সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নয় একর জমিতে তুলা চাষ করেছিলেন। সমবায় থেকে ৯০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। মহাজনদের থেকে নিয়েছিলেন তিন লক্ষ টাকা। ভাগ্য সহায় হল না। পোকায় খেয়ে নষ্ট করে দিল বেশিরভাগ ফসল। এদিকে মাথার উপর ঋণের বোঝা।তারপর সরকারের পক্ষ থেকেও কোনও সাহায্য মেলেনি। এই অবসাদেই বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন মহারাষ্ট্রের কৃষক। আর সুইসাইড নোটে নিজের মৃত্যুর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাজ্য বিজেপি সরকারকে দায়ী করে গেলেন।
মৃত কৃষকের নাম শংকর ভাউরাও ছায়রে। মহারাষ্ট্রের রাজুরওয়াড়ি গ্রামের বাসিন্দা তিনি। জানা গিয়েছে, প্রথমে নিজের ক্ষেতেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন শংকর। কিন্তু দড়ি ছিঁড়ে পড়ে যান তিনি। এরপরই বিষ খান ওই কৃষক। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে গ্রামের হাসপাতালে ভরতি করেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাঁকে শহরে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। শহরের হাসপাতালে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
[কুলগামে সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষ, শহিদ জওয়ান]
ঘটনার তদন্তে নেমে শংকরের বাড়ি থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার করে পুলিশ। যাতে, নিজের মৃত্যুর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাজ্যের বিজেপি সরকারকে দায়ী করে গিয়েছেন শংকর। ঘটনার পরই স্থানীয় কৃষক ও পরিবারের লোকেরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করেন তাঁরা। দাবি, প্রধানমন্ত্রী অথবা সরকার পক্ষের তরফে কেউ এসে এই সমস্যার সমাধান করলে তবেই মৃতদেহ সৎকার করা হবে।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান বসন্তরাও নায়েক শেতি স্ববলম্বন মিশনের সভাপতি কিশোর তিওয়ারি। কৃষকের মৃত্যুর জন্য তিনি রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। মৃত কৃষকের পরিবারকে এক লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন। প্রসঙ্গত, গত বছরের জুন মাসেই ঋণ মকুবের দাবিতে একটানা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের কৃষকরা। ঋণ মকুবের আশ্বাসও সরকারের পক্ষ থেকেও দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই সুবিধা থেকে অনেক কৃষকই বঞ্চিত রয়ে গিয়েছেন, এমনই অভিযোগ উঠছে। ঋণ মকুবের দাবিতে মার্চ মাসেও মহামিছিলে শামিল হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। মুম্বইয়ের কাছে থানে জেলায় যখন মিছিল এসে পৌঁছেছিল, তাতে কৃষকের সংখ্যা ছিল অন্তত ৩৫ হাজার। সারা দেশে এমন ঘটনা নজিরবিহীন। শংকরের মৃত্যুর পর ফের সিঁদুরে মেঘ দেখছে ফড়ণবিস সরকার।
[আঞ্চলিক দলগুলির কাছে এভাবে হারল ‘ধনী’ বিজেপি!]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.