সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইস্টবেঙ্গলের জার্সি গায়ে খেলেছেন মোট ২৪ মাস। তাও সেই তিন দশক আগে। তবু, আজও লাল-হলুদ সমর্থকদের প্রাণভোমরা মজিদ বাসকর। কলকাতা ছাড়ার পর তিন দশক যোগাযোগ ছিল না শহরের সঙ্গে। এতদিন বাদেও যে এ শহর তাঁকে মনে রেখেছে, তা যেন অনুমানই করতে পারেননি আটের দশকের বাদশা। তিনি যখন ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে গেলেন তাঁকে ঘিরে সমর্থকদের মধ্যে যে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস চোখে পড়ল, তা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। সমর্থকদের মধ্যে এই আবেগ যে মজিদকে শুধু আপ্লুত করেছে তাই নয়, একই সঙ্গে অবাকও করেছে।
সোমবার বিকেলে ঘড়ির কাঁটায় তখন সাড়ে চারটে বাজে। ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে পা রাখলেন সেই জুটি, যাঁরা কিনা আটের দশকে এই ময়দানে হাজারে সাফল্যের গাঁথা লিখেছিলেন। লাল-হলুদ জার্সিতে ইস্টবেঙ্গল মাঠে পা রাখলেন মজিদ বাসকর এবং জামশিদ নাসিরি। এক ঝটকায় যেন অনেকটা সময় পিছিয়ে গেল ঘড়ির কাঁটা। সঙ্গে সঙ্গে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে ভেসে গেলেন সমর্থকরা। সেই সমর্থকরা যাদের অধিকাংশই তাদের খেলা দেখেননি। শুধু শুনেছেন লোকমুখে। অথচ, তাদের মধ্যেই কী আবেগ! কেউ তাঁকে জড়িয়ে ধরছেন। কেউ করমর্দন করার জন্য ব্যস্ত, কেউ একটা সেলফির আবদার নিয়ে এলেন, আবার কেউ এলেন শুধু চোখের দেখা দেখতে। আটের দশকের বাদশাকে ঘিরে কলকাতার জেনারেশন ওয়াইয়ের এই আবেগ যেন ময়দানকে পিছিয়ে দিল বেশ কয়েকটা বছর।
স্বাভাবিকভাবেই আপ্লুত কিংবদন্তি ফুটবলাররা। এতদিন বাদেও তাঁদের ঘিরে এত আবেগ! বিশ্বাসই করতে পারছেন না মজিদ। যে শহরের সঙ্গে ৩০ বছর যোগাযোগ ছিল না, সেই শহর এত ভালবাসা দিল! মজিদ বলছেন, “সবই তো বদলে গেছে। গ্যালারিটাও চিনতে পারছি না। থেকে গেছে শুধু লাল-হলুদ। কলকাতায় আসার আগে ভাবছিলাম, আমাদের বিমানবন্দরে কে নিতে আসবে? জনাকয়েক ক্লাব কর্তা বড়জোর। কিন্তু এখানে এসে দেখি শয়ে-শয়ে সমর্থক আমার নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছে। ভাবতেই পারি না, মানুষ এখনও এত ভালবাসে আমাকে।”
মঙ্গলবারই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মজিদকে বরণ করে নেবে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। লাল-হলুদের শতবর্ষ উপলক্ষ্যেই তাঁর কলকাতায় আগমন। শতবর্ষে শহরে এসে স্মৃতি রোমন্থন করতে পেরে আবেগপ্রবণ মজিদ ইস্টবেঙ্গলকে দিয়ে গেলেন সুলুক-সন্ধান। জানিয়ে দিলেন,“আমার হাতে বেশ কিছু ভাল ফুটবলার আছে। ইস্টবেঙ্গল যদি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাহলে আমি সন্ধান দিতে পারি।” কিন্তু, কলকাতা থেকে কোচিংয়ের ডাক পেলে কী আসবেন? উত্তরে মজিদ শুধু হাসলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.