Advertisement
Advertisement

Breaking News

বিজেপিকে ঠেকাতে কি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট? সিপিএমের পার্টি কংগ্রেসে মুখোমুখি নেতারা

তেল পুড়লেও রাধা কি আদৌ নাচবে?

CPM to discuss plan to defeat BJP in 2019 in party Congress
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:April 18, 2018 10:12 am
  • Updated:November 19, 2018 2:06 pm

বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: বিস্তর জলঘোলা হওয়ার পর অবশেষে পথ খোঁজা শুরু। আজ থেকে আগামী পাঁচদিন পথের সন্ধানে বসছেন কমরেডকুল। হায়দরাবাদের প্রাণকেন্দ্র আরটিসি ক্রসিংয়ের কল্যাণ মণ্ডপমে। সেখানেই আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক, যুক্তি পাল্টা যুক্তির মধ্য দিয়ে আগামিদিনে কোন পথে হাঁটবে পার্টি সেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। কিন্তু সাত মন তেল পুড়িয়ে শেষ পর্যন্ত কি রাধা নাচবে, সেই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে কমরেডকুলের অন্দরে। কারণ গোটা দেশেই লাল পাটির্র রক্তক্ষরণ আজও অব্যাহত। সম্প্রতি ত্রিপুরা থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শুধুমাত্র কেরলে টিমটিম করে জ্বলছে বামেরা বা বলা যায় সিপিএম। সেখানে অশনি সংকেত দেখতে পাচ্ছেন পাটির্র পাকা চুলের নেতারা। আরব সাগরের এই রাজ্যেও যে গেরুয়া আগ্রাসন কপালে ভাঁজ ফেলেছে সিপিএম নেতৃত্বের কপালে। এই পরিস্থিতে আদৌ কী সঠিক পথের সন্ধান করতে পারবেন কমরেডকুলের অভিবাবকরা, সেই প্রশ্নই ঘুরছে হায়দরাবাদের কল্যাণ মণ্ডপমের চারপাশে। কারণ এখানেই তো আগামী পাঁচদিনের জন্য মাথা গুজেছেন পার্টি কংগ্রেসে যোগ দিতে আসা প্রায় আটশো প্রতিনিধি।

[নির্বাচনী বৈঠক শেষে হামলা, বিজেপির হাতে আক্রান্ত তৃণমূলের যুব নেতা]

Advertisement

আজ পার্টি কংগ্রেসের প্রথমদিনের প্রথমভাগ অবশ্য দেশ-বিদেশের বিভিন্ন কমিউনিস্ট পার্টির মাতব্বররা সিপিএমের কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয় সেই বিষয়ে পরামর্শ দেবেন। যদিও অতীত রেকর্ড বলছে কোনওবারই অন্যদের পরামর্শকে বিশেষ আমল দেওয়ার রাস্তায় হাঁটেননি এ দেশের সিপিএম নেতারা। নিজেরা যা ভাল বুঝেছেন তাই করেছেন। বারবার হোঁচট খেয়েও শিক্ষা নেননি তাঁরা। তাই এবারও পথ খুঁজতে বসে পার্টির মোড়লরা কংগ্রেসের মঞ্চকে মেছো হাটে পরিণত করবেন বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের। কারণ আলোচনা শুরুর আগেই যে একাধিক রাস্তার সন্ধান করতে বসে গিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির জোট তত্ত্বকে উড়িয়ে দিয়ে আপাতত প্রকাশ কারাত ও কেরল লবির একলা চলার তত্ত্ব নিয়েই আলোচনার জন্য খসড়া দলিল পেশ করা হবে।মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক থেকে এমনই ইঙ্গিত মিলেছে। কিন্তু কোমর বেঁধে আসরে অবতীর্ণ হয়েছে পার্টির বঙ্গ লবি। জোটের পক্ষে জোর সওয়ালের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে আলিমুদ্দিন। এর নেতৃত্বে অবশ্যই মেঘনাদের মতো মেঘের আড়ালে থাকা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সীতারামকে সাহস যোগাচ্ছেন তিনিই। এরপর পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার মতো কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশিতিপর ভিএস অচ্যুতানন্দনের নীরব সমর্থন। আপাতত প্রতিনিধিদের মতিগতি যা তাতে তিন ধরনের তত্ত্ব উঠে এসেছে পার্টি কংগ্রেসে যোগ দিতে আসা প্রতিনিধিদের মধ্যে। প্রথমত, কারাতদের একলা চলার পথ। দ্বিতীয়ত, বিজেপিকে ঠেকাতে কংগ্রেসের সঙ্গে সীতারামের জোটের সওয়াল। তৃতীয়ত, একটি রাস্তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। সেই রাস্তার সন্ধান দেবেন বঙ্গ সিপিএমের নবীন কমরেডদের একাংশ। তাঁদের যুক্তি, কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁদের সিদ্ধান্ত রাজ্যগুলির ওপর চাপিয়ে দিলে কী হয় ত্রিপুরা তার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ। তাই জোট বা একলা চলার সিদ্ধান্ত রাজ্য পার্টির ওপরেই ছেড়ে দেওয়া হোক। কেন্দ্রীয় কমিটি শুধুমাত্র একে গোপালন ভবনের ঠান্ডা ঘরে বসে অনুমোদন দেওয়ার কাজটি করুক। তাঁদের যুক্তি, দিল্লিতে বসে রাজ্যের পরিস্থিতি বুঝতে পারেন না শীর্ষনেতারা। তাই সিদ্ধান্তের দায়িত্ব রাজ্য নেতৃত্বের উপরেই ছেড়ে দেওয়ার পক্ষেই সওয়াল করবেন।

তবে পার্টি কংগ্রেস শুরু আগেই যেভাবে একাধিক রাস্তার সন্ধান দিতে শুরু করেছেন প্রতিনিধিরা তাতে করে ভোটাভুটির রাস্তাই খুলে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। আর ভোটাভুটি হলে সীতারামের বিড়ম্বনা যে বাড়বে তা বলাই বাহুল্য। কারণ জোটের তত্ত্ব আউড়ে আগেই কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে পর্যুদস্ত হয়েছিলেন তিনি। এবার ভোটাভুটিতে তাঁর তত্ত্বের পরাজয় হলে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারও ছাড়তে হতে পারে। আর সেই চেয়ারের দখল নেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন প্রকাশ জায়া বৃন্দা কারাত, অন্ধ্রের নেতা রাধুভুলু বা মানিক সরকারের মতো একাধিক পলিটবুরোরর সদস্য। সেক্ষেত্রে বঙ্গলবির নেতারা কতখানি আগ বাড়িয়ে খেলবেন তা নিয়েও প্রশ্নও রয়েছে।

[‘দিলীপ ঘোষ দেড় ফুটের লোক, কথা বলছেন বিশ ফুটের’]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ