Advertisement
Advertisement

Breaking News

Champions Trophy 2025

‘পরিস্থিতি কঠিন হলে পালটা দাও’, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে জীবনের মন্ত্র দিলেন হার্দিক

পর পর সাফল্য ভারতীয় দলের, রহস্য কী? জানালেন হার্দিক।

Champions Trophy 2025: Hardik Pandya opens up on his life struggles
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:March 11, 2025 4:55 pm
  • Updated:March 11, 2025 4:55 pm  

আলাপন সাহা, দুবাই: জীবনে প্রচুর কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। কিন্তু তিনি কখনও হার মানেননি। বরং পরিস্থিতি যত কঠিন হয়েছে, ততই শক্তিশালী হয়েছেন তিনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল জেতার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা কী ছিল, সেটি এখন আর কাউকে নতুন করে বলতে হবে না। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জেতার ব্যাপারেও তাঁর ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। হার্দিক পাণ্ডিয়া এখন অনেকটাই বদলে গিয়েছেন। মুখে সবসময় হাসি লেগেই রয়েছে। ফ্যানদের আবদার মেটান। কাউকে অটোগ্রাফ দেন। কারও সঙ্গে ছবিও তোলেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতার পর হার্দিক আরও বেশ খোলামেলা।

প্রশ্ন: কেরিয়ারে এক সময় খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। সেটা কখনও আপনার পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেনি। কী করে ম্যানেজ করেন।
হার্দিক: আমি সবসময় ক্রিকেট খেলেছি জেতার জন্যই। আমার জীবনে একটা নিয়ম রয়েছে। সেটা অনেকের কাছে ডায়লগ মনে হতে পারে। কিন্তু আমার জীবনের মন্ত্রই সেটা। হার্দিক পান্ডিয়ার কিছু না করলেও চলবে। কিন্তু টিমকে ভালো করাতে হবে। সেই মানসিকতাই আমাকে সবসময় কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে লড়তে সাহায্য করেছে। চ্যালেঞ্জ যদি কঠিন হয়, তাহলে পাল্টা দিতে হবে। কোনওভাবেই যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে যাওয়া যাবে না। আপনি যদি যুদ্ধক্ষেত্র না ছাড়েন, তবেই লড়াই করার সুযোগ পাবেন। সব কিছু ছেড়ে দিয়ে যদি শুধুই কান্নাকাটি করেন, তা হলে কোনও কিছুই হবে না।

Advertisement

প্রশ্ন: একটা সময় ছিল যখন আপনি আর ক্রুণাল প্রচুর কষ্ট করেছেন। সেখান থেকে আজ আপনাদের ক্যাবিনেট ভর্তি ট্রফি। এত সাফল্য। জার্নিটাকে কীভাবে ব্যখ্যা করবেন?
হার্দিক: এটা আমাদের কাছে শুধু একটা স্বপ্ন ছিল। তার থেকে বেশি কিছু নয়। কখনও ভাবতে পারিনি যে, এই জায়গায় পৌঁছতে পারব। আমরা দুই ভাই যে জায়গায় আজ পৌঁছেছি, তার জন্য ঈশ্বরকে অনেক ধন্যবাদ। অবশ্যই বাবা-মায়ের অবদানের কথা বলতে হবে। ওদের সাপোর্ট ছাড়া এই জায়গায় পৌঁছতেই পারতাম না। বাবা-মা সবসময় বলতেন, তোমরা নিজেদের স্বপ্নপুরণের চেষ্টা করে যাও, আমরা পাশে রয়েছি। এই বাপরটা ভীষণভাবে মোটিভেট করেছে।

প্রশ্ন: শেষ তিনটে ম্যাচে আপনাকে দ্বিতীয় পেসারের ভূমিকা পালন করতে হয়েছে। টিম চার স্পিনার নিয়ে খেলেছিল। সেটা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল আপনার জন্য। এবং ব্যাটিংয়েও আপনাকে সাত নম্বরে নামতে হয়েছে। পাওয়ার হিটিং করতে হয়েছে সেটা নিয়ে যদি বিস্তারিত বলেন।

হার্দিক: বোলিং আমার হৃদয়ের খুব কাছের। আমি যদি বোলিং করি, তা হলে ব্যাটিং নিয়ে খুব একটা চিন্তার কিছু থাকে না। বাটিং হয়ে যায়। যদি প্রস্তুতির কথা বলেন, তা হলে মাচে কী রকম সিচুয়েশন আসতে পারে, সেট ভেবেই সবসময় নিজেকে প্রস্তুত করেছি। আর যদি ছয় মারার কথা বলেন? আমি তো সেই চোদ্দ বছর বয়স থেকেই ছয় মেরে আসছি। তখন শরীরে জোর ছিল না, তাই বেশি দূর মারতে পারতাম না। এখন শক্তি এসেছে, তাই বেশিদূর মারি। পুরোটাই হল কঠিন পরিশ্রমের ফসল।

প্রশ্ন: ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে উঠেও হারতে হয়েছিল। সেদিন আপনি একাই লড়াই করেছিলেন। এবার ট্রফি এল। আটবছর আগের কথা কোথাও মনে পড়ে যাচ্ছিল?
হার্দিক: এখন জিতে গিয়েছি, তাই বলতেই পারি যে, স্বপ্নটা পূরণ হয়েছে। তবে আটবছর অনেক লম্বা সময়। এই আট বছরে অনেক কিছু ঘটে গিয়েছে। দুটো বিশ্বকাপ জিতেছি। দেশের জন্য জেতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। খুব গর্বের।
প্রশ্ন: এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বেশ কিছু ম্যাচে প্রচণ্ড গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আপনি রান করেছেন। দুবাইয়ের উইকেটে যেখানে বাকি বাটারদের বেশ সমস্যায় পড়তে হয়েছে, সেখানে আপনার ব্যাটিং দেখে কখনও মনে হয়নি যে, কোনও অসুবিধা হচ্ছে। কঠিন পরিস্থিতিতেও অসম্ভব শান্ত রেখেছিলেন নিজেকে। এটা কী করে সম্ভব।
হার্দিক: আমি একটা কথা খুব বিশ্বাস করি। যদি নিজের উপর নিজেই ভরসা রাখতে না পারি, তা হলে বাকিরা কী করে আমার উপর ভরসা রাখবে। তাই সবসময় নিজের উপর ভরসা রেখেছি। নিজেকে বলে গিয়েছি যে, আমি করতে পারি। সমস্ত কিছুর পিছনেই রয়েছে প্রস্তুতি। আপনি নিজেকে যেমনভাবে প্রস্তুত করবেন, পারফরম্যান্সও ঠিক সেভাবেই হবে। নিজেকে সবসময় ঠান্ডা রাখতে হয়।

প্রশ্ন: আট মাসের ব্যবধানে দুটো আইসিসি ট্রফি। প্রথমে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা। তারপর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। দুটো টুর্নামেন্টেই ভারত একটা ম্যাচেও হারেনি।
হার্দিক: টিমে সবাই একে অন্যের পারফরম্যান্স উপভোগ করে। একে অপরের সাফল্য উপভোগ করি। এটা টিম ইন্ডিয়া। এখানে বক্তি বলে কিছু হয় না। টিমের সবার উপর সবার আস্থা রয়েছে। একে অন্যকে প্রচণ্ড ভরসা করি। জানি যে কেউ যে কোনও পরিস্থিতিতে ম্যাচ জেতাতে পারে। আমরা সবাই একটা লক্ষ্যকে সামনে রেখেই পরিশ্রম করি। সেটাই এই টিমের সবচেয়ে বড় ইউএসপি।
প্রশ্ন: সমর্থকদের সঙ্গে অনেক বেশি খোলামেলা আপনি। প্রত্যেকদিন প্র্যাকটিসের সময়ও দেখা গিয়েছে, বাস থেকে নেমে সবার আগে গিয়ে বাচ্চাদের অটোগ্রাফ দিচ্ছেন। ফ্যানদের সঙ্গে ছবি তুলছেন।
হার্দিক: সমর্থকরা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। ওরা সবসময় আমাদের উৎসাহ দেন। ভালো খেলার প্রেরণা জোগান। আমার উপলব্ধি হল- ছোট ছোট মুহূর্তগুলোও অনেক সময়ে সারাজীবন মনে থেকে যায়। সেগুলো খুব স্পেশাল হয়ে যায়। আর আমি অটোগ্রাফ দিলে সে যদি খুশি হয়, তার দিনটা ভালো হয়ে যায়, তা হলে সেটা করতেই হবে। নিজের জীবনের একটা কথা বলি। হয়তো মজার। আমার তখন সাত বছর বয়স। কেনিয়ার টিম খেলতে এসেছিল। আমি ওদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম, তবে গার্ডরা আটকে দিয়েছিল। কেনিয়া টিম অবশ্য ডেকে নিয়েছিল আমাকে। ফলে এই ব্যাপারটা বুঝি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement