সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিশাপের নাম কার্বন নিঃসরণ। এভাবে লাগাতার পৃথিবীর বুকে কার্বন ডাই-অক্সাইড ছাড়তে থাকলে আগামী তিন বছরেই তীব্র গরমে পুড়বে বিশ্ব! এমনই সাবধানবাণী শুনিয়েছেন বিজ্ঞানী মহলের একাংশ। হিসেব কষে তাঁদের পূর্বাভাস, তিন বছরের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বেড়ে যাবে। প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে এই তাপমাত্রা নির্দিষ্ট অঙ্কে বেঁধে রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিল বিশ্বের উন্নত দেশগুলি। কিন্তু কার্বন নিঃসরণে লাগাম টানতে না পারলে সেই সীমা ছাড়িয়ে যাবে অচিরেই। ঘনিয়ে আসবে পৃথিবীর অন্তিম সময়। এমনই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী মহল।
তথ্য-পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যাচ্ছে, গত দশ বছরে অর্থাৎ ২০১৫ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দু’ধাপে বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়েছে। প্রথমবার তা ছিল ১.২২ ডিগ্রি, দ্বিতীয়বার ১.২৪ ডিগ্রি। এর মধ্যে ২০২৪ ছিল উষ্ণতম বর্ষ। সেবার বিশ্বের গড় তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রিরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছিল। বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যায়, মানব সভ্যতা আধুনিক সময়ে উত্তরণের পর থেকে এই পরিসংখ্যান যথেষ্ট উদ্বেগজনক। তার মূল কারণ কারখানা এলাকা থেকে কার্বন ডাই অক্সাইডের নিঃসরণ, জৈব জ্বালানির পরিমাণ বৃদ্ধি এবং অরণ্যছেদ। তথ্য অনুযায়ী, এযাবৎ বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৩০০ কোটি টন।
২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ১৫ থেকে ২০ বছর অর্থাৎ ২০৩০-৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের উষ্ণতা নির্দিষ্ট মাত্রায় বেঁধে রাখতে হবে, এই মর্মে একমত হয়েছিলেন উন্নত দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানরা। এর জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তাঁরা। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে বিশ্ব উষ্ণায়নের দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। আর তাতেই এবার অশনি সংকেত দেখছেন বিজ্ঞানীরা। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার তরফে গত মাসেই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ এতটাই যে ২০৩০ দূর অস্ত, ২০২৮ সালের মধ্যে দেড় ডিগ্রির বেশি ছাড়িয়ে যাবে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা।
এনিয়ে ইন্টারন্যাশনাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ বা IPCC-র চেয়ারম্যান জিম স্কিয়া এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাপমাত্রা নির্দিষ্ট মাত্রায় রাখতে হলে গ্রিন হাউস গ্যাসের নিঃসরণ ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৩ শতাংশ কমাতে হবে। বিশেষত শিল্পাঞ্চলে। কিন্তু এই টার্গেট এখন অতীত। সচেতনতার অভাবে ইতিমধ্যেই অনেক বেশি দূষণ হয়েছে। তা হিসেব করলে ৪৩ শতাংশ নয়, নিয়্ন্ত্রণ করতে হবে আরও বেশি পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ। তা আপাতত অধরা বলেই আশঙ্কা বিজ্ঞানী মহলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.