Advertisement
Advertisement
সাপ

অরুণাচলের বাঘের ডেরায় চিনা ‘ওয়াটার স্নেক’, খুঁজে পেলেন বাঙালি গবেষক

জীব বৈচিত্রে এবার চিনা আগ্রাসন!

Researchers found unique snake in Arunachal Pradesh
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:January 16, 2020 2:24 pm
  • Updated:January 16, 2020 2:25 pm

গৌতম ব্রহ্ম: জীব বৈচিত্রে এবার চিনা আগ্রাসন! নেপথ্যে এক চিনা ‘ওয়াটার স্নেক’। দিনের বেলায় চুপচাপ। আর রাত নামলেই জলে। ক্ষিপ্র গতিতে সাঁতার দিয়ে শিকার ধরে। সম্প্রতি অরুণাচলে এই শিকারিদের ঘাঁটি আবিষ্কার করলেন একদল ভারতীয় গবেষক-বৈজ্ঞানিক। যার অন্যতম সদস্য একজন বঙ্গতনয়। একদা অরুণাচলের ডেবান মিউজিয়ামে ছিল এই শিকারি। কিন্তু তখন সে ছিল ‘আন ক্যাটালগড’। কিন্তু ভারতের মাটিতে স্বাধীনভাবে বিচরণ করতে দেখা গেল এই প্রথম।

‘ট্রাইমেরোডাইটস পারকারিনেটাস’ নামেই বৈজ্ঞানিকরা এই শিকারিকে চেনে। চিনা জ্যোতিষবিদ্যায় ‘জোডিয়াক সাইন’ হিসাবেও মান্যতা দেওয়া হয়েছে এই শিকারিকে। এবার ভারতের মাটিতেও দেখা মিলল সেই সাঁতারু শিকারির। ‘অ্যাম্ফিবিয়ান অ্যান্ড রেপটাইল কনজারভেশন’ পত্রিকায় সম্প্রতি প্রকাশিত হয় এই তথ্য। চাইনিজ ওয়াটার স্নেক। ব্যথার ওষুধ থেকে সুস্বাদু নন-ভেজ ডিশ। সবেতেই অপরিহার্য এই চিনা জলঢোড়া সাপ। এবার উত্তর-পূর্ব অরুণাচলে দেখা মিলল এই চিনা প্রজাতির। রেকর্ড করলেন ‘হারপেটালজিস্ট’-দের চার সদস্যের একটি দল। যার অন্যতম সদস্য হাওড়ার শুভদীপ চৌধুরি। শুভদীপ জানালেন, চিন ছাড়াও তাইওয়ান, ভিয়েতনামে দেখা যায় এই জলজ সাপকে। মূলত স্থির জলাশয়ে থাকে। তবে ধানখেতেও দেখা যায়। ৮০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। মূলত মাছ আর ব্যাঙ খায়। জলজ প্রাণীর ভারসাম্য রক্ষায় এই সাপের উপযোগিতা অনেক।

Advertisement

অসমর্থিত সূত্রের খবর, চিনারা এই সাপ চাষ করে খাবারের জন্য। ‘চাইনিজ স্নেক ওয়েল’-এর মতো ‘ফোক মেডিসিন’ তৈরির জন্যও ব্যবহার হয় এই সাপ। জ্বর, অস্থিসন্ধির ব্যথা ও মাথাব্যথায় এই তেল খুব উপযোগী বলে আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের অভিমত। একটাই সুবিধা, এই সাপ নির্বিষ। এর ছোবলে মানুষের মৃত্যু হওয়ার কোনও নজির নেই। কামড়ালে ক্ষতস্থান ফুলে যেতে পারে। কিন্তু চিন্তার কিছু নেই। নির্বিষ বলেই খাবারের প্লেটে এর এত কদর।

Advertisement

[আরও পড়ুন: রেকর্ড ভেঙে চলতি দশকে আরও বাড়বে পৃথিবীর উষ্ণতা, ইঙ্গিত নাসার]

জলপাই রঙের সবুজ থেকে কালচে বাদামি, বেশ কয়েকটি রঙের হয় সরীসৃপ। শুভদীপ জানালেন, মিয়াও সংগ্রহশালার দৌলতে এই প্রজাতি ইতিমধ্যেই রেকর্ডবন্দি হয়েছে। কিন্তু ভারতে আগে কখনও দেখা যায়নি। সেই হিসাবে ‘চাইনিজ ওয়াটার স্নেক’ এই প্রথম ভারতে রেকর্ডবন্দি হল। দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ শেষে এই প্রজাতি নিয়ে পেপার প্রকাশ করেছে গবেষক দলটি। এর ফলে সাপ নিয়ে গবেষণা অনেকটা এগিয়ে গেল। ভবিষ্যতে কেউ এই জলজ সাপ নিয়ে কাজ করলে তাঁর সুবিধা হবে। সর্প বিশেষজ্ঞ শিবাজি মিত্র জানিয়েছেন, অরুণাচলে ‘ফিল্ড ওয়ার্ক’ খুব কম হয়। সেই হিসাবে এই আবিষ্কার প্রশংসাযোগ্য। গবেষকদলের অন্যতম সদস্য শুভদীপ। শুভদীপের সঙ্গী অশোককুমার মল্লিক ওড়িশার ছেলে। তিনিই চাইনিজ সাপটিকে লেন্সবন্দি করেন। এর আগে লাউডগা সাপের নতুন গোত্র আবিষ্কার করে সাড়া জাগিয়েছিলেন অশোক। দলে রয়েছেন ভরতভূষণ ভাট ও ‘স্নেকস অফ ইন্ডিয়া’ বইতে কিংবদন্তী সর্পবিশারদ রমুলাস হুইটেকারের সহলেখক অশোক ক্যাপ্টেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ