সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পর্বত শিখর জয়ে বাঙালির ইতিহাসে জুড়ল আরেকটি নয়া পালক৷ ইউরোপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এলব্রুসে পা রাখলেন বাঙালি কন্যা৷ বছর বাইশের স্বরূপা মণ্ডলকে নিয়ে উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভাসছেন তাঁর পরিজনেরা৷ সাফল্যে খুশি পর্বতারোহীরা৷
হাওড়ার ডোমজুড়ের বেগড়ির বাসিন্দা স্বরূপা মণ্ডল৷ ছোট থেকে পাহাড়ের প্রতি অগাধ আকর্ষণ তাঁর৷ পাহাড়ে চড়া এক সময়ে নেশা হয়ে ওঠে ছোট্ট মেয়ের৷ তাই ২০১৫ সালে হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং স্কুল ভরতি হন স্বরূপা৷ বেসিক কোর্সের প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করেন তিনি৷ কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরে কাজ শুরু করেন স্বরূপা৷ এরপর ২০১৬ সালে অ্যাডভান্স ট্রেনিং নিয়ে পাশ করেন তিনি৷ মাস্টার্স করা স্বরূপা পেশার টানে চাকরি করতেন ঠিকই, তবে কখনওই নেশা ভোলেননি৷ তাই তো চলতি বছর উত্তর কাশীর নেহরু ইন্সটিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিংয়ে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন।
প্রশিক্ষণ শেষে আর বাড়িতে বসে থাকতে রাজি হননি স্বরূপা৷ ৫,৬৪২ মিটারের উঁচু ‘মাউন্ট এলব্রুস’ শৃঙ্গ জয় করার লক্ষ্য নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি৷ গত মাসেই এভারেস্ট জয়ী দেবব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিযান শুরু করেন স্বরূপা। ১ জুলাই মধ্যরাতে পর্বতে ‘মাউন্ট এলব্রুস’-এ চড়া শুরু করার কথা ছিল তাঁদের৷ কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রতিকূল আবহাওয়া৷ তাই মধ্যরাতের পরিবর্তে পরেরদিন ভোরবেলা শুরু হয় অভিযান৷ এরপর টানা চার দিন পাহাড়ের বুকে দীর্ঘ লড়াই৷ পাহাড় এবং বরফের সঙ্গে যুদ্ধের পর বুধবার ভোরবেলা এলব্রুসের চূড়ায় পৌঁছান স্বরূপা মণ্ডল ও দেবব্রত মুখোপাধ্যায়।
শৃঙ্গে ওঠার সময় বহু পর্বতারোহীই মৃত্যুর মুখোমুখি হন৷ ট্র্যাফিক জ্যামের জেরেও চলতি বছর এভারেস্ট থেকে ফিরে আসতে হয়েছে বহু অভিযাত্রীকে৷ তাই স্বরূপা নিজের লক্ষ্যপূরণ করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল পর্বতারোহীর পরিবার৷ তবে সুখবর শুনে স্বস্তি পেয়েছেন স্বরূপার বাড়ির সদস্যরা৷ মেয়ের সাফল্যে রীতিমতো গর্বিত তাঁরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.