ফাইল ছবি
সম্যক খান, মেদিনীপুর: বন্যপ্রাণ রক্ষায় পুরুলিয়ার পর এবার একই পথে হাঁটতে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরও। হাতিদের জন্য যাতায়াতের করিডর উন্মুক্ত রাখতে একাধিক পদক্ষেপের পথে জেলা প্রশাসন। জবরদখল উচ্ছেদ থেকে শুরু করে বেসরকারি হোটেল ও সংস্থার লাগানো পথবাতিগুলিকেও সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে চলেছে। মেদিনীপুরের ডিএফও দীপক এম জানিয়েছেন, সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চালানো হচ্ছে সমীক্ষা। হাতির যাত্রাপথে কী কী বাধা আসছে, তা পর্যবেক্ষণ করে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, হাতিদের করিডর ফ্রি রাখতে ইতিমধ্যে পুরুলিয়ার বনবিভাগ পথবাতির জন্য পোঁতা খুঁটি তুলে দিয়েছে। বেসরকারি ধাবা তথা হোটেল লজ বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অনেকটা দূর এলাকা থেকেই ওইসব খুঁটির মাধ্যমে আলোর ব্যবস্থা করে থাকে। জঙ্গলের মধ্যে গ্রাম বা লোকালয়ের বাইরে আলো ফেলার কারণে হাতির যাত্রাপথে বিঘ্ন ঘটে থাকে। এর জন্য একাধিক দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটেছে। সেসব থেকে রক্ষা পেতেই খুঁটি উপড়ে দিয়েছে পুরুলিয়ার বনদপ্তর।
এবার সেই একই পথে হাঁটতে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরও। তবে এই জেলার ভৌগলিক অবস্থান কিছুটা পৃথক। পুরুলিয়ার মতো পর্যটনকেন্দ্র না হওয়ায় এখানে জঙ্গলের মাঝে হোটেল ও লজের সংখ্যা অনেকটাই কম। তবে এখন জঙ্গলমহল এলাকায় হাতির অবস্থানের আশেপাশেই গড়ে উঠছে একাধিক বিনোদন কেন্দ্র। কোথাও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এলাকায় রেস্তরাঁ তৈরি হয়ে যাচ্ছে, তো কোথাও গড়ে উঠছে পার্ক। বিঘার পর বিঘা জমি কিনে প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দিচ্ছে প্রোমোটাররা। যার ফলে হাতি থেকে শুরু করে জঙ্গলের বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর গতিপথ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। ওই সব এলাকায় বাধা পেয়ে হাতির দল ঢুকে পড়ছে গ্রামের ভিতরে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে বনদপ্তরের তিনটি ডিভিশন – মেদিনীপুর, খড়্গপুর ও রূপনারায়ণ। তিনটি ডিভিশন এলাকাতেই নতুন এই সমস্যা প্রকট হচ্ছে। প্রোমোটারদের থাবা বসছে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায়। বেসরকারিভাবে গড়ে উঠছে রিসর্ট, বিনোদন কেন্দ্র। সেসব জায়গায় সারারাত আলো জ্বলতে থাকে। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বন্যপ্রাণীদের অবাধ বিচরণ। সম্প্রতি মেদিনীপুর সদর ব্লকের নন্দগাড়িতে একটি বেসরকারি পার্ক তথা রিসর্ট কর্তৃপক্ষ সেখানে যাতায়াতের জন্য বনদপ্তরের রাস্তা ব্যবহার করছিল। আইনি নোটিস দিয়ে তা বন্ধ করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.