বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, হায়দরাবাদ: প্রথমে যতটা সহজ মনে হয়েছিল লড়াইয়ের ময়দান যে ততটা সহজ নয় হায়দরাবাদে পা রেখেই তা হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছেন বঙ্গ সিপিএমের কমরেডকুল। বাংলা থেকে রওনা হওয়ার সময় মুঠিটা যতটাই শক্ত ছিল পার্টি কংগ্রেসে এসে প্রথম দিনই তা আলগা হতে শুরু করেছে বিমান বসু-সূর্যকান্ত মিশ্রদের। জোট ইস্যুতে কেন্দ্রীয় কমিটিতে পর্যুদস্ত হলেও মনে করা হয়েছিল পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চে জোট বিরোধী প্রকাশ কারাত ও তাঁর সহযোগী কেরল লবিকে কিছুটা হলেও বেগ দেওয়া যাবে। কিন্তু ‘সে গুড়ে যে বালি’ তা সম্মেলনস্থল ‘কল্যাণ মণ্ডপম’-এ ঢুকেই মালুম করতে পারছেন আলিমুদ্দিনের কর্তারা। কেরল লবিও যে যথেষ্ট তৈরি হয়েই এসেছে তা তাঁদের হাবেভাবেই স্পষ্ট। তাই বলাই যায় পার্টি কংগ্রেসের সভাঘরে দু’পক্ষই এখন আস্তিন গুটিয়ে তৈরি একে অপরকে যুক্তির বাণে বিদ্ধ করতে। তার উপর পঞ্চায়েত ভোটের জটিলতা গোদের উপর বিষফোড়ার মতো হাল করে ছেড়েছে বাংলার কমরেডকুলকে।
আজ বুধবার থেকে হায়দরাবাদে শুরু হয়েছে সিপিএমের ২২তম পার্টি কংগ্রেস। পাঁচদিনের এই মহাসম্মেলনে মঞ্চ থেকে আগামিদিনে পার্টি কোন পথে হাঁটবে সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। যদিও প্রথম রাউন্ডেই সীতারাম ইয়েচুরি ও বঙ্গ সিপিএমেকে পাঁচ গোল দিয়ে বসে আছেন প্রকাশ কারাটরা। কেন্দ্রীয় কমিটিতেই সীতারামের জোট তত্ত্ব খারিজ হয়েছ। সেখানে একলা চলার তত্ত্বকেই হেলায় পাস করিয়ে নিয়েছেন প্রকাশ কারাট। এই পরিস্থিতিতে পার্টি কংগ্রেসে নতুন একটি তত্ত্বকে সামনে রাখতে চাইছেন বাংলার সিপিএম নেতৃত্ব। তা হল প্রতিটি রাজ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভিন্ন। পার্টির কোনও একটি অবস্থানে অনড় না থেকে রাজ্যগুলির উপর সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানাবেন রাজ্য সিপিএমের প্রতিনিধিরা, এমনটাই খবর। তাঁদের দাবি থাকবে, রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিচার করে রাজ্য পার্টি জোট বা একলা চলার সিদ্ধান্ত নিক। আর তাতে সিলমোহর দেওয়ার কাজ করুক কেন্দ্রীয় কমিটি। তবে কেরল লবির চাপে বাংলার এই যুক্তি কতখানি মান্যতা পাবে তা নিয়ে সন্দিহান নেতৃত্বই। বাংলার এই যুক্তি মান্যতা পেলে পার্টির শীর্ষ কমিটিতে কারাটদের ক্ষমতা অনেকটাই খর্ব হবে। রাজ্যগুলির উপর ছুরি ঘোরাতে পারবে না কারাট ও কেরল লবি। তাই তাঁরা যে ছেড়ে কথা বলবেন না তা খুব সহজেই বুঝতে পারছেন বিমান বসুরা।
বুধবার সিপিআই (এম)-র ২২তম কংগ্রেসের মঞ্চে সংবর্ধনা জানানো হয় পার্টির প্রবীণ নেতা ভিএস অচ্যুতানন্দন ও এন শঙ্করাইয়াকে। এছাড়াও পার্টির প্রবীণ নেতা গণেশশংকর বিদ্যার্থী, এ নাল্লাশিবম, বনানী বিশ্বাস, কানাই ব্যানার্জি, এমএম লরেন্স, কেএন রবীন্দ্রনাথ ও শিবাজি পট্টনায়েককে পার্টি কংগ্রেসে বিশেষ সম্মানিত অতিথি করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.