স্টাফ রিপোর্টার: টেবল বলছে ম্যাচটা আই লিগের ছয় ও আট নম্বরে থাকা দুই দলের। কিন্তু ম্যারাথন লিগের টানটান রোমাঞ্চর কথা মাথায় রেখে মোটেই বলা যায় না যে, নিচের দিকে থাকা দুই দলের খেলা হওয়ায় ম্যাচটির গুরুত্ব নেই। কারণ ম্যাচটি জিততে পারলেই ইস্টবেঙ্গল চলে আসবে প্রথম চারে। আর অ্যারোজ জিতলে এগোবে এক ধাপ।
সব দলের কোচই বারবার একটা কথা বলছেন যে, এবারের আই লিগ প্রচন্ড জমাটি হচ্ছে। শীর্ষে থাকা চেন্নাই সিটি এফসি অনেকটা এগিয়ে গেলেও পরের পাঁচটি দলের পয়েন্টের পার্থক্য মাত্র তিন। যার ফলে প্রায় রোজই বদলে যাচ্ছে লিগের ছবি। তার উপর মোহনবাগান ছাড়া লড়াই থাকা দলগুলির থেকে ইস্টবেঙ্গল একটি ম্যাচ কম খেলে আছে। আর চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে কম খেলেছে দুই ম্যাচ। এই পরিস্থিতিতে লাল-হলুদ ফুটবলাররা ভালভাবেই জানেন যে চেন্নাই ম্যাচের হতাশা কাটিয়ে ইন্ডিয়ান অ্যারোজকে হারাতে পারলে, তাঁরা আবার জোরালোভাবে ঢুকে পড়বেন চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে। চেন্নাই ম্যাচের পর মাঝে সময় একদমই পাননি ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেজান্দ্রো। দুই ম্যাচের মাঝে ব্যবধান ছিল মাত্র তিন দিন। যার মধ্যে প্রথমদিন কেটে গিয়েছে যাত্রাপথে। এই অল্প সময়ে যে কাজটি তিনি আপ্রাণভাব করে গিয়েছেন, তা হল হতাশা কাটিয়ে ফুটবলারদের মনোবল বাড়ানো। অভিজ্ঞ কোচ ভালই বুঝতে পারছেন, লিগ এখনই তাঁদের কাছে শেষ হয়ে যায়নি। তাই ছোটখাটো ভুল-ত্রুটির দ্রুত মেরামতি করাকেই পাখির চোখ করেছেন তিনি। বুধবার প্র্যাকটিসে ফুটবলারদের সঙ্গে চেন্নাই ম্যাচের ভুল নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। এদিন ভিডিও ক্লাসে সবাইকে তা দেখিয়ে দিলেন।
শেষ ম্যাচের সঙ্গে এই ম্যাচের দলে হতে চলেছে দু’টি পরিবর্তন। সাসপেন্ড থাকায় সেদিন খেলতে পারেননি চুল্লোভা। অ্যারোজ ম্যাচে দলে ফিরছেন তিনি। আবার চারটে হলুদ কার্ড দেখায় এই ম্যাচে নেই ডিকা। তাঁর বদলে খেলতে পারেন নতুন ফুটবলার সিয়াম হাঙ্গাল। দলের আরেক ফুটবলার জনি অ্যাকোস্টার তিনটি হলুদ কার্ড দেখা রয়েছে। শুক্রবার কার্ড দেখলে তিনি বড় ম্যাচে খেলতে পারবেন না। কিন্তু চাইলেও তাঁকে এই ম্যাচে বসাতে পারছেন না আলেজান্দ্রো। কারণ জনির বিকল্প নেই কোচের কাছে। জাতীয় দল থেকে এখনও যোগ দেননি সালামরঞ্জন সিং। একমাত্র ভরসা কিংশুক দেবনাথ। তবে যেহেতু এখনও তিনি খেলেননি, তাই বাঙালি স্টপারের ভাগ্য শিঁকে ছেড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এই প্রসঙ্গে আলেজান্দ্রো বলছিলেন, “জনিকে বলা আছে কার্ড না দেখতে। একান্ত যদি দেখে ফেলে, তখনেরটা তখন ভাবা যাবে। এখন ওসব নিয়ে ভাবার সময় নয়। আমাদের মাথায় একটাই চিন্তা, তা হল ম্যাচটা জিততে হবে। লিগে এখনও অনেক ম্যাচ বাকি। নিজেদের কাজটা করে যেতে হবে। তাহলেই সুযোগ চলে আসতে পারে।”
অ্যারোজ দলে কোনও বিদেশি নেই। গড় বয়সের মতো অভিজ্ঞতাও কম। তবে তাই বলে কিছুতেই তাদের হালকাভাবে নিচ্ছে না ইস্টবেঙ্গল। আলেজান্দ্রো বললেন, “অভিজ্ঞতা না থাকলেও খেলার প্রতি ওদের মনোভাব বেশ ভাল। তাছাড়া প্রচুর দম থাকায় সারাক্ষণ দৌড়য়। আগের লেগে জিতেছি মানে এই নয় যে, এটাও জিতে গেছি। ওদেরও সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাই আমাদের সেরা একাদশই মাঠে নামবে।”
উলটোদিকে, সেরা দিয়ে ভারতীয় ফুটবলে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চান অ্যারোজ ফুটবলাররা। কোচ ফ্লয়েড পিন্টো বলছিলেন, “গতবার সবার পিছনে শেষ করায় ছেলেরা খুব হতাশ ছিল। এবার আমাদের লক্ষ্য যতটা উপরে শেষ করা। তাই সবাই সেরা দিচ্ছে। ইস্টবেঙ্গলের মতো দলের বিরুদ্ধে তা আরও বাড়ে।” একদিকে লক্ষ্য চ্যাম্পিয়নশিপে টিকে থাকা। অন্যদিকে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করা। দেখার শুধু দিনের শেষে কারা লক্ষ্যে সফল হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.