সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাভ জেহাদের অভিযোগকে স্রেফ বুড়ো আঙুল! টিনা ডাবিকে মনে আছে? ২০১৫ সালের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় প্রথম হয়ে সারা দেশে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। সেই প্রথম কোনও দলিত কন্যা ওই পরীক্ষায় প্রথম হন। প্রথম বারের চেষ্টাতেই এই কঠিন পরীক্ষায় সাফল্য পান দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজের ছাত্রী টিনা। তাঁর বয়স তখন ২২। তবে খাতা-কলমের পরীক্ষায় সেদিন যিনি একটুর জন্য টিনাকে টেক্কা দিতে পারেননি‚ তিনি কিন্তু জীবনের পরীক্ষায় জিতে নিয়েছিলেন টিনার মন। পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থানের অধিকারী আতহার আমির-উল-সফি খান। শনিবারে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন টিনা ও আতহার।
সরকারি ঘেরাটোপে ২০১৬ সালের মে মাসে তখন সংবর্ধনা দেওয়া হবে শীর্ষ স্থানাধিকীরদের। সেখানে প্রথম আলাপেই দুজনের মনে পূর্বরাগের ফল্গুধারা। আতহার নাকি সোজা এসে টিনার দিল্লির বাড়িতে বেল বাজিয়েছিলেন। তারপর? মাস চারেকের মধ্যে প্রেম জমে ক্ষীর। বাধা হয়নি ধর্ম। তাঁদের দুজনের পরিবারেই কোনও বাধা আসেনি জানান টিনা। সম্মতি দিয়েছেন অভিভাবকরা। তবে ‘লাভ জিহাদ’-এর তকমা দিয়ে বেশ কিছু হুমকি ও বক্রোক্তি এসেছিল। কিন্তু তা উড়িয়ে দিয়েছেন দুই সরকারি আমলা। আতহারের ব্যক্তিত্বের জাদু আর বুদ্ধির দীপ্তিই তাঁকে মাত করছে, বললেন টিনা। তাঁর কথায়, “আমিরের অধ্যবসায়ের জন্য ওকে আমি ধন্যবাদ জানাই। সত্যিই ও দারুণ ছেলে”। দারুণ না হলে কি আর বছর না ঘুরতেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন টিনা।
বিয়ের আগেও দু’জনে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন নেদারল্যান্ডে। ফেসবুকে সেই সব ছবি পোস্ট করেছিলেন টিনা। খোলামেলা ভাবে বলেছিলেন নিজেদের সম্পর্কের কথা। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টা নিয়ে সমালোচনা করার লোকের অভাব হয়নি। আতহার বলেন, “আমরা এই সম্পর্কে অত্যন্ত খুশি।” টিনা এদিন বলেন, “মুক্তচিন্তার নারী হিসেবে নিজস্ব পছন্দের অধিকার রয়েছে। মাত্র পাঁচ শতাংশ মানুষ রয়েছে, যারা ভিনধর্মের ছেলেকে বিয়ে করার সিদ্ধান্তের জন্য নানা নেতিবাচক মন্তব্য করছে। বেশিরভাগ মানুষই উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্য করছেন।” টিনা এখন রাজস্থানের ক্যাডার অফিসার হিসাবে আজমেরে পোস্টেড। পহলগাঁওয়ের নামী ক্লাবে বিয়ে সারেন টিনা ও আতহার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.