Advertisement
Advertisement

Breaking News

নতুন উদ্ভিদ

উষ্ণায়নের আশীর্বাদ! হিমালয় অঞ্চলে নতুন গজানো লতাগুল্ম দেখে তাজ্জব বিজ্ঞানীরা

হিমবাহ গলা জমিতে জন্মেছে ঘাস, গুল্ম, মস জাতীয় উদ্ভিদ।

Plant life is expanding over the Himalayas, new research shows hope
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:January 11, 2020 9:40 pm
  • Updated:January 11, 2020 9:40 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নতুন হিমালয়ের কোলে নতুন করে উদ্ভিদের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি ‘গ্লোবাল চেঞ্জ বায়োলজি’ নামের একটি আন্তর্জাতিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের অনেক উচ্চতায় পুরু বরফের আস্তরণের মাঝে উঁকি দিয়েছে সবুজ গুল্ম, ঘাস। এর আগে যা কখনও ওই উচ্চতায় দেখা যায়নি। স্যাটেলাইটে সেই ছবি দেখেই নিশ্চিত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এতে ওই এলাকার পরিবেশ, আবহাওয়া সম্পর্কেও নতুন ধারণা হচ্ছে বলে মনে করছেন তাঁরা।

himalaya-new-flowers

Advertisement

হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের মোটি তিনটি জায়গায় দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সমীক্ষা চালিয়েছেন বিজ্ঞানীদের একটি দল। তার মধ্যে রয়েছেন পৃথিবীর একাধিক দেশের পরিবেশবিজ্ঞানী, ভূবিজ্ঞানী, উদ্ভিদবিজ্ঞানী। নেতৃত্বে ইংল্যান্ডের এক্সটার বিশ্ববিদ্যালয়। ট্রি লাইন অর্থাৎ যে অঞ্চলে গাছের সারি, স্লো লাইন অর্থাৎ যে অঞ্চলজুড়ে বরফপাত হয় এবং এই দুয়ের মাঝামাঝি অঞ্চলে চলেছে গবেষণা। ৪১৫০ থেকে ৬০০০ মিটার উচ্চতাজুড়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, ৫০০০ থেকে ৫৫০০ মিটার উচ্চতায় গুল্ম ও ঘাসের সারি তৈরি হয়েছে নতুন করে। তার চেয়েও বেশি উচ্চতায় যেখানে কিছুটা সমতল, সেখানেও এসব দেখা গিয়েছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: পৃথিবী হোক সবুজ, অঙ্গীকার রক্ষায় ৩০ হাজার গাছের চারা পুঁতলেন ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত তরুণী]

বিজ্ঞানীরা নাসার স্যাটেলাইট ছবিরও সাহায্য নিয়েছেন এই গবেষণার জন্য। হিন্দুকুশ পর্বতমালার মায়ানমার থেকে আফগানিস্তান পর্যন্ত পার্বত্য অঞ্চলে স্যাটেলাইট ক্যামেরা কড়া নজর রেখে পর্যবেক্ষণ চালিয়েছে। এভারেস্ট অঞ্চলেও একইরকম নজরদারি চলেছে। আর ইতিবাচক সাড়া মিলেছে এখানেই। বিভিন্ন লতাগুল্ম, ঘাস, ফুলের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। নেদারল্যান্ডসের ভূবিজ্ঞানী ওয়াল্টার ইমারজেলের কথায়, ”বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে এই এলাকা তুলনামূলকভাবে উষ্ণ ও সিক্ত হয়ে গিয়েছে। যা উদ্ভিদ জন্মানোর পক্ষে অনুকূল। এখানে যে স্নো লাইন রয়েছে, তা ক্রমশ বিলীন হয়ে গিয়েছে।” নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অচ্যুৎ তিওয়ারি বলছেন, ”নেপাল ও চিনের মধ্যে ট্রি জোন অনেকটা বেড়েছে বলে আমাদের চোখে পড়েছে।” বহু উদ্ভিদবিজ্ঞানী নিয়মিত এই এলাকায় গিয়ে ছবি তুলে, তা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন। তেমনই একজন এলিজাবেথ বায়ার্স। যিনি বলছেন, ”যেসব জায়গায় একসময়ে হিমবাহ ছিল, সেখানে এসব লতাগুল্ম বেশি জন্মেছে। গত ৪০ বছরে যা ভাবা যায়নি। এমনকী বহু বহু বছর আগেকার যেসব হিমবাহ গলে গিয়ে সেখানে বোল্ডার পড়েছে, সেখানেও ফাঁকে ফাঁকে মস দেখা যাচ্ছে।”

[আরও পড়ুন: পোড়া জমিতেই মাথা তুলছে সবুজ ঘাস, নতুন প্রাণের সঞ্চার অস্ট্রেলিয়ার বনভূমিতে]

হিমালয় অঞ্চলের এই পরিবর্তন দেখে বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাটি এবং বরফের সঙ্গে উদ্ভিদের সম্পর্ক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এধরনের জীববৈচিত্র্য, তার রাসায়নিক ও ভৌত বিশ্লেষণ নিয়ে আরও বিশদে জ্ঞান সঞ্চয়ের প্রয়োজন বলে মনে করছেন তাঁরা। এধরনের উদ্ভিদের বেঁচে থাকার জন্য মাটি যে ন্যূনতম সিক্ত থাকা প্রয়োজন, সেটাও কোথা থেকে হচ্ছে, এই প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। ফলে হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে সবুজের বৃদ্ধি ভূবিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞানের নয়া দিগন্ত খুলে দিয়েছে। যার উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে আরও অনেকটা এগিয়ে যাওয়া যাবে বলে আশাবাদী গবেষকরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ