Advertisement
Advertisement

মমতার ধমকেই কাজ, ২ লাখ টাকায় চিতা জ্বলল ১৭০০ বেওয়ারিশ লাশের

১২ বছর ধরে বাঁকুড়া পুলিশমর্গে পচছিল লাশের স্তূপ।

Bankura: Morgue disposes 1700 unclaimed bodies after Mamata Banerjee’s intervention
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:March 28, 2018 1:43 pm
  • Updated:July 17, 2019 2:51 pm

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: চালচুলোহীন বেওয়ারিশ মৃতদেহ। দাহ করতে বরাদ্দ মাথাপিছু মাত্র ৫০ টাকা! কোনওটা বিকৃত। পূতিগন্ধময় কিছু লাশ মানুষের বলেই মনে হয় না। কোনওটার দেহ বলে আর কিছু নেই। চামড়াঘেরা হাড় ক’খানাই সার। কিন্তু যা-ই হোক, ৫০ টাকায় কি শবদাহ হয়?

১২ বছর ধরে বাঁকুড়া পুলিশমর্গে পচতে থাকা এমন ১৭০০ মৃতদেহ নিয়ে তাই আগ্রহই দেখায়নি হিন্দু সৎকার সমিতি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধমক খেতেই শেষে নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। ২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মাত্র দু’দিনে দ্বারকেশ্বর নদীর পাড়ে সেই সমস্ত মৃতদেহ সৎকার করল বাঁকুড়া পুরসভা। খালি হল মৃতদেহে উপচে পড়া পুলিশমর্গ। গত ৭ মার্চ বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়ে এমন বিস্ময়কর অভিযোগ পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে বলতে সুযোগ পেয়েই বাঁকুড়ার বিধায়ক শম্পা দরিপা সটান জানিয়ে দেন, এক যুগ ধরে বাঁকুড়ার পুলিশ মর্গে পচছে ১৭০০ মৃতদেহ। সবই দাবিহীন। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনার জেরে যাঁদের মৃতু্য হয়েছে, অথবা খুন হয়ে গিয়েছেন, তাঁদের শবগুলির কোনও গতি করা যায়নি। সৎকারেরও কোনও বন্দোবস্ত হয়নি।

Advertisement
[ট্রাই সাইকেলে বসেই প্রতিবন্ধীদের জীবনযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করছেন প্রিয় ‘রবীনদা’]

বিধায়কের মুখে এমন খবর পেয়ে যার ফলে অাঁতকে ওঠেন মমতা। জেলা পুলিশমর্গের এমন অস্বাস্থ্যকর অবস্থার কথা শুনে কুড়ি দিন সময় বেঁধে দেন। নির্দেশ দেন, জেলাশাসক ও বাঁকুড়া পুরসভা যেন দ্রুত দেহগুলি সৎকার করে ফেলে। তুরন্ত কাজ হয়েছে। নির্দেশের ১০ দিনের মাথায় সব মৃতদেহ সৎকার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এতদিন এত মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা কেন হয়নি? বিধায়ক শম্পা দরিপার কথায়, “হিন্দু সৎকার সমিতির সঙ্গে কথা বলা হয়। কিন্তু তারা রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত পুরসভাই নিজেদের উদ্যোগে সৎকারের ব্যবস্থা করে।” সূত্রের খবর, হিন্দু সৎকার সমিতি দেহপিছু ২ হাজার টাকা করে চেয়েছিল। সেই হিসাবে একেবারে এত টাকা দেওয়া পুরসভার পক্ষে সম্ভব হয়নি। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সৎকারের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের হাতে দেহগুলি তাই প্যাকেটবন্দি করে সঁপে দেওয়া হয়। বাঁকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত জানাচ্ছেন, “বিষয়টি খরচসাপেক্ষ বলেই এতদিন কোনও ব্যবস্থা করা যায়নি। কিন্তু সব কিছুরই একটা পরিণাম থাকে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই শেষপর্যন্ত সুরাহা হয়েছে। রফা হয় ২ লক্ষ টাকায়।” মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের ১০ দিনের মাথায় গত ১৬ মার্চ দু’রাত জেগে দ্বারকেশ্বর নদীর পাড়ে যমুনার জটে বেওয়ারিশ লাশের স্তূপ চিতায় ওঠানোর ব্যবস্থা করেন পুরকর্তারা।

Advertisement
[রানিগঞ্জের ঘটনায় রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব কেন্দ্রের]

পরবর্তীকালে নতুন করে এমন ধরনের ঘটনা ঘটলে যাতে আর না কোনওভাবে পস্তাতে হয়, সেই ব্যবস্থাও নিতে শুরু করেছে পুরসভা। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানানো হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ