Advertisement
Advertisement

চাপে পড়েই মমতার সঙ্গে বৈঠকে বসতে চাইছেন চামলিং

প্রতিবেশীর সঙ্গে সর্বদা সুসম্পর্ক রাখার পক্ষপাতী মুখ্যমন্ত্রী।

Mending ties! Sikkim CM Pawan Chamling seeks audience with Mamata Banerjee
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:March 15, 2018 11:33 am
  • Updated:August 30, 2019 3:39 pm

কিংশুক প্রামাণিক, দার্জিলিং: চাপে পড়েই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসতে চাইলেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবনকুমার চামলিং। প্রতিবেশীর সঙ্গে শত্রুতা নয়, সম্পর্কের উন্নতি চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ফলে শুক্রবার দুপুরে শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় চামলিংয়ের সঙ্গে মুখোমুখি বসছেন মমতা। পড়শি রাজ্যের দুই মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে বসবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এই বৈঠক রাজনৈতিকভাবেও বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে গিয়েছে।

বুধবার ম্যালে শিল্প সম্মেলনের সমাপ্তি অধিবেশনে মমতা নিজেই এ খবর দেন। বস্তুত পাহাড়ে শান্তিরক্ষায় সিকিমের অনেকটাই প্রভাব রয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে চামলিংয়ের এই বন্ধুত্বের হাত খুবই গুরুত্ব পেয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন ফের পাহাড়ে শান্তিরক্ষার ডাক দিয়ে জানান, “এই শিল্পসভার নিট ফল দু’হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব। পাহাড়ের নবযৌবনের ভবিষ্যৎ গড়াই তার লক্ষ্য।” তিনি বলেন, “পাহাড়ে শিল্পায়নের প্রচুর সম্ভাবনা। দরজায় লক্ষ্মী অপেক্ষায়। কিন্তু যখনই উন্নয়ন শুরু হয়, তখনই পাহাড়কে পিছিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত হয়। আর এসব করা যাবে না। নিজেরা ঠিক থাকলে দিল্লির চাপ রোখা যাবে। মনে রাখতে হবে দিল্লি বহুত দূর, বাংলা ঘরের কাছে। সবাইকে বলব, একজোট হয়ে থাকুন। পাহাড়ের উন্নয়ন ঠেকানো যাবে না।” এদিন মুখ্যমন্ত্রীর পাশে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেন, এক ঝাঁক শিল্পপতি ও রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরের সচিবরা।

Advertisement
[মুখ্যমন্ত্রীর আদর্শই পাথেয়, টাকা-গয়না পেয়েও ফেরালেন পঞ্চায়েত কর্মী]

পাহাড়ের এই শান্তি ও উন্নয়নকে মমতা যখন চিরস্থায়ী রূপে দেখতে চাইছেন ঠিক তখনই সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে বসার আহ্বান। এতে খানিকটা অবাক রাজ্যও। ভুলে গেলে চলবে না, পাহাড়ে বিমল গুরুংদের অশান্তিতে পূর্ণ মদত দিয়েছিলেন চামলিং। তিনি বাংলা ভাগকে সমর্থন করে বিবৃতি দেন। এমনকী, বাংলার বিরুদ্ধে চিঠি লেখেন কেন্দ্রকে। পলাতক বিমল গুরুংকে সিকিমে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ ওঠে চামলিংয়ের বিরুদ্ধে। তখন চামলিংয়ের এই আচরণের কড়া জবাব দেন ক্ষুব্ধ মমতা। গত মাসে পাহাড়ে এসে তিনি সাফ বলেন, পাহাড়ে অশান্তির কারণ সিকিম। নিজস্বার্থে সিকিম এটা করে। কারণ, দার্জিলিংয়ের পর্যটন বন্ধ হলে সিকিমের লাভ। সত্যি কথাটা এভাবে মমতা স্পষ্ট বলে দেওয়ায় চামলিং যে চাপে পড়ে গিয়েছেন তা স্পষ্ট। সূত্রের খবর, চামলিং বুঝছেন, দার্জিলিংয়ে নতুন করে কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। বিমলের দিন শেষ। পাহাড়ের বর্তমান নেতৃত্বও মুখ্যমন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ। স্বভাবত নিজস্বার্থেই তিনি বাংলার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে চাইছেন। সেই প্রেক্ষিতেই বৈঠকে বসার আর্জি। তা ছাড়া জাতীয় রাজনীতিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর গুরুত্ব নজরে আছে চামলিংয়ের।

Advertisement
[এতদিন পর আমাকে চিনতে পারছেন না কেন, রত্নাকে পালটা বৈশাখির]

মমতা অবশ্য চামলিংয়ের এই আর্জিতে খুশি। কারণ, তিনি প্রতিবেশীর সঙ্গে সর্বদা সুসম্পর্ক রাখার পক্ষপাতী। তিনিও জানেন, সিকিমের সঙ্গে সুসম্পর্ক হলে দার্জিলিংয়ের শান্তি-উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে। তবে আলোচনার ইস্যু কী তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দেখি ওঁরা কী বলেন।” মমতার সঙ্গে চামলিংয়ের এটাই প্রথম বৈঠক। স্বভাবতই শুক্রবার নজর থাকবে উত্তরকন্যায়। ওই বৈঠক সেরে মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা ফিরবেন। আরও উল্লেখ্য হল, সিকিমে নতুন দল করবেন বলে সম্প্রতি তৃণমূল ত্যাগ করেছেন বাইচুং ভুটিয়া। পবনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক মধুর নয়। ফলে নানা চাপের মুখেই যে চামলিং মমতার সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছেন তা স্পষ্ট।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ