সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাজা, লেবাননের পর এবার সিরিয়ায় হামলা ইজরায়েলের! দামাস্কাসের একাধিক সেনাঘাঁটি লক্ষ্য করে আছড়ে পড়ে একের পর এক ইজরায়েলি বোমা। সব মিলিয়ে ২৫০টি হামলা চালিয়েছে তেল আভিভ। এমনই খবর কাতারের সংবাদ সংস্থা আল জাজিরা সূত্রে। দুদিন আগেই সিরিয়ায় গদিচ্যুত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। ক্ষমতার রাশ এখন আল কায়দার শাখা সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর হাতে।
গত ২৬ নভেম্বর থেকে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ ভয়ংকর আকার ধারণ করে। আলেপ্পো, হোমস, দারার মতো একের পর এক শহরে হামলা চালিয়ে আসাদ বাহিনীকে পিছু হঠতে বাধ্য করে বিদ্রোহীরা। সব শেষে রবিবার দামাস্কাস কবজা করে নেয় বন্দুকধারীরা। আর সেই থেকেই গত ৪৮ ঘণ্টায় একের এক পর বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে সিরিয়ার রাজধানী। আকাশপথে হামলা চালায় ইজরায়েলি ফৌজ। তাদের নিশানায় মূলত ছিল সেনাঘাঁটিগুলো। দামাস্কাসের পাশাপাশি হোমস শহর ও একাধিক বিমানবন্দরেও ইজরায়েল হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
টাইমস অফ ইজরায়েল সূত্রে খবর, সিরিয়ার দুই নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছে, সোমবার ইজরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো বড় সেনা ঘাঁটিতে বোমাবর্ষণ করেছে। বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার ও জেট উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার কামিশলি বিমান ঘাঁটি, হোমসের শিনশার ঘাঁটি ও দক্ষিণ-পশ্চিমে আকরবা বিমানবন্দরে আঘাত হানে। এর আগে রবিবার ইজরায়েলের বিমান বাহিনী অস্ত্রাগার, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, রাসায়নিক অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে আক্রমণ শানায়। এদিকে, এই হামলা নিয়ে মুখ খুলেছে ইজরায়েল সরকার। তারা জানিয়েছে, সিরিয়ায় এই হামলা সাময়িক। সেদেশে থাকা নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গৃহযুদ্ধে আসাদকে সাহায্য করছিল ইরান। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। আর ইরানের ভুল হিসাবেই নাকি পতন ঘটেছে আসাদ সাম্রাজ্যের। এমনই দাবি করেছেন ভারতে নিযুক্ত ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত রিউভেন আজার। তিনি সাফ বলেন, ইরানের হিসাবে খুব বড় ভুল ছিল। সেই পথে হেঁটে ভুল করেছে হেজবোল্লাও। ওঁরা বুঝতে পারেনি ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ফল কতটা ভয়ংকর হতে পারে। ইজরায়েলি সেনা হেজবোল্লা প্রধান হাসান নাসরাল্লাকে খতম করেছে। নিকেশ করেছে হাজার হাজার জেহাদিকে। আর তাতেই দুর্বল হয়ে পড়েছিল আসাদ বাহিনী। বিদ্রোহীরা তীক্ষ্ণভাবে এই ঘটনাপ্রবাহকে লক্ষ্য করেছিল। সুযোগ বুঝে আঘাত হানে আসাদ সাম্রাজ্যের উপর। সিরিয়ায় যা কিছু হয়েছে সেটা ইজরায়েলের সঙ্গে ইরানের সংঘাতে জড়ানোর ফল।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে আরব বসন্তের হাওয়ায় উত্তাল হয়ে ওঠে সিরিয়ায়। আকাশ বাতাস কেঁপে ওঠে একনায়ক হঠাও, গণতন্ত্র ফেরাও স্লোগানে। শুরু হয়ে যায় গৃহযুদ্ধ। এই লড়াই তীব্র আকার ধারণ করে চলতি বছরের নভেম্বরে। গত ২৭ তারিখ আসাদ বাহিনীর হয়ে লড়তে অস্বীকার করে ইরানের মদতপুষ্ট হেজবোল্লা। সেদিনই সিরিয়ার অন্যতম প্রধান শহর আলেপ্পোর একটা বড় অংশ দখল করে নেয় বিদ্রোহীরা। যাদের মাথায় রয়েছে আল কায়দার শাখা সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। তার পর ১৩ দিনের হামলা পালটার পর আসাদ বাহিনীকে পর্যদুস্ত করে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.