দায়িত্ব নিয়েছেন এক বছরও হয়নি। তার মধ্যে ইস্টবেঙ্গলকে মুড়ে ফেলেছেন পেশাদারীত্বের মোড়কে। তিনি অজিত আইজ্যাক। কোয়েস ইস্টবেঙ্গল এফসির চেয়ারম্যান। এই প্রথম কোনও বাংলা সংবাদপত্রকে সাক্ষাৎকার দিলেন। তাও স্বপ্নপূরণের একধাপ পিছনে দাঁড়িয়ে। শুনলেন দুলাল দে।
প্রশ্ন: তথ্য বলছে, দশ বছরের মধ্যে বাণিজ্য়িক দু়নিয়ায় সুপার পাওয়ার হয়ে গিয়েছেন। সেরকমই দায়িত্ব নিয়ে প্রথম বছরেই আই লিগ জয়ের একধাপ পিছনে।
আইজ্যাক: লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের একধাপ পিছনে কেন? আমরা তো চ্যাম্পিয়ন হয়েই গিয়েছি!
প্রশ্ন: কী বলছেন! চেন্নাই মিনার্ভাকে হারালে আপনার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জায়গায় নেই।
আইজ্যাক: যেদিন ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নিয়েছিলাম, সেদিন দুটো টার্গেট সামনে ছিল। প্রথম বছর দলকে তিনের মধ্যে রাখব। আর সমর্থকদের হৃদয় জিতব। এখন বলুন, দু’টো টার্গেটে আমরা সফল কিনা। লিগে আমরা না হলে দ্বিতীয় হব। দায়িত্ব নিয়ে দারুণ ফল। সমর্থকদের হৃদয়ে জায়গা নেওয়ার কথা যদি বলেন, তাহলে যা ফিডব্যাক পেয়েছি, সমর্থকরা হৃদয়ের আসনে এখনই আমাদের বসিয়েছে।
প্রশ্ন: আপনি কি শুরু থেকেই ইস্টবেঙ্গলের ফ্যান?
আইজ্যাক: ছোট থেকে আমি ফুটবলের ফ্যান। চেন্নাইয়ে যখন স্কুলে পড়ছি, তখন একবার কলকাতায় এসে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের ম্যাচ দেখেছিলাম। সেদিন থেকে কলকাতার দুই ক্লাবের ফুটবলকে ভালবাসি। ইস্টবেঙ্গলে যুক্ত হওয়ার পর আমি শুধু ইস্টবেঙ্গলের। তার আগে ইউরোপিয়ান ফুটবল ফলো করতাম।
প্রশ্ন: ইউরোপিয়ান ফুটবলে কোন ক্লাবের সমর্থক আপনি?
আইজ্যাক: টটেনহ্যাম।
প্রশ্ন: কেন টটেনহ্যাম?
আইজ্যাক: টটেনহ্যামে পড়াশোনার সময় সমর্থক হয়ে গিয়েছিলাম। একবার কোনও ক্লাবের সমর্থক হয়ে গেলে বদলানো যায় না।
প্রশ্ন: ব্যবসার ব্যস্ততার পাশাপাশি, ইস্টবেঙ্গলের খেলা থাকলে প্রেসার ফিল করেন?
আইজ্যাক: সবকটা খেলার খবর রাখি। ডার্বির দিন বুঝেছিলাম, খেলার আগে কেমন প্রেসার তৈরি হয়।
প্রশ্ন: ডার্বির দিন এসেছিলেন?
আইজ্যাক: হুম। প্রথম ডার্বিটা মাঠে বসে দেখেছি। দ্বিতীয়টায় মাঠে আসতে পারিনি।
প্রশ্ন: সফল মানুষদের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় দারুণভাবে কাজ করে। কী মনে হয়, আই লিগের প্রথম ট্রফিটা শনিবার ইস্টবেঙ্গল ঘরে তুলতে পারবে?
আইজ্যাক: আমি ঈশ্বর বিশ্বাসী। শনিবারের ম্যাচটা বলতে পারি, হ্যান্ড অফ গড। মারাদোনার হ্যান্ড অফ গডের মতো নয়। আমরা দারুণভাবে তৈরি। বাকিটা ভগবানের হাতে ছেড়ে দিয়েছি। হয়তো চেন্নাই পয়েন্ট নষ্ট করল। আমরা ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন।
প্রশ্ন: কোঝিকোড়ে আসছেন?
আইজ্যাক: ম্যাচের দিন সকালে স্ত্রীকে নিয়ে আসছি। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ফুটবলারদের পাশে থাকতে চাই।
প্রশ্ন: ম্যাচের আগে ফুটবলারদের ইনসেনটিভ ঘোষণা করবেন?
আইজ্যাক: ম্যাচের আগে ফুটবলারদের কিছু বলার সুযোগ পাব কিনা জানি না। ওদের সঙ্গে কথা বলাটা টেকনিক্যাল ব্যাপার। বড় জোর দেখা হতে পারে।
প্রশ্ন: ট্রফি জিতলে কীভাবে সেলিব্রেট করবেন, সেটা এখন বলে দিন।
আইজ্যাক: কিছু তো হবেই। পরিকল্পনাও আছে। সেটা বলব না। জিতলে সেলিব্রেশন, ইনসেনটিভ সব হবে। সবার আগে চ্যাম্পিয়ন হতে হবে। যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, সেখান থেকে মনে হয় আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে। সমর্থকরাও চান, এতদিনের যন্ত্রণা মিটিয়ে লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফিটা ক্লাব লনে দেখতে। আর একটা ইচ্ছে আছে, ম্যাচের আগে ফুটবলারদের সঙ্গে দেখা করতে না পারলেও কোঝিকোড়ে যে সমর্থকরা আসবেন, তাঁদের সঙ্গে দেখা করব। কথা বলব। ওরাই তো দলের আসল শক্তি। বলব মাঠে এসে এভাবেই সমর্থন করুন দলকে। কিছুদিন আগে আলেজান্দ্রোর সঙ্গে দু’বছরে চুক্তি করেছি। ওঁর হাত ধরে আমাদের ক্লাব অনেক উঁচুতে পৌঁছবে।
প্রশ্ন: আই লিগ শেষ হওয়ার আগেই আলেজান্দ্রোর সঙ্গে আরও দু’মরশুমের চুক্তি করে ফেললেন যে?
আইজ্যাক: কারণ, ওঁর কাজে আমরা, ফুটবলাররা সবাই ভীষণ খুশি। আজকে লিগ টেবিলের মাঝপথ থেকে শেষ মুহূর্তে এক নম্বর দলের থেকে মাত্র এক পয়েন্টে পিছিয়ে। এর থেকে ভাল কাজ আর হয় নাকী। খেলার স্টাইলেও কত পরিবর্তন এনেছেন বলুন তো।
প্রশ্ন: দু’দিন আগে এফএসডিএল চেয়ারম্যান সুন্দর রামন, ফেডারেশন সচিব কুশল দাসের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। কী বলে এলেন, আইএসএল খেলছেন?
আইজ্যাক: (হেসে) এটা থাক। শনিবারটা ভালভাবে কাটুক। তারপর আইএসএল নিয়ে কথা বলব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.