মাটির তলার জল উত্তোলন, নামছে ভূগর্ভস্থ জলস্তর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ