সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরিবারের সায় ছিল না তাঁর ক্রিকেট খেলায়। তাই ব্যাট ভেঙে খেলা থামাতে চেয়েছিলেন দাদা। আর নতুন ব্যাট কেনার অর্থ জোগাড় করতে রীতিমতো শ্রমিকের কাজ করেছিলেন তিনি, তাও আবার নিজেদেরই নির্মীয়মাণ বাড়িতে! তিনি অর্থাৎ রহমানুল্লাহ গুরবাজ।
কেকেআরে খেলার সুবাদে কলকাতা তথা ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এই আফগান ওপেনারের নামটা একেবারেই অজানা নয়। তবে খোস্ত প্রদেশ থেকে বিশ্বক্রিকেটের চেনা মুখ হওয়ার পিছনের গল্পটা জানেন না খুব বেশি লোক। যে গল্পটা শোনাচ্ছিলেন গুরবাজ নিজেই। “আসলে বাড়ির কেউই আমার ক্রিকেট খেলাটাকে সমর্থন করত না। বাবা সবসময় চাইতেন আমরা পড়াশোনায় জোর দিই। আমি পড়াশোনায় খারাপ ছিলাম না। তবে ষষ্ঠ শ্রেণির পর ক্রিকেটে মন দিতে গিয়ে পড়াশোনায় একটু অবহেলা হয়ে যায়।” আর সেটাই যেন পরিবারের ক্রিকেট বিদ্বেষের আগুনে ঘৃতাহুতির কাজ করে। এমনকি খেলা থামাতে বার দুয়েক তাঁর ব্যাটও ভেঙে দেওয়া হয়। বছর তেইশের এই ব্যাটার শোনাচ্ছিলেন, “বাবা হজ থেকে ফেরায় একদিন বাড়িতে অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। দাদা আমাকে দোকানে পাঠায় চা আনার জন্য। কিন্তু আমি দোকানে না গিয়ে ক্রিকেট খেলতে থাকি। অনেকক্ষণ পর দাদা খুঁজতে এসে বিষয়টি জানাতে পারে। রেগে গিয়ে দাদা আমার ব্যাটটাই ভেঙে দেয়!”
আর সেই ভাঙা ব্যাটের অভাব মেটাতেই শ্রমিকের কাজ করতে হয়েছিল গুরবাজকে। বলছিলেন, “নতুন ব্যাট কেনার টাকা ছিল না আমার কাছে। আর সেসময় আমাদের বাড়ি তৈরির কাজ চলছিল। যে ডেভেলপার দায়িত্বে ছিলেন, আমি গিয়ে তাঁর কাছে কাজ চাই। বলেছিলান, অন্যদের তুলনায় আমাকে অর্ধেক অর্থ দিলেও হবে। শুধু বাড়িতে বিষয়টি জানাবেন না।” শ্রমিক হিসাবে ১৬ দিন কাজ করেছিলেন গুরবাজ, নিজেদেরই নির্মীয়মাণ বাড়িতে। তার বদলে পাওয়া অর্থ খরচ করে নতুন ব্যাট আর গ্লাভস কিনেছিলেন। তবে সেই ব্যাটও রক্ষা পায়নি। শ্রমিকের কাজ করার কথা জানতে পেরে রাগে সেসব নষ্ট করেন তাঁর দাদা। যদিও পরবর্তীতে ভাইয়ের পাশেই দাঁড়িয়েছেন তিনি। গুরবাজের কথায়, “দাদা আমাকে পরে অনেক সাহায্যও করেছে। আসলে ও বুঝতে পেরেছিল আমি ক্রিকেটকে কতটা ভালোবাসি। আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভেবেই ও ব্যাট ভেঙে ফেলেছিল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.