শিলাজিৎ সরকার: জাতীয় জিমন্যাস্টিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে পারফরম্যান্স এতটাই খারাপ হয়েছিল যে, অবসরের সিদ্ধান্ত প্রায় নিয়েই ফেলেছিলেন। তবে কয়েকজনের পরামর্শে ভাবনা সেই বদলান প্রণতি দাস। তাঁদের পরামর্শেই নতুন করে প্রস্তুতি শুরু করেন জাতীয় গেমস মাথায় রেখে। আর সেই পরিশ্রমের ফলও পেলেন এই বঙ্গ জিমন্যাস্ট। যিনি জাতীয় গেমসে ইতিমধ্যে জিতে ফেলেছেন দু’টি সোনা আর একটি রুপো। এর মধ্যে বুধবার একটি সোনা এসেছে তাঁর ঝুলিতে, আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সের আনইভেন বার ইভেন্টে।
অবসরের ভাবনা যাঁদের পরামর্শে ভুলেছিলেন প্রণতি, তাঁদের মধ্যে অন্যতম দীপা কর্মকার। এই কিংবদন্তি জিমন্যাস্টকেই এদিনের সোনা উৎসর্গ করছেন তিনি। প্রণতি বলছিলেন, “জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম দিনই আমার ফল্ট হয়ে গিয়েছিল। খুবই খারাপ পারফর্ম করেছিলাম। আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। ভেবেছিলাম অবসর নেব। তবে সে সময় দু’জন আমাকে সাহস দেয়। একজন আমারা মা রুমা দাস, আরেকজন দীপাদি।”
ঠিক কী পরামর্শ দিয়েছিলেন দীপা? “দিদি আমাকে বুঝিয়েছিল, এভাবে হার মেনে ছেড়ে দিলে হবে না। বরং ফের নিজেকে তৈরি করে পোডিয়ামের শীর্ষে উঠতে হবে,” শোনালেন প্রণতি, “ওই কথাগুলোই আমাকে সাহস দেয়। নতুনভাবে প্রস্তুতি শুরু করি। তাই আজকের পদকটা আমি দীপাদিকেই উৎসর্গ করতে চাই।” সঙ্গে উল্লেখ করছেন খেলা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে স্বামী কৌশিক ঘোষ এবং শ্বশুরবাড়ির অন্যদের অকুণ্ঠ সমর্থনের কথাও। টিম ইভেন্টে সোনা এবং ইন্ডিভিজুয়াল অলরাউন্ডে রুপো উঠেছে প্রণতির গলায়। তবে এদিনের সোনাটাই সবচেয়ে বেশি তৃপ্তি দিচ্ছে তাঁকে। “আমি আনইভেন বার ইভেন্টার দিকেই তাকিয়ে ছিলাম। এই ইভেন্টের জন্য একমাস বিশেষভাবে অনুশীলন করেছি। আজকে তাতে সোনা জিততে পেরে একটু বেশিই ভালো লাগছে।”
আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সের ভল্টে এদিন ব্রোঞ্জ পেলেন বাংলার প্রতিষ্ঠা সামন্তও। এর আগে টিম ইভেন্টে সোনাজয়ী বাংলা দলে ছিলেন প্রতিষ্ঠা। আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সের পাশাপাশি অ্যারোবিক্স জিমন্যাস্টিক্সেও এদিন একটি সোনা জিতেছে বাংলা। মিক্সড পেয়ার ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আবদুল হামিদ চৌধুরি এবং সাহিনা গুপ্তার জুটি। জিমন্যাস্টিক্সে এদিন জোড়া চ্যাম্পিয়নেরর সুবাদে বাংলা এবার মোট ১৩ সোনা জিতে ফেলেছে। তিন বছর আগে গুজরাতেও ১৩ সোনা জিতেছিলেন বঙ্গ ক্রীড়াবিদরা। এবার সেই সাফল্য ছাপিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী বিওএ কর্তারা। অ্যারোবিক্স জিমন্যাস্টিক্সে আরও দু’টি এসেছে। মহিলাদের ব্যক্তিগত ইভেন্টে রুপো পেয়েছেন মাজেদা খাতুন। অনির্বাণ চক্রবর্তী তৃতীয় হয়েছেন পুরুষদের ইভেন্টে। জুডোতে ৭৮ বিভাগে ব্রোঞ্জ পেয়েছেন শানসা সরকার। এদিন চারটি পদক এসেছে টেবল টেনিসেও। এরমধ্যে অনির্বাণ ঘোষ ও ঐহিকা মুখোপাধ্যায় মিক্সড ডবলসের ফাইনালে উঠেছেন। বাকি তিনটিই ব্রোঞ্জ পদক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.