সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অর্থাভাবে একটা সময়ে ছেলের ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন শেষ হতে বসেছিল। কিন্তু হাল ছাড়েননি বাবা। নিজের শেষ সম্বল, একফালি জমি বিক্রি করে ছেলের স্বপ্নপূরণের রসদ জুগিয়েছেন। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করা সেই ছেলে মাত্র ১৪ বছর বয়সেই তোলপাড় ফেলে দিয়েছে ক্রিকেটদুনিয়ায়। কনিষ্ঠতম হিসাবে টি-২০ ক্রিকেটে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। নাম তার বৈভব সূর্যবংশী (Vaibhav Suryavanshi)।
গতবছর আইপিএল নিলাম থেকেই বিহারের বৈভবের রেকর্ড গড়ার যাত্রা শুরু। কনিষ্ঠতম ক্রিকেটার হিসাবে আইপিএল নিলামে দল পেয়েছিল সে। আইপিএল মহা নিলামে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকায় বৈভবকে কিনে নিয়েছিল রাজস্থান রয়্যালস। তারপর সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে অভিষেক হয়েছে তার। আইপিএল জীবনের শুরুটাই করেছে ছক্কা হাঁকিয়ে। আইপিএল কেরিয়ারের প্রথম ম্যাচে মারকুটে ব্যাটিং করলেও দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি বৈভব।
সেই আশা পূর্ণ হয়ে গেল সোমবার। আগের দিন হাফ সেঞ্চুরি মাঠে ফেলে এসে কেঁদেছিল ১৪ বছরের কিশোর। কিন্তু সোমবার জয়পুরে নিজের শতরান পূর্ণ করল বৈভব, মাত্র ৩৫ বলে। আইপিএলে দ্রুততম শতরানের রেকর্ড রয়েছে ক্যারিবিয়ান তারকা ক্রিস গেইলের নামের পাশে। ৩০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন। এদিন তাঁর পরেই খোদাই হয়ে গেল বৈভবের নাম। ইশান্ত শর্মা, মহম্মদ সিরাজের মতো অভিজ্ঞ বোলারদের নিয়ে রীতিমতো ছিনিমিনি খেলেছে বৈভব। কিশোর ক্রিকেটারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ শচীন তেণ্ডুলকর থেকে শুরু করে গোটা ক্রিকেটমহল।
কিন্তু আইপিএলে এভাবে নজির গড়ার পথটা মোটেই সহজ ছিল না বৈভবের পক্ষে। বিহারের সমস্তিপুরের বাসিন্দা বৈভব। সেখান থেকে ১০০ কিলোমিটার যাত্রা করে পাটনায় এসে প্রত্যেকদিন ৬০০টি বল খেলত সে। ১৬-১৭ বছর বয়সি নেট বোলারদের সামলে ব্যাটিং প্র্যাকটিস করত। নেট বোলাররা যেন প্র্যাকটিস করে, তাই তাদের জন্য বাড়তি খাবার নিয়ে আসতেন বৈভবের বাবা সঞ্জীব সূর্যবংশী। নিজের জমিটুকু পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়ে ছেলের খেলার খরচ জুগিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, ভোর চারটের সময়ে উঠে বৈভবের জন্য প্রতিদিন খাবার বানিয়ে দিতেন তার মা। পরিবারের সকলের পরিশ্রমের ফল ঝলসে উঠছে বৈভবের পারফরম্যান্সে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.