সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিন চাকা আগলে মানুষটির জীবন কাটে। প্যাডেলে চাপ দিলে ভুলে যান জীবনের সব দুঃখ, কষ্ট। তাঁর শকটে কোথাও লেখা থাকে না সততাই মূলধন। তবে এই মূল্যবোধ নীরবে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন রিকশচালক সনৎ দে। ফিরিয়ে দিলেন ২ লক্ষ টাকা।
[ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের নাম করে ফোন, প্রতারকদের থেকে সাবধান]
শুক্রবার আর পাঁচটা দিনের মতো ভাড়া খাটছিলেন রিষড়ার বাসিন্দা সনৎবাবু। সেদিন সন্ধ্যার দিকে তিনি রিষড়ার লঞ্চঘাটের কাছে একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন। মালিকের খোঁজ পেতে তিনি ব্যাগটি নিয়ে চলে যান রিষড়া থানায়। পুলিশকে গোটা বিষয়টি জানান। ব্যাগ খুলতে পুলিশকর্মীরাও চমকে যান। দেখা যায় ব্যাগে রয়েছে নগদ ২ লক্ষ টাকা। মেলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজ। সেই কাগজ ঘেঁটে রিষড়া থানার পুলিশ আধিকারিক জানতে পারে ব্যাগটির মালিক তাপস ভট্টাচার্য। তাঁর বাড়ি হুগলির মাহেশে। জানা গিয়েছে শুক্রবার সাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। সাইকেলের পিছনে ক্যারিয়ারে ছিল ওই ব্যাগটি। কোনওভাবে রাস্তায় তা পড়ে যায়। বাড়ির কাছাকাছি এসে তাপসবাবু দেখেন ব্যাগটি নেই। এরপর শ্রীরামপুর থানায় ডায়েরি করতে যান। তখনই রিষড়া থানা থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। রাত সাড়ে দশটা নাগাদ তাপসবাবু রিষড়া থানায় যান। তাঁর হাতে ব্যাগটি তুলে দেন সনৎবাবু। এত গুলো টাকা এবং গুরুত্বপূর্ণ কাগজ এভাবে যে ফিরে পাবেন তা কখনও কল্পনা করতে পারেননি তাপসবাবু। রিকশচালকের মহানুভবতায় তিনি মুগ্ধ। তাপসবাবুর কথায়, এখনও দুনিয়া থেকে সততা হারিয়ে যায়নি। মানুষটি তা দেখিয়ে দিলেন।
[সৈকত শহরের অন্য পরিচয়, দিঘাকে নিয়ে তৈরি হল থিম সং]
যাকে নিয়ে এত কাণ্ড সেই সনৎবাবু একেবারেই নির্লিপ্ত। তাঁকে দেখলে মনে হয় এ আর এমন কী। অনেক চাপাচাপিতে উলটে তাঁর প্রশ্ন, ব্যাগটা যেহেতু আমার নয়, তাই আমি কেন খুলে দেখব? যাদের দায়িত্ব ব্যাগটা খুঁজে দেওয়া তাদের কাছে ব্যাগটি জমা দিই। আমি বাবু রিকশ চালিয়ে খাই। ওই টাকা আমার নয়, অন্যের পরিশ্রমের টাকা। আমি বিশ্বাস করি কেউ যদি কিছু ঠকিয়ে নেয় তাহলে তার ভাল হয় না। যার এই টাকা তিনি ফেরত পাওয়ায় আমি খুশি। এই মূল্যবোধের তাগিদ থেকেই থানায় যান ওই রিকশচালক। রিষড়ার এক সাধারণ মানুষের এমন নজিরে গর্ব অনুভব করছেন রিষড়া থানার পুলিশকর্মীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.