সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁরা যখন ক্রিকেট খেলতেন, তখন তাঁদের ভূমিকা ছিল ‘বিপদকালে’ দেশকে ভরসা দেওয়ার। একজন হয়ে উঠতেন ‘দ্য ওয়াল’, আরেকজনের ইনিংস হত ‘ভেরি ভেরি স্পেশাল’। আজ বৈভবের ইনিংসের ‘বৈভব’ দেখে অনেকেই চমকে গিয়েছেন। কিন্তু তার উত্থানের পিছনে রয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটের দুই স্তম্ভ- রাহুল দ্রাবিড় ও ভিভিএস লক্ষ্মণ।
আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের জার্সিতে ১৪ বছরের বৈভবকে তৈরি করার পিছনে যে দ্রাবিড়ের কৃতিত্ব রয়েছে, সেটা তো প্রায় দেখাই যাচ্ছে। কিন্তু তাকে ‘খুঁজে’ বের করার পিছনে রয়েছে ভিভিএস লক্ষ্মণ। তার জন্য ফিরে যেতে হবে বিসিসিআইয়ের অনূর্ধ্ব-১৯ একদিনের চ্যালেঞ্জার টুর্নামেন্টে। সেখানে একটি ম্যাচে ৩৬ রানের মাথায় রান আউট হয়েছিল বৈভব। তারপর কান্নায় ভেঙে পড়েছিল। বৈভবের ছোটবেলার কোচ মনোজ ওঝা বলছেন, “বৈভবকে কাঁদতে দেখে লক্ষ্মণ ওর কাছে আসে। বলেন, ‘আমরা শুধু কে কত রান করেছে, সেটা দেখছি না। আমরা দেখি, কাদের মধ্যে দীর্ঘদিন খেলার ক্ষমতা আছে।’ লক্ষ্মণ বুঝে নেন, ওর মধ্যে প্রতিভা আছে। বিসিসিআইও ওকে সাহায্য করেছে।”
কীভাবে? মনোজ বলছেন, “তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য বিহার আদর্শ জায়গা নয়। তাতে কারওর কিছু যায়ে আসে না। কোচ হিসেবে আমি চেয়েছিলাম, বিহারের বদলে অন্য কোনও রাজ্যের হয়ে ও খেলুক। যেখানে ও সুযোগ পাবে, সাহায্য পাবে।” সেখানেই লক্ষ্মণের প্রবেশ। তিনি বৈভবকে সাহস জুগিয়েছিলেন। আর তারপর আইপিএলে রাহুল দ্রাবিড়ের ছত্রছায়ায় আশ্রয়। ১.১ কোটি টাকা দিয়ে তাকে কিনে নেয় রাজস্থান। কিন্তু প্রথম দিকে খেলায়নি। দ্রাবিড় নিজেই বলেছিলেন, মানিয়ে নেওয়ার জন্য বৈভবের আরেকটু সময় দরকার।
বৈভবের বাবা সঞ্জীব ও মা আরতি ধন্যবাদ দিচ্ছেন কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে। সঞ্জীব বলছেন, “আমি রাহুল স্যর ও রাজস্থান ম্যানেজমেন্টকে ধন্যবাদ দিতে চাই। উনি আলাদা করে ওর সঙ্গে খেটেছেন। আজকের সেঞ্চুরি সেটারই ফসল।” ঘটনা হল, পায়ের চোটের জন্য রাহুল দ্রাবিড় আপাতত হুইলচেয়ারে বসেই কোচিংয়ের কাজ সামলাচ্ছেন। কিন্তু বৈভবের সেঞ্চুরি দেখার পর তিনিও আর বসে থাকতে পারেননি। লাফিয়ে উঠে হাততালি দিতে থাকেন। যেন এ তাঁর নিজের ‘সন্তান’-এর সাফল্য। দুই কিংবদন্তির হাতে তৈরি বৈভব। আরও অনেক পথ অপেক্ষা করে আছে তার জন্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.