Advertisement
Advertisement

ট্যারান্টুলা আতঙ্কে বিষ সংগ্রহ শুরু অযোধ্যা, গড়পঞ্চকোটে

মাকড়সায় লুকিয়ে মৃত্যু ফাঁদ!

Purulia: Starting take poison from Tarantula in Ayodhya
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:March 25, 2018 3:09 pm
  • Updated:July 26, 2019 2:59 pm

গৌতম ব্রহ্ম: ২০১৭ সালের জুন। আউশগ্রামের জ্বালিকাঁদর গ্রামের দুলাল হাঁসদার শিশুকন্যার ডানহাতে মাকড়সা কামড় দেয়। তারপর থেকেই পচন শুরু হয় হাত-পায়ে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা, পিংলার মতো এলাকায় ট্যারান্টুলার দংশনে বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। কয়েকজনকে আইসিইউ-তে পর্যন্ত রাখতে হয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার হুগলির চণ্ডীতলার লক্ষ্মণপুর গ্রামে কেনারাম বাগের মৃত্যু। ৩৬ বছরের তরতাজা যুবক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরিবারের দাবি, কেনারামবাবুকে মাকড়সা কামড়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে আসার পরই হয় হার্ট অ্যাটাক।

ট্যারান্টুলা গোত্রের মাকড়সা নিয়ে আতঙ্ক গত বছরও ছড়িয়েছে। কিন্তু মৃত্যুর আতঙ্ক ঘাড়ে চাপেনি। এহেন পরিস্থিতির মধ্যেই মাকড়সার বিষ সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া শুরু হল রাজ্যে। রাজ্যে বিজ্ঞান ও কারিগরি দপ্তরের পৃষ্ঠপোষকতায় এই প্রকল্পটি শুরু করেছেন অধ্যাপক অ্যান্টনি গোমস। সহযোগী হিসাবে রয়েছেন তাঁরই ছাত্র। পুরুলিয়ার জগন্নাথ কিশোর কলেজের প্রাণীবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক পার্থপ্রতিম সাহা। তিন বছর ধরে চলবে মাকড়সার বিষ সংগ্রহের কাজ। সেই সঙ্গে বিষের প্রকৃতি নির্ণয়।

Advertisement

[পুলিশ মিছিল আটকালে লঙ্কাকাণ্ড হবে, রাম নবমীতে হুঙ্কার দিলীপ ঘোষের]

ইতিমধ্যেই অযোধ্যা পাহাড়, গড়পঞ্চকোট-সহ বিভিন্ন জঙ্গল এলাকা থেকে মাকড়সা সংগ্রহ চলছে। এখনও পর্যন্ত পঞ্চাশটিরও বেশি মাকড়সা ধরেছেন পার্থবাবুরা। জানিয়েছেন, গত দু’বছরে এ রাজ্যে প্রচুর মাকড়সার দংশনের ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে রোগীর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হয়েছে। বিষের প্রকৃতি জানা নেই বলে মাকড়সার চিকিৎসা প্রোটোকল নিয়েও অন্ধকার রয়েছে চিকিৎসকদের মনে। কারণ, বাংলা তথা ভারতে কখনও মাকড়সার বিষ নিয়ে কোনও গবেষণা করার কথা কেউ ভাবেনি। হয়ওনি। তাই এই প্রকল্প শুরু করার কথা ভাবা হয়। এমনটাই জানালেন পার্থপ্রতিমবাবু। তারপরই অধ্যাপক গোমসের নেতৃত্বে মাকড়সা ধরার কাজ শুরু হয়ে যায়। অযোধ্যা পাহাড়,  গড়পঞ্চকোট-সহ বিভিন্ন জায়গায় মাকড়সা ধরার জাল ও কন্টেনার নিয়ে ঘুরতে শুরু করেন পার্থবাবুরা। সংগৃহীত মাকড়সার মধ্যে সিংহভাগই ‘নেফিলা’ প্রজাতির। লম্বায় দুই ইঞ্চি বা তার বেশি দৈর্ঘ্যের আটপেয়েকেই কন্টেনারবন্দি করেছেন পার্থপ্রতিমবাবুরা।

Advertisement

অবশেষে পার্থবাবুদের পাশে দাঁড়ায় রাজ্যের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তর। মঙ্গলবার মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দপ্তর অধ্যাপক গোমসদের প্রকল্পে সায় দেয়। অধ্যাপক গোমস জানিয়েছেন, ‘ট্রায়াল’ আগেই শুরু হয়েছে। বর্ষার সময় ফের মাকড়সা ধরার কাজ শুরু হবে। আপাতত পুরুলিয়া জেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে এই প্রকল্প। জানা গিয়েছে, প্রকল্প পরিচালনায় ১৯ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছে রাজ্য। পার্থপ্রতিমবাবু জানিয়েছেন, একবার যদি রাজ্যে থাকা মাকসড়ার বিষের চরিত্র জানা যায়, তবে অ্যান্টিভেনম তৈরিতে অনেক সুবিধা হবে। তাছাড়া মাকড়সার বিষ থেকে স্নায়ুরোগের অনেক ওষুধ তৈরির চেষ্টা করছে বিভিন্ন দেশ। সেই পর্যায়ের গবেষণাও করার ইচ্ছে রয়েছে তাঁদের।

উল্লেখ্য, মাকড়সা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ গবেষণা চালাচ্ছে। সিডনি ফানেল ওয়েব, ব্রাজিলিয়ান ওয়ানডার স্পাইডার, ফ্রিঞ্জড অর্নামেন্টাল ট্যারান্টুলা-সহ বেশ কয়েকটি প্রাণঘাতী মাকড়সার সন্ধান মিলেছে। এ রাজ্যেও কয়েকশো প্রজাতির মাকড়সা রয়েছে। এবার তাদের বিষের পরীক্ষা হবে।

[ছবি তুলতে গিয়ে পর্যটক-সুরক্ষাকর্মীদের হাতাহাতি, বিশ্বভারতীতে ধুন্ধুমার কাণ্ড]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ