সৌরভ মাজি, বর্ধমান: জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। চিকিৎসক অক্সিজেন দিতে নির্দেশ দেন। অক্সিজেন চালুও করা হয়। কিন্তু মিনিট ১৫-এর মধ্যে তা শেষ হয়ে যায়। কর্তব্যরত নার্সদের নতুন করে অক্সিজেন দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করে রোগীর পরিবার। অক্সিজেন সিলিন্ডার অপারেটরকেও অনেকবার বলা হয়। নার্সরা তাতে কর্ণপাতই করেননি। এমনই অভিযোগ উঠেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। অভিযোগ, অপারেটর দিচ্ছি-দেব করেই সময় পার করে দেন। আর অক্সিজেন না পেয়ে মৃত্যু হয় বছর চল্লিশের কেশব হালদারের। সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এমন ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়। মৃতের পরিবারের লোকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে কালনা থানার পুলিশ।
[ঝাড়খণ্ডে অবস্থান ঘূর্ণাবর্তের, রাজ্যে ফের বৃষ্টির সম্ভাবনা]
কালনার পূর্ব সাতগাছিয়ার বন্দেবাজ মালপাড়ায় বাড়ি কেশববাবুর। পেশায় মাছের আড়তের কর্মী তিনি। ভাগ্নে দেবেন্দ্র হালদার, দেবাশিস হালদাররা জানান, মঙ্গলবার রাতে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয় কেশববাবুর। তাঁকে কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েকমাস আগেই এই হাসপাতালে সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল হয়েছে। সেখানে চিকিৎসক এম এম দাস রোগীকে দেখেন। কেশববাবুকে অক্সিজেন দেওয়ার জন্য নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি। অক্সিজেন চালুও করা হয়। দেবেন্দ্রবাবু বলেন, ‘মিনিট ১৫ অক্সিজেন চলার পর আমরা দেখি আর বুদবুদ হচ্ছে না। বুঝতে পারি অক্সিজেন শেষ হয়ে গিয়েছে। তখন সেখানে থাকা নার্সদের বলি। তাঁরা গুরুত্ব দেননি। অক্সিজেন সিলিন্ডার অপারেট করেন যে কর্মী তাঁকেও কয়েকবার বলি আমরা। তিনিও দিচ্ছি-দেব করে সময় কাটিয়ে দেন।” এর কিছু সময় পরই মৃত্যু হয় কেশববাবুর। দেবেন্দ্রবাবুদের অভিযোগ, স্রেফ অক্সিজেন না পেয়েই মৃত্যু হয়েছে কেশববাবুর। অক্সিজেন চালু রাখলে এইভাবে অকালে প্রাণ হারাতে হত না।
[পরকীয়ার অভিযোগে প্রকাশ্যে অটোচালককে কুপিয়ে খুন]
ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফে সেই সময় কর্তব্যরত দুই নার্স চৈতালি বয়রা ও তন্দ্রা নন্দী এবং অক্সিজেন অপারেটর শিবা নামে এক কর্মীর বিরুদ্ধে বুধবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে যায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অক্সিজেন সিলিন্ডার-সহ কিছু জিনিস বাজেয়াপ্তও করা হয়েছে। তবে এদিন রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই এদিন হাসপাতালে ছিলেন না। তাঁর সঙ্গে মোবাইলে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত নার্স-কর্মীরা কথা বলতে অস্বীকার করেন।
ছবি- মোহন সাহা
[রাজ্যে দুই প্রান্তে পথ দুর্ঘটনায় মৃত এক শিশু-সহ ২]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.