সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘মৎস্য মারিব খাইব সুখে।’ বাঙালির চিরকালীন ও প্রিয় এক প্রবাদ। কিন্তু এই প্রবাদ কি অচিরেই মুছে যাবে বঙ্গজীবনের সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞান থেকে? সাম্প্রতিক এক গবেষণায় তেমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, মৌসুমি বায়ুর খামখেয়ালিপনায় বর্ষার চরিত্রবদলেই রয়েছে অশনি সংকেত। যার প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য পড়ছে সংকটে। এর ফলে প্রশ্ন উঠছে, বাঙালির পাতে মাছ-ভাত কি তাহলে পরিণত হবে মিথে?
‘নেচার জিয়োসায়েন্স’ নামের এক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই নতুন গবেষণার কথা। তাতে বলা হয়েছে, ভারতের গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু বঙ্গোপসাগরের সামুদ্রিক উৎপাদনশীলতাকে স্থায়ীভাবে ব্যাহত করতে পারে। যার জেরে লক্ষ লক্ষ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা বিপন্ন হতে চলেছে। অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়, রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের নেতৃত্বে হওয়া গবেষণায় ২২ হাজার বছরের মৌসুমি বায়ু ও সামুদ্রিক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে সামুদ্রিক খাদ্যের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ হ্রাস পেতে চলেছে। অতিবর্ষণ ও খরার প্রাবল্যেই এই সমস্যা তৈরি হবে। আর তার প্রভাবই পড়বে সামুদ্রিক প্রাণীদের জীবনের ক্ষেত্রেও।
বলে রাখা ভালো, গোটা পৃথিবীর সমুদ্রের মাত্র ১ শতাংশ বঙ্গোপসাগর। অথচ তা বিশ্বের ৮ শতাংশ মৎস্য উৎপাদন করে। যার মধ্যে রয়েছে ‘রুপোলি শস্য’ ইলিশ! আসলে মৌসুমি বায়ুর অনিয়মিত ধাক্কায় পুষ্টিপ্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে সমুদ্রে। ফলে বৈশ্বিক খাদ্য উৎস হিসেবে বঙ্গোপসাগরের ভূমিকা এখন সরু সুতোয় ভারসাম্যহীন অবস্থায় পড়েছে। নিঃসন্দেহে এতে ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছে ওয়াকিবহাল মহল। ১৫ কোটি মানুষ বঙ্গোপসাগরের মাছের উপরে নির্ভরশীল। এর ফলে তাঁরা বড়সড় সমস্যায় পড়তে পারেন। জলবায়ু-সৃষ্ট সংকট এড়াতে অবিলম্বে পদক্ষেপ করার দাবি উঠছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.