সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুধু মায়ানমার বা বাংলাদেশ নয়, রোহিঙ্গা ইস্যুতে এবার রীতিমতো বিপাকে ভারতও। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের একাংশের জঙ্গিযোগে টনক নড়েছে দিল্লির কর্তাদেরও। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মতে অভ্যন্তরীণ সুরক্ষার প্রতি বড়সড় বিপদ ‘রোহিঙ্গা জেহাদিরা’। সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে থাকে তাদের শনাক্ত করাও কঠিন। এমনই পরিস্থিতিতে কলকাতা থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দুরে ঘাঁটি গেড়েছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীরা। সূত্রের খবর, তাদের থাকার জন্য একটি শরণার্থী শিবির খুলেছে ‘দেশ বাঁচাও সামাজিক কমিটি’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
[রোহিঙ্গাদের হাত ধরে রাজ্যে ঢুকছে ‘হিটলার’ জমানার ভয়ংকর ট্যাবলেট]
সূত্রের খবর, সীমান্ত পেরিয়ে তিন দফায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের হাড়দহ গ্রামে ঘাঁটি গেড়েছে রোহিঙ্গা অনুপ্রেবেশকারীরা। সম্প্রতি ওই শিবিরের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। তারপরই শুরু হয় শোরগোল। এক্ষেত্রে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে দেখা দেয় একাধিক প্রশ্ন। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে জলপথে সন্দেশখালি হয়ে রোহিঙ্গাদের পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করানো হচ্ছে। ২০১৭-র ডিসেম্বর টেকনাফ থেকে হাড়দহের শিবিরে প্রথম দফায় ২৯ জন রোহিঙ্গাকে আনা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২২ জন আসে। তৃতীয় পর্যায়ে ৫৩ জন প্রবেশ করে ১৭ ফেব্রুয়ারি। ১০ মার্চ আসে পাঁচজন। আর সবচেয়ে বড় দলটি এসেছে মঙ্গলবার রাতে। এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিএসএফ ও প্রশাসনিক কর্তাদের যথারীতি উত্তর ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে’।
তবে এতগুলি শরণার্থী পরিবারকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য টাকা কোথা থেকে আসছে? উঠছে এমন প্রশ্ন। উত্তরে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির এক কর্তা জানান, প্রায় ৪০টির বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা একজোট হয়ে এই বড় দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছে। তবে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির ভূমিকা নয়ে কিন্তু সন্দেহের অবকাশ থাকছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে সে দেশের সরকার। অভিযোগ, মদতের নামে জেহাদি কার্যকলাপ চালাচ্ছিল ওই সংগঠনগুলি। রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভারত সরকারের সাফ নীতি, অনুপ্রবেশকারীদের পাকড়াও করে ফেরত পাঠানো।
[ব্যর্থ চিকিৎসকরা, বাঁচানো গেল না জলপাইগুড়ির বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুকে]
রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশকারী দেশ থেকে বিতাড়িত করার সিদ্ধান্তে তীব্র আপত্তি রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই মুহূর্তে ভারতে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র সরকার। তবে মানবতার দুহাই দিলেও রোহিঙ্গারা ক্রমেই জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে একাধিক রিপোর্ট দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। উদ্বেগজনকভাবে, সেখানে বলা হয়েছে জেহাদি সংগঠনগুলির সঙ্গে যোগ রয়েছে একাংশ রোহিঙ্গার। তাদের দিয়ে ভারতে নাশকতা চালাতে চায় পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। সব মিলিয়ে শুধু বাংলাদেশ নয় ক্রমেই ভারতের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীরা।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.