সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁর মাথার দাম ধার্য করেছে বিজেপির যুবনেতা। তা নিয়ে ঝড় বয়ে গিয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে। দলমত নির্বিশেষে প্রতিটি রাজনৈতিক মহলই এ ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। খোদ বিজেপির তরফেও বলা হয়েছে, দল ওই নেতার মন্তব্যকে সমর্থন করে না। ঠিক এর পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় শোনা গেল সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা। বিজেপিকে নিশানা করে সাফ জানিয়ে দিলেন তিনি, মা-বোনেদের সিঁদুর খেলা বাংলার সংস্কৃতি। দিল্লির বাবুদের আমদানি করা তরোয়াল খেলা নয়।
[ এই ব্যাঙ্কে জমা নেওয়া হয় রাম নাম, এমনকী উর্দুতেও ]
রামনবমী পালন করার পর থেকেই রাজ্যে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অভিযোগ জোরদার হয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে। তরোয়াল নিয়ে মিছিলের প্রতিবাদও করেছেন রাজ্যবাসীর একাংশ। বরাবরই সকলের ধর্মমতকে সম্মান করার পক্ষে সওয়াল করে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাম্প্রতিক পরিস্থিতির পক্ষে সে স্বর তিনি আরও তীব্র করেছেন। এদিন ডোমকলের সভা থেকেও জানালেন, “আমি যেমন দুর্গাপুজো করি, ইদে অংশগ্রহণ করি, তেমন চার্চেও যাই। তোমরা বাধা দেওয়ার কে? মানুষ কী খাবে, কী পরবে তা কোনও রাজনৈতিক দল ঠিক করে দিতে পারে না। আমরা সংস্কৃতির রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। আমরা মানুষের কাছে দায়বদ্ধ।” স্পষ্টতই ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিরুদ্ধেই ছিল মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা।
[ মমতার মাথা কেটে আনলে ১১ লক্ষ টাকা ইনাম, ঘোষণা বিজেপি নেতার ]
তাঁকে ফতোয়া দেওয়ার প্রসঙ্গে এদিন বিজেপির রাজ্য পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় জানিয়েছিলেন, “দল এ মতকে সমর্থন করে না। তবে মমতার তোষণমূলক রাজনীতির কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা রাগ আছে।” এদিন নাম না করেও যেন মুখ্যমন্ত্রী এ অভিযোগের উত্তর দেন। জানান, “বাংলা সর্ব-ধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাস করে। আমরা সব ধর্ম-জাতি-সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য কাজ করি। আগে ওঁরা বাংলার সংস্কৃতি শিখুন তারপর কথা বলতে আসবেন।” সাধারণ মানুষকে সাবধান করে দিয়ে তিনি জানান, কিছু কিছু মানুষ দাঙ্গা লাগানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার করছে। সেই গুজবে যেন কেউ কান না দেন। বাংলার ধর্মীয় উদারতা তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ত্যাগের অপর নাম হিন্দু, ইমান বা সততার নাম মুসলমান, ভালবাসার নাম খ্রিস্টান আর বলিদানের নাম শিখ। প্রকারন্তরে তিনি জানিয়ে দিলেন, এভাবেই বাংলা সব ধর্মমতকে এক করে নিয়ে চলতে ভালবাসে। সেখানে বিভাজনের কোনও জায়গা নেই। তাই তাঁর সাফ বার্তা, “আমরা দাঙ্গা বাধাই না। কেউ বাধালে তা বরদাস্তও করা হবে না।”
[ মমতাকে খুনের ফতোয়া বিজেপি নেতার, নিন্দায় জয়া-মায়াবতী ]
এদিকে আজ মমতার বিরুদ্ধে ফতোয়া জারির অভিযোগে একযোগে সরব হয়েছেন মায়াবতী থেকে জয়া বচ্চনের মতো মহিলা নেত্রীরা। তাঁদের দাবি, শুধু নিন্দাই নয়, এরকম মন্তব্যকারীর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা উচিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.