স্টাফ রিপোর্টার: মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহেই পেশ হবে ভেঙে পড়া পোস্তা উড়ালপুল পুরোপুরি সরিয়ে ফেলার চূড়ান্ত রিপোর্ট। সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে এই রিপোর্ট তৈরি করেছে বিশেষ তদন্ত কমিটি। যা কিছুদিন আগেই জমা পড়েছিল পূর্ত দপ্তরের কাছে। সেই অনুযায়ী এগোচ্ছে কাজ। প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো পেতে প্রয়োজনে একাধিক দপ্তরের সাহায্য নেবে পূর্ত দপ্তর। তবে নিজেরা নয়, এই কাজ টেন্ডার ডেকে বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে করানোর কথা।
তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হল, পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হবে অভিশপ্ত বিবেকানন্দ রোডের পোস্তা উড়ালপুল। যাতে ব্যাপক দূষণ না ছড়ায় এবং স্থানীয়দের বিপদের মধ্যে না পড়তে হয় তার জন্য বিদেশি সংস্থার সাহায্য নেওয়া হতে পারে। এই সুপারিশ করেছে রাজ্য সরকারের গঠিত বিশেষ তদন্ত কমিটি। যার মাথায় রয়েছেন পূর্ত দপ্তরের সচিব। নবান্ন সূত্রের খবর, বিভিন্ন এজেন্সি ও নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে উড়ালপুল ভেঙে ফেলার পক্ষেই মত দিয়েছে কমিটি। সেই মতেই সিলমোহর দিতে চলেছে রাজ্য সরকার।
[মৃত শিশুর খিলখিল হাসিতে আজও এখানে চমকে যান পথচারীরা!]
উড়ালপুলের নির্মাণের মান পরীক্ষা করেছিল কমিটি। নমুনা পাঠানো হয়েছিল খড়গপুর আইআইটির কাছে। সেই পরীক্ষায় কার্যত পাশ করতে পারেনি এর গুণমান। কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, উড়ালপুলের নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। যার জেরে দুর্বল হয়ে পড়েছে সেতু। যে নকশা তৈরি হয়েছিল উড়ালপুলের জন্য তাও ত্রুটিযুক্ত। এই দুর্বল সেতুর উপর দিয়ে কোনওভাবে যান চলাচল করানো সম্ভব নয় বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া বিবেকানন্দ রোডের উপর ভবিষ্যতে নতুন করে সেতু নির্মাণ করার কথা বলা হয়েছে। সেই সুপারিশই এবার কার্যকর করার পক্ষে রাজ্য সরকারের পূর্ত দপ্তর। কিন্তু দু’টি বিষয় ভাবাচ্ছে পূর্ত দপ্তরের। প্রথমত, এত দীর্ঘ সেতু ভাঙলে তার দূষণ নিয়ন্ত্রণ কীভাবে সম্ভব হবে। বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে দূষণ ঠেকাতে। দ্বিতীয়ত, ঘনবসতিপূর্ণ বড়বাজার ও সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা কতটা সুনিশ্চিত করা যাবে। এজন্য পরামর্শদাতা সংস্থার সঙ্গে কথা বলা হবে বলে জানা গিয়েছে।
২০১৬ সালের ৩১ মার্চ ভেঙে পড়েছিল পোস্তা উড়ালপুলের একাংশ। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় ২৭ জনের। প্রকল্পের নির্মাণের কাজের মান এবং ব্যবহৃত সিমেন্ট ও লোহার গুনমান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। পরে ভেঙে পড়া সেতুর কী হবে তা ঠিক করতে কমিটি গড়ে সরকার। সম্প্রতি সেই কমিটির রিপোর্টে পোস্তা উড়ালপুল ভেঙে ফেলার পক্ষেই সুপারিশ করা হয়েছে। এই উড়ালপুল ভাঙা নিয়েও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে বলে রিপোর্ট উল্লেখ রয়েছে। কারণ এই দুর্বল উড়ালপুলের দু’ধারে রয়েছে বেশকিছু বাড়ি। সেই বাড়ির যাতে কোনও ক্ষতি না হয়। এর পাশাপাশি এত বড় ও দীর্ঘ নির্মাণ ভাঙার সময় সরাতে হবে কিছু পরিবারকে।
[পোস্তা উড়ালপুল-কাণ্ডে চার্জশিট পেশ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.