ফাইল ছবি
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: মনোনয়ন জমা দেওয়া থেকে শুরু করে ভোটের ফল বেরনো। এই একমাস বিধায়কদের অন্য কোনও কাজ করতে হবে না। এই একমাস তাঁদের ছুটি। দলের নিচুতলার যে কর্মীরা বিধানসভা ভোটে খাটেন, তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ পঞ্চায়েতের প্রার্থী। তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ, পঞ্চায়েতের সেই প্রার্থীদের এবার প্রতিদান দেবেন বিধায়করা। তাঁদের প্রত্যেককে জিতিয়ে আনতে হবে। যে লড়াইয়ে বিধায়কদের সঙ্গে থাকবেন পঞ্চায়েত লাগোয়া পুরসভার চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলররা।
শত প্রতিকূলতার মধ্যে দলের পতাকা কাঁধে নিয়ে দলকে আগলে রেখে কাজ করেন নিচুতলার কর্মীরা। তাঁদের কাঁধে চেপেই জিতে আসেন বিধানসভা আর পুরসভার জনপ্রতিনিধিরা। মাঠে-ময়দানে নেমে আসল লড়াইটা তাঁদেরই। তাঁরাই দলের মূল ভিত। লোকসভা ভোটে লড়তে হলে, সেই ভিত মজবুত রাখতেই হবে। সেই কারণেই শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছে, তাঁদের ঘর ভরে রাখতে কোনও ফাঁকি থাকলে চলবে না। যোগ্যদের প্রত্যেককে মর্যাদা দিয়ে জিতিয়ে আনতে তাই জেলাস্তর থেকে কমিটিও গড়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রী এক জেলার সভাপতি বলছেন, “সমস্ত স্তরে সমন্বয় গড়ে লড়াইয়ের প্রক্রিয়াকে ক্ষমতা অনুযায়ী বিকেন্দ্রীকরণ করে দেওয়া হয়েছে। বাইরে থেকে কেউ কিছু আরোপ করতে পারবেন না। দলীয় স্তরে স্থানীয়ভাবে প্রত্যেককে তাঁদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
প্রার্থী দিয়ে ইতিমধ্যে মনোনয়ন দেওয়ার পর্ব শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। জেলা পরিষদের প্রার্থী নির্ধারিতই রয়েছেন। প্রাক্তন পদাধিকারীরাই আবার দাঁড়াচ্ছেন। কোথাও কোথাও সংরক্ষণের গেরো রয়েছে। সেখানে প্রাক্তন পদাধিকারীদের পঞ্চায়েতের পর দল অন্য কাজে লাগাবে। এ ছাড়া ভোটের জন্য মূল কমিটিটি হয়েছে জেলা সভাপতি ও জেলা পর্যবেক্ষকদের মাথায় রেখে। তাঁদের নিচে থাকবেন বিধায়করা। বিধায়ক ও পুর-প্রধানেরাই মূলত নিচু তলার কর্মীদের সঙ্গে দলের তরফে যোগাযোগ রাখবেন। তাঁদের নিচে ভাগ করা হয়েছে অঞ্চল কমিটিগুলিকে। একটি অঞ্চলকে তিনটি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। তার প্রতিটিতে থাকবেন একজন করে পর্যবেক্ষক। এঁরাই বুথ কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে মূল কাজটা করবেন। প্রার্থীদের সুবিধা-অসুবিধা দেখবেন তাঁরাই। দলের বিধায়ক, পুর-প্রধান বা কাউন্সিলরদের সঙ্গে লিয়াজঁ রাখার কাজ করবেন ব্লক পর্যবেক্ষকরা। রাজ্যের শীর্ষস্তরের এক নেতা যেমন বলেছেন, “কোথাও কাউকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে না। দল সবাইকে তাঁদের কী কাজ তা বলে দিয়েছে। দলের নির্দেশ মেনে কাজ করবেন বিধায়করা। কর্মীরা শুনবেন তাঁদের কথা। পুরোটাই একটি নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে থাকবে।”
এই কমিটিতেই গুরুত্ব দিয়ে রাখা হয়েছে দলের প্রাক্তন বিধায়ক এবং নয়ের দশক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থাকা পুরনো কর্মীরা। এক সময় দলে ব্রাত্য হয়ে গিয়েছেন বলে চূড়ান্ত ক্ষোভ উগরে দিয়ে মুখ ফিরিয়েছিলেন এই কর্মীরাই। তৃণমূলনেত্রী তাঁদের যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়ে দলে নেওয়ার কথা বলেছেন। তার পরই পঞ্চায়েতের কমিটি গড়ে সেখানে যোগ্য মর্যাদা দিয়ে রাখা হয়েছে এই পুরনো কর্মীদের। দলের রাজ্যস্তরের এক নেতার কথায়, “তাঁদের অভিজ্ঞতা আর যুবকর্মীদের শ্রম প্রধান ভরসা। বিধায়ক ও পুরসভার জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের নিয়েই পঞ্চায়েতের লড়াইয়ে নেমেছেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.