স্টাফ রিপোর্টার: অদ্ভুত পরিস্থিতি। শিলং লাজং ম্যাচের আগে যতটা প্রতিপক্ষ নিয়ে, ততটাই ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেজান্দ্রো মেনেজেসকে নজর দিতে হচ্ছে ড্রেসিংরুমে আত্মতুষ্টির নো এন্ট্রি বোর্ড ঝোলানোর দিকে। ইস্টবেঙ্গল ১৪ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে যখন দৌড়চ্ছে চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য। তখন এক ম্যাচ বেশি খেলে দশ পয়েন্ট পেয়ে লিগের লাস্ট বয় শিলং লাজং লড়ছে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে। যে লড়াইয়ে মেঘের রাজ্যের ক্লাব শেষ দু’ম্যাচে হারিয়েছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন মিনার্ভা পাঞ্জাব ও দিনদশেক আগেও লিগ দৌড়ে থাকা চার্চিল ব্রাদার্সকে। তাই লাজং নামক পচা শামুকে যাতে পা না কেটে যায়, সেদিকে সতর্ক স্প্যানিশ কোচ।
আপাতত আলেজান্দ্রোর নোট বুকে লাজংয়ের বেশ কয়েকটি ‘গুণ’ উঠে এসেছে। যেখানে রয়েছে তাদের বল পজেশন দখলে রাখার চেষ্টা। মাঝমাঠে লোক বাড়ানো। কম্বিনেশন পাস। কাউন্টার অ্যাটাক। এবং দুই স্ট্রাইকার নাওরেম মহেশ সিং ও স্যামুয়েল লিংডোর নাম। লাজং বধ করতে ইতিমধ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন আলেজান্দ্রো। যার শুরুতে ডিফেন্ডারদের বলে রেখেছেন অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে। দ্বিতীয় ধাপ হিসাবে লাজংয়ের ‘গতি কাঁটা’ তিনি উপড়ে ফেলতে চাইছেন পাল্টা গতি এনে। সবশেষে লাজংয়ের যাবতীয় উদ্যম ব্লটিং পেপারের মতো শুষে নিতে তাঁর বাজি প্রথম মিনিট থেকেই একের পর এক আক্রমণ তুলে আনা। এই কারণে নেরোকা ম্যাচে জোড়া গোল করা এনরিকেকে শুরু থেকে জবির সঙ্গে জুড়ে দিতে চান আলেজান্দ্রো। চোট কাটিয়ে ফেরার পর অল্প অল্প করে খেলিয়ে তাঁকে তৈরি করে নেওয়া হয়েছে। গত ম্যাচে ফর্ম ফিরে পাওয়ায় এনরিকেকে খেলানোর সম্ভাবনা জোরদার হচ্ছে। সঙ্গে হাইমে কোলাডো তো আছেনই।
তবে কোচের নাম যেহেতু আলেজান্দ্রো, তাই যতক্ষণ না ম্যাচ শুরু হচ্ছে, ততক্ষণ দল নিয়ে শেষ কথা বলা যায় না। তাই কোলাডো বা এনরিকের বদলে টনি শুরু করলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আবার প্রতিপক্ষে বিদেশি স্ট্রাইকার না থাকায় তিনটি হলুদ কার্ড দেখা জনি অ্যাকোস্টা বা টানা খেলে যাওয়া বোরহাকে বিশ্রাম দিয়ে হঠাৎ আসতে পারেন সালামও। মনে মনে প্রতিপক্ষকে যতই দুরমুশ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করুন, মুখে প্রতিপক্ষকে যোগ্য সম্মান দিতে চান ইস্টবেঙ্গল কোচ। সরকারি সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন, “লাজংকে সম্মান দিতেই হবে। তরুণ দল। সম্প্রতি ভাল রেজাল্ট করেছে। তাছাড়া প্রতিপক্ষকে সম্মান না দিলে ভুগতে হয়।” একই সুরে কথা বললেন বিদেশি স্টপার বোরহাও। “ওদের বিদেশি নেই বলে এমন নয় ম্যাচটা সহজ হবে। ইন্ডিয়ান অ্যারোজও কিন্তু তাই। তবে এই দু’টি দল নিজেদের অ্যাকাডেমি থেকে অনেক প্রতিভাবান ফুটবলার এনে দুর্দান্ত লড়াই করছে।” উঠে আসে লাজংয়ের চোরাগতির প্রসঙ্গও। আলেজান্দ্রো বললেন, “শুধু ওরা কেন, সব দলই গতিনির্ভর ফুটবল খেলতে চাইছে। এটা এমন কিছু নয়।”
ইস্টবেঙ্গলের শেষ ছ’টি ম্যাচ এখন নক আউট। পরিস্থিতি তাই বলছে। তবে চাপ কাটাতে সেদিক থেকে নজর ঘোরাচ্ছেন আলেজান্দ্রো। বলছেন ফোকাস লাজং ম্যাচ। সঙ্গে জুড়লেন, “এত বছর পর সুযোগ এসেছে। এই পরিস্থিতি সবাই উপভোগ করছে। কিন্তু আমরা হ্যাপি এন্ডিং আনতে চাই। সবথেকে বড় কথা, সবাই ট্রফি জিততে আশাবাদী। মানে আমরা কাজটা ঠিকঠাক করতে পারছি। কিন্তু শেষ ভাল না হলে গুরুত্ব থাকবে না।” আই লিগ শেষ হতে এখনও বাকি পাঁচ ম্যাচ। তবে শেষের শুরু হয়েছে অনেক আগেই। সেই পথে আরও এগিয়ে যেতে লাল-হলুদে এখন একটাই থিম সং। সমূলে উৎখাত করো শেষের কবিতার শহরের ক্লাবকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.