Advertisement
Advertisement

Breaking News

গাছ কাটা

রাস্তা চওড়া করতে অবাধে বৃক্ষচ্ছেদন ডুয়ার্সে, সরকারি সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরা

লাটাগুড়ি-ওদলাবাড়ি রোডে কাটা পড়ছে ৫০০টি গাছ।

Tress axed for road expansion in Dooars, locals stage protest
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:November 20, 2019 4:52 pm
  • Updated:November 20, 2019 4:52 pm

অরূপ বসাক, মালবাজার: রাস্তা চওড়া করার নামে ফের বৃক্ষচ্ছেদন। উত্তরবঙ্গের লাটাগুড়ি-ওদলাবাড়ি রোডে পথের দু’ধারে শুরু হল গাছ কাটা। লাটাগুড়ি-ওদলাবাড়ি ভায়া ক্রান্তি এলাকায় দীর্ঘ ৩৫ কিলোমিটার রাস্তা আরও ১০ মিটার প্রশস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের পূর্ত দপ্তর। আর তা করতে গিয়েই এসব গাছের অকালমৃত্যু। বিশাল পুলিশ ও র‍্যাফের পাহারায় সপ্তাহের গোড়াতেই শুরু হয়েছে গাছ কাটার পর্ব।

পূর্ত দপ্তর সূত্রে খবর, ডুয়ার্সে এখন পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। এই পর্যটকদের গন্তব্য, গজলডোবা হয়ে ডুয়ার্সের বিভিন্ন স্থান। এমনিতে রাজ্য সড়কের এই রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। পর্যটকরা সেই রাস্তা দিয়ে যেতে অসুবিধার মুখে পড়েন। তাই রাস্তা চওড়া করার আবেদনের ভিত্তিতে এই গাছ কাটা শুরু হয়েছে। পূর্ত দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, প্রায় ৫০০টি গাছ কাটা পড়বে। ধরলা নদীর উপর তৈরি সেতুটি এই রাস্তাতেই পড়ে। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে তৈরি সেতুর দু’পাশে লাগানো হয়েছিল অসংখ্য গাছ। পরিবেশ দূষণ ও সাইক্লোনের হাত থেকে এলাকা রক্ষা করাই ছিল গাছ লাগানোর মূল উদ্দেশ্য। সে প্রায় ৩০ বছর আগের কথা। এখন রাস্তা চওড়া করার জন্য সেসব গাছই কাটা পড়ছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তে বেজায় অসন্তুষ্ট পরিবেশপ্রেমীরা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: দিল্লির দূষণ নিয়ে উদ্বিগ্ন, প্রতিবাদে সরব পরিবেশপ্রেমী লিওনার্দো]

গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ অনুযায়ী, উন্নয়নের স্বার্থে গাছ কাটার প্রয়োজন হলে তার পাঁচ গুণ গাছ লাগাতে হয়। পরিবেশপ্রেমীদের প্রশ্ন, গাছ কাটার আগে সেই নির্দেশ অনুযায়ী গাছ লাগানো হয়েছে কি? পরিবেশপ্রেমী অনির্বাণ মজুমদার বলেন, ‘এইভাবে নির্বিচারে বৃক্ষচ্ছেদনের ফলে পরিবেশ বেশি করে দূষিত হবে। নষ্ট হবে ভারসাম্য।’ এমনিতে দূষণের মাপকাঠিতে পশ্চিমবঙ্গ উপরের থাকা রাজ্যগুলির মধ্যে একটি। অনির্বাণ আরও বলেন যে দু’বছর আগে বিচাভাঙা রেলগেটের কাছে ফ্লাইওভার তৈরির জন্য গাছ কাটার বিরুদ্ধে লাটাগুড়ির পরিবেশপ্রেমী সংস্থা আন্দোলনে নেমেছিল। সেই আন্দোলনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গাছ কাটা হয়েছিল। কিন্তি পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে গাছ লাগানো হয়েছিল কি? আরেক পরিবেশপ্রেমী অনিমেষ বসুর কথায়, ‘উন্নয়নের জন্য গাছ কাটা এবং ৫ গুণ বেশি গাছ লাগানো হয়েছে কি না, তা মানুষকে জানানো দরকার। এদিকটা কিন্তু অন্ধকারেই থেকে যাচ্ছে। ডুয়ার্সে উন্নয়নের নামে প্রায় আড়াই লক্ষ গাছ কাটা হয়েছে। এইভাবে গাছ কাটার ফলে পরিবেশ ও আবহাওয়ার উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। আজকের পৃথিবী বিশ্ব উষ্ণায়নের বিপদ থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজছে আর এখানে এভাবে গাছ কাটা হচ্ছে!’

Advertisement

[আরও পড়ুন: পুরুলিয়াকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে অঙ্গীকার, সই সংগ্রহে নামল বিজ্ঞান মঞ্চ]

অন্যদিকে, এই রাস্তা চওড়া করার ফলে আশঙ্কায় পড়েছেন রাস্তার দু’পাশে বাড়ির মালিক, দোকানদার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কোথায় যাবেন তাঁরা, কীভাবে চলবে — এসব প্রশ্ন কুরে কুরে খাচ্ছে তাদের। যদিও প্রশাসনের তরফে এঁদের আগাম বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। কোনও পুনর্বাসন তাঁরা পাবেন কি? এ বিষয়ে মাল মহকুমা শাসক জানিয়েছেন, যাঁদের জমির বৈধ কাগজপত্র থাকবে, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করা হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ