দামাল ছিল ছেলেটা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো স্বভাব। বিপ্লব ছিল মজ্জাগত। স্বাধীনতার স্বপ্ন ছিল চোখে। সেই স্বপ্নের তাগিদেই প্রায় কুড়ি বছর বয়সে আপন করে নিয়েছিল ফাঁসির দড়ি। দীনেশ চন্দ্র গুপ্ত।বাঙালির বিস্মরণের ধুলো সরিয়ে এই বিপ্লবীকেই পর্দায় ফিরিয়ে আনছেন পরিচালক মানস মুকুল পাল। সহজ পাঠের গপ্পোর পর এবার অগ্নিযুগের অধ্যায়ে মন পরিচালকের। আলাপচারিতায় সুপর্ণা মজুমদার।
প্রথম ছবিতেই জাতীয় পুরস্কার। আধার ছিল উপন্যাস। এবার ইতিহাসের কাহিনিকে বেছে নিলেন কেন?
মানস: ছোটবেলা থেকেই এঁদের জীবনকাহিনি পড়ে বড় হয়েছি। একটা ভাল লাগা তখন থেকেই ছিল। আকর্ষণও সেই সময় থেকেই। দীনেশ গুপ্তকে নিয়ে ছবি তৈরি করার অনেক কারণ রয়েছে। তবে অন্যতম কারণ বলতে হলে এটা বলব যে, এই মানুষগুলো আমাদের জন্য এতকিছু করলেন। স্বাধীনতার জন্য অন্যায়ের প্রতিবাদে লড়াই করলেন। আর আমরা এখন এঁদের কথা প্রায় ভুলতে বসেছি। কেউ কেউ হয়তো নাম মনে রেখেছেন। কিন্তু এ দেশের ইতিহাসে তাঁদের অবদান যে কতটা, তা কতজন মনে রেখেছেন? তাই মনে হয়েছিল এমন একটা ছবি করা উচিত। যা এই মানুষগুলোকে ফের প্রাসঙ্গিক করে তুলবে। এছাড়াও স্বাধীনতার আগে যেমন কিছু মানুষ বঞ্চিত ছিলেন, পরবর্তীকালেও তেমনই কিছু মানুষ বঞ্চিত। সেই মানুষগুলোর কথা তুলে ধরাটাও প্রয়োজন।
[‘দৃষ্টিকোণ’-এর ফারাকেই ভালবাসা কিংবা বন্ধুতা, ট্রেলারেই ইঙ্গিত কৌশিকের]
বলিউডের মতো টলিউডেও কি বায়োপিকের ট্রেন্ড শুরু হল? কী মনে হয়?
মানস: ট্রেন্ড মেনে কে কতটা করছে জানি না। ট্রেন্ড মেনে কি কোনও বিষয়ের প্রতি ভালবাসা জন্মায়? আমার তো তা মনে হয় না। কোনও মানুষের অবদানই তাঁকে অসামান্য করে তোলে। সেই বিষয়টিই নতুন একটি ছবি করতে টেনে আনে।
দীনেশ গুপ্তর চরিত্রকেই কেন বাছলে?
মানস: একটা ছেলের যখন ফাঁসি হচ্ছে, তাঁর বয়স প্রায় ২০। আর সে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী। রাখা হয়েছিল জেলের নির্জন কক্ষে। সেখানে থেকেই নিয়মিত মনের কথা লিখে গিয়েছিলেন তিনি। সেই লেখা পড়লে বিশ্বাস করা কঠিন যে এমন জীবন দর্শন এক ২০-২১ বছরের ছেলের হতে পারে। ঠিক এই ব্যাপারটাই আমাকে সবথেকে বেশি আকর্ষণ করেছিল। আমি রক্তমাংসের মানুষটিকেই পর্দায় তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
কাস্ট অ্যান্ড ক্রিউ ফাইনাল হল?
মানস: নাহ, এখনও তেমন কিছু ফাইনাল হয়নি। চিত্রনাট্যের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। তবে একটা কথা বলতে পারি, এবার কিছু পরিচিত মুখ থাকবে। কিন্তু ‘সহজ পাঠের গপ্পো’-র মতোই নতুনরা সুযোগ পাবে আমার এ ছবিতে। মুখ্য চরিত্র অর্থাৎ দীনেশ গুপ্তর চরিত্রেও নতুন কাউকে নেওয়া হবে। অডিশনের মাধ্যমে চরিত্রের জন্য অভিনেতা বাছা হবে।
[উলটো বই পড়ছেন! নেটদুনিয়ায় কটাক্ষের শিকার শুভশ্রী]
এবার তো প্রত্যাশা আরও বেশি। বাজেটও বেশি। ‘সহজ পাঠের গপ্পো’র সময় প্রযোজক পেতে বেশ কষ্ট করতে হয়েছিল। শেষে ছোটবেলার বন্ধু অভিজিৎ সাহা এগিয়ে এসেছিলেন। এবার চ্যালেঞ্জটা কেমন?
মানস: এবারে চ্যালেঞ্জটা আরও বড়। কারণ আমার এ ছবি সম্ভবত বাংলার সবথেকে বেশি বাজেটের ছবি হতে চলেছে। তাই প্রযোজক পাওয়া একটু মুশকিল ছিল। তবে সমস্ত কিছু ঠিক পথেই এগোচ্ছে।
শুটিং কবে থেকে শুরু ? লোকেশন ঠিক হয়ে গিয়েছে?
মানস: সব ঠিকঠাক থাকলে পুজোর পর থেকেই শুরু হয়ে যাবে শুটিং। কলকাতাতে তো অবশ্যই শুট হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ও মেদিনীপুরেও শুটিং হবে।
প্রতাশ্যার এতটা চাপ সামলানো কতটা চ্যালেঞ্জিং?
মানস: এই সব চাপ-টাপ নিয়ে আমি একটুও চিন্তিত নই। আমি আমার ভালবাসার জায়গা থেকে ছবি বানাই। আর আমি জানি সেটা মানুষের ভাল লাগবে এবং মানুষ ভালবাসবে।
[বলিউডের ‘ভাইজান’কে টক্কর দিচ্ছে টলিউডের ‘ভুটু ভাইজান’]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.