শুভময় মণ্ডল: বিতর্ক পিছুই ছাড়ছে না শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের। মূর্তি ভাঙার রাজনীতির শিকার হয়েছিলেন ভারত কেশরী। সেই বিতর্ককে হটিয়ে আজ, শুক্রবার মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল তাঁর বায়োপিক ‘দাঙ্গা- দ্য রায়ট’ ছবিটির। তবুও পরিচালক মিলন ভৌমিকের অভিযোগ, সেন্সর বোর্ডের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও রাজ্যের সিনেমা হলগুলিতে ছবি প্রদর্শনে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর অভিযোগের তির প্রশাসনের দিকে। পুলিশ নাকি বিভিন্ন হলে গিয়ে ছবি দেখাতে নিষেধ করেছে এবং হলগুলি থেকে ছবির পোস্টারও খুলে ফেলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মিলন ভৌমিক। এরই প্রতিবাদে বিষয়টি অবগত করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। এমন চলতে থাকলে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হওয়ার কথা বলেছেন।
মিলনবাবু জানিয়েছেন, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘দাঙ্গা’ ছবিটি রাজ্যের কোনও হলে চলতে দেওয়া হচ্ছে না। সেন্সর বোর্ড অনুমতি দেওয়া সত্ত্বেও কেন এ রাজ্যেj সিনেমা হলগুলিতে দেখাতে দেওয়া হল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিচালক। মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘রাজ্যের ১০০টি সিনেমা হলে ছবিটি দেখানোর জন্য চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু শেষপর্ষন্ত রাজ্যের ৩৭টি হলে ছবিটি দেখানোর অনুমতি মেলে।’ তাঁর অভিযোগ, বহু জায়গায় পুলিশ ও বিডিও গিয়ে হল মালিকদের নিষেধ করে দিয়েছে। মিলনবাবুর প্রশ্ন, ‘একমাস ধরে শহর জুড়ে পোস্টার। তখন কেউ কিছু বলল না কেন।’ মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি দিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের আরজি মিলন ভৌমিকের। শ্যামাপ্রসাদের চরিত্রে অভিনয় করা গজেন্দ্র চৌহান বিষয়টি নিয়ে সিবিএফসির সঙ্গে কথা বলছেন। পরিচালকের দাবি, ‘এই ছবিতে বিজেপির কোনও লাভ নেই। অনেকে হয়তো এটা ভাবছেন। বিজেপি এই ছবির সঙ্গে যুক্ত নয়। তাই যদি হতো তাহলে ছবিটি দুবছর সেন্সর বোর্ডে আটকে থাকত না। আজ কলকাতার কয়েকটি হলে দাঙ্গা ছবির প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’ এর পিছনে রাজনীতি থাকলেও থাকতে পারে বলে মনে করছেন ছবির পরিচালক।
প্রসঙ্গত, বাংলা-হিন্দি দুই ভাষাতে মুক্তি পেয়েছে এ ছবি। বাংলায় নাম রাখা হয়েছে ‘দাঙ্গা- দ্য রায়ট’। আর হিন্দিতে ‘১৯৪৬- দ্য ক্যালকাটা কিলিং’। দুই ভাষাতেই ভারত কেশরীর চরিত্র পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন গজেন্দ্র চৌহান। ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন চেয়ারম্যান। উল্লেখ্য, বছর দুই আগে ছবির কাজ শুরু করেছিলেন মিলন ভৌমিক। কলকাতাতেই ছবির মুক্তি চেয়েছিলেন তিনি। কারণ, কলকাতার মতো শহরের এমন সিনেমা দেখা প্রয়োজন। শ্যামাপ্রসাদের মতো ব্যক্তিত্বকে চেনা প্রয়োজন। এমনটাই মনে করেন পরিচালক। সে কারণেই সিবিএফসি-র কাছে ইউএ সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। মিলছিল না ছাড়পত্র। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ছয় মাস আগে মিলেছে। এবার মুক্তি পেয়েও ছবির প্রদর্শন ঘিরে নয়া বিতর্ক। মিলনবাবু জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী কী পদক্ষেপ করেন তা দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। পরিস্থিতি না বদলালে দু-তিনদিন পর সুপ্রিম কোর্টে মামলা করবেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.