Advertisement
Advertisement

Breaking News

ভাল ক্রিকেট খেলতাম, কিন্তু বাবা একটা সাদা ফুলপ্যান্ট দিলেন না

এ আক্ষেপ গেল না সুমনের।

Kabir Suman unveiled peeks from the memories of a maestro: part-6
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:March 13, 2018 7:38 pm
  • Updated:March 13, 2024 3:12 pm

‘মানবতার দোহাই বন্ধুরা সংগঠিত হন, ভয় পাবেন না।’- নব্বইয়ের কলকাতা আমূল কেঁপে উঠেছিল এ আহ্বানে। বড় ভাঙচুরের সময় ছিল সেটা। বিশ্বায়নের হাওয়ায় ঢুকে পড়ছে অনেক কিছু। ছেড়ে যাচ্ছে আরও অনেক কিছু। গিটার হাতে তবু সেদিন তিনি বলেছিলেন, হাল ছেড়ো না। সেই নাগরিক কবিয়াল পা দিচ্ছেন সত্তরে। জীবনের সাত সমুদ্র পারের কত অভিজ্ঞতা ভিড় করছে। সে সবেরই উদযাপন তাঁর জন্মদিনে, নজরুল মঞ্চে। তার আগে জীবনের সাত দশকের পারে দাঁড়িয়ে নস্ট্যালজিয়ায় ডুব দিলেন কবীর সুমন। সঙ্গী সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল। আসুন পর্বে পর্বে আবিষ্কার করি প্রিয় সুমনকে। আজ ষষ্ঠ পর্ব

প্রথম পর্ব:  রেডিওর সিগনেচার টিউন শুনলে মনে হত একা চিল উড়ে যাচ্ছে 

Advertisement

দ্বিতীয় পর্ব:  কচ্ছপের কাছে বন্ধুতা শিখেছি, সুকুমারের কাছে জ্যান্ত বাংলা ভাষা

Advertisement

তৃতীয় পর্ব:  সে এক অদ্ভুত মুহূর্ত! মাস্টারমশাই কাঁদছেন, আমারও চোখে জল

চতু্র্থ পর্ব: আমির খাঁ সাহেবের অনুষ্ঠান হলে পোষা কুকুরের মতো ছুটতাম

পঞ্চম পর্ব:  গানে যে পাশের বাড়ির মেয়ের কথা বলেছি, তিনি সত্যিই ছিলেন

আমার মা-বাবার জীবনে সংগীতই ছিল প্রধান। আর অন্যান্য মধ্যবিত্তের মতো সন্তানের লেখাপড়া নিয়েও বিশেষ আশা ছিল। সেখানে আমাকে নিয়ে খুব হতাশ হতেন। দাদা আমার তুলনায় লেখাপড়ায় ভাল ছিল, কিন্তু তেমন মারকাটারি ভাল না। এটা ওঁদের একটা দুঃখের জায়গা ছিল। আমার গানের ব্যাপারে অবশ্য ওঁদের গর্ব ছিল।

রেডিওর সিগনেচার টিউন শুনলে মনে হত একা চিল উড়ে যাচ্ছে  ]

আমার বাবা খুব কম কথা বলতেন।ঠিক বন্ধুবৎসল ছিলেন না। আর মা আমার বড় ভাইকে বেশি ভালবাসতেন। তার মানে আমাকে উপেক্ষা করতেন এমনটা নয়। তবে দাদা ছিল মায়ের লোক। আর আমি অনেক পরে আমার বাবার লোক হয়ে উঠি। আমার জগতটা ছিল অনেকটা প্রসারিত। আমি খেলে বেড়াতাম। বস্তির ছেলেদের সঙ্গে মিশতাম। তাঁদের সঙ্গেই আমার বন্ধুত্ব। চ্যালাকাঠ দিয়ে ক্রিকেটের ব্যাট বানাচ্ছি। আমার বড় ভাই এরকমটা ছিলেন না, খুব সন্তর্পণে বড় হয়েছেন। আমি অনেকটাই ফেলে ছড়িয়ে।

কচ্ছপের কাছে বন্ধুতা শিখেছি, সুকুমারের কাছে জ্যান্ত বাংলা ভাষা ]

আমি কিন্তু খুব ভাল ক্রিকেট খেলতাম। ভাড়াও খেলেছি। পয়সা দিয়ে নয়। খেপ খেলা যাকে বলে। ইন্টার স্কুলেও খেলেছি। আমি খুব সাধারণ লোকের সঙ্গে মিশেছি। যেটা আমার মা-বাবার খুব একটা পছন্দ ছিল না। ওঁদের অমতেই মিশেছি। বেশ অদ্ভুত ছিলেন ওঁরা। এই ক্রিকেট খেলা নিয়েই একটা গল্প বলি। এই যে ইন্টার স্কুল ক্রিকেট খেলেছি, তাতে আমি স্কুলের হয়ে ওপেন করতাম। ভাল খেলতাম। কিন্তু খেলতে গেলে একটা সাদা ফুল প্যান্ট পরতে হবে তো! সে কিছুতেই দেবেন না। দেবেন না তো, দেবেনই না। ফুল প্যান্ট পরতে দেবেন না। শেষমেশ আমিই ব্যবস্থা করলাম। নীলাদ্রি নামে আমার এক বন্ধুর থেকে একটা প্যান্ট ধার নিলাম। ওর বাড়িতে গিয়ে ওর প্যান্ট পরে খেলতাম। কোনও মানে হয়! আমি সামার ক্রিকেটেও চান্স পেয়েছিলাম। তখন ক্লাস টেন-ইলেভেনে পড়তাম। মানে গরমের সময় স্কুলে যেতে হত না, ক্রিকেট খেলতাম। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড যে নতুন ক্রিকেটার তৈরি করার কাজ শুরু করেছিল, আমিও তাতে ছিলাম। দেশপ্রিয় পার্কে আমাদের নেট ছিল। মানে ক্রিকেট অনেকটা দূর পর্যন্তই খেলেছি। রাজু মুখোপাধ্যায়ের মতো নয় অবশ্যই। তবে সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে হিসেবে যদি দেখেন তাহলে দেখবেন কিছুদূর গিয়েছিলাম।

আমির খাঁ সাহেবের অনুষ্ঠান হলে পোষা কুকুরের মতো ছুটতাম ]

কিন্তু ওই একটা সাদা ফুল প্যান্ট না পাওয়ার আক্ষেপ থেকেই গেল। মা-বাবা কিছুতেই এসব চাইতেন না। কী যে চাইতেন ওঁরা! গানটাও ওঁদের কাছে প্রধান ছিল। আগে লেখাপড়া, তারপর গান।

(চলবে) 

[ সুমনের জন্মদিনে উদযাপন ‘সত্তরে সুমন’। ১৬ মার্চ, নজরুল মঞ্চে। টিকিটের জন্য যোগাযোগ করুন এখানে– https://goo.gl/vPpqje । ] 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ