সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এমনিতে তেমন গুরুত্ব নেই। অ্যাকোরিয়ামে মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয় ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কীট। অথচ সেই কীটকে বড় হতে দিলে ধীরে ধীরে তাই হয়ে উঠবে বিশ্ব উষ্ণায়নের বড় যোদ্ধা! সাম্প্রতিক গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে এ ধরনের নতুন তথ্য দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। বলা হচ্ছে, ৫৫ মিলিয়ন পেট্রল চালিত গাড়ি থেকে যে পরিমাণ কার্বন বাতাসে মেশে, তা রোধ করতে সক্ষম ওই খুদে কীট। এতদিন মাছের খাবার ছাড়া যার কোনও নাম ছিল, উষ্ণায়নের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে এখন তারই গুরুত্ব অসীম হয়ে উঠেছে।
মেরুপ্রদেশ আন্টার্কটিকায় বরফ আবরণের নিচে সুপ্ত সমুদ্রের জন্ম হয় ওই জুপ্ল্যাঙ্কটনের। দৈর্ঘ্য বড়জোর ১০ মিলিমিটার। বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের মধ্যেই চর্বি জমা হয় তাদের। সেই চর্বি যখন শরীর থেকে বের করার প্রয়োজন হয়, সেসময়ই কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে সেই কাজ করে ওই কীট। তাতে পরিবেশের দূষণ খানিকটা হ্রাস পায়। কিন্তু এসবের আগেই ওই জুপ্ল্যাঙ্কটন সংগ্রহ করে মাছের খাবার হিসেবে বাজারে বিক্রি হয়। ফলে যাকে বলে, উষ্ণায়ন রোধের একটি সম্ভাবনা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায়।
বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এই জুপ্ল্যাঙ্কটন নিয়ে গবেষণার পর তার জীবনচক্র সম্পর্কে যা জানতে পেরেছে, তাতেই পরিবেশবান্ধব চরিত্রের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। চাইনিজ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেসের ওই গবেষকদলের নেতৃত্বে থাকা ড. গুয়াং ইয়াং জানাচ্ছেন, মেরুপ্রদেশে বরফের নিচে ঘুমন্ত অবস্থাতেই জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়ে দেয় ওই কীট। আর বাকি সময়টা বরফের স্তরের সঙ্গে ভেসে অন্যত্র চলে যায়, যাকে বলা হয় ‘মাইগ্রেশন’। এমনিতে মেরুপ্রদেশের প্রাণী পেঙ্গুইন বা তিমির চলন যেভাবে নজরে রাখা হয়, খুদে জুপ্ল্যাঙ্কটন স্বাভাবিকভাবেই সেই নজর এড়িয়ে যায়। সম্প্রতি গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলছেন, ওই কীট উষ্ণায়ন রোধে রীতিমতো নেপথ্য নায়কের মতো কাজ করে। তাই তা সংরক্ষণ এবং যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.