Advertisement
Advertisement
গবেষকের নাগরিত্ব বাতিল

কাজের জন্য বেশিদিন ভারতে কাটানোর ‘শাস্তি’,গবেষকের নাগরিকত্ব বাতিল ব্রিটেনের

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ সে দেশের শিক্ষামহল।

Cambridge fellow told to leave UK , academics launch protest
Published by: Souptik Banerjee
  • Posted:November 12, 2019 8:04 pm
  • Updated:November 12, 2019 8:04 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতে এসেছিলেন গবেষণার কাজে। একটু বেশিদিনই থাকতে হয়েছিল। কিন্তু তার জন্য দেশে ফিরে যে এমন শাস্তির মুখে পড়তে হবে, ভাবেননি ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ গবেষক। কেমব্রিজের কৃতী গবেষক আসিয়া ইসলামের নাগরিকত্ব বাতিল করে দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। এই ঘটনার বিরুদ্ধে সে দেশে শুরু হয়েছে আন্দোলন।

ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী, ‘টায়ার ৪’ ভিসা ক্যাটেগরির অধীনে থাকা গবেষকরা দশ বছরের মধ্যে যথাযথ কারণ না দেখিয়ে ৫৪০ দিনের বেশি দেশের বাইরে কাটালে তাঁর ‘ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন’ আবেদন বাতিল হয়ে যায়। ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে লিঙ্গ, শ্রেণি ও শ্রম সম্পর্কে গবেষণা করতে গিয়ে ভারতে ছিলেন আসিয়া। সেই কাজ সেরে তাঁর ব্রিটেনে ফিরে যেতে ওই সময়সীমা পার হয়ে যায়। তবে আসিয়ার দাবি, তিনি ব্রিটেনে তাঁর দীর্ঘদিন অনুপস্থিতির যথাযথ নথিপত্র জমা দিয়েছিলেন। তারপরেও তাঁর নাগরিকত্ব কেন বাতিল হল, তা তাঁর কাছে স্পষ্ট নয়।

Advertisement

গত সপ্তাহে গবেষক আসিয়া ইসলামের ‘ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন’বা আই এল আর-এর আবেদনপত্র খারিজ করে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মন্ত্রকের তরফে কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের বেশি ভারতে কাটানোর ফলে এই আবেদনের যোগ্যতা হারিয়েছেন। আসিয়ার এই ঘটনার প্রতিবাদে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উদ্দেশে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে দেখার আর্জি জানিয়ে লেখা চিঠিতে সই করেছেন বহু শিক্ষাবিদ, পড়ুয়া ও সমাজকর্মীরা।

Advertisement

ঘটনায় স্তম্ভিত আসিয়া নিজেই। তিনি টুইটারের মাধ্যমে তাঁর হতাশার কথা প্রকাশ করেছেন। আসিয়া লিখেছেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আমার আবেদন খারিজ করেছে কারণ ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গবেষণার কাজে আমি দেশের বাইরে ছিলাম। আমি আমার মেজাজ ঠিক রাখতে পারছি না।’ তিনি এও লিখেছেন, ‘একাধিক চিঠিতে আমি জানিয়েছিলাম যে আমার কাজের জন্য ফিল্ডওয়ার্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে গবেষণার কাজকে না রাখার অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু আমার কোনও কথাই শোনা হয়নি। আমি আমার কাজের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হয়েছি বলেই হয়তো আমার আবেদন গ্রহণ করা হয়নি।’

ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এমন কাণ্ডে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে ব্রিটিশ শিক্ষাবিদ মহলে। মন্ত্রকের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে পিটিশন সই করা হয়েছে। সেখানে ৯০০ জনের বেশি শিক্ষাবিদ ও পড়ুয়া সাক্ষর করেছেন। এরপরেও সে দেশের বিদেশমন্ত্রকের উত্তর অবাক করার মতো। কড়া ভাষায় আসিয়ার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে, ‘ভারতে ফিরে গিয়ে আপনি আবার ব্যক্তিগত জীবন গড়ে তুলতে পারবেন, নতুন বন্ধুত্ব তৈরি করতে অথবা পুরনো সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবেন।’

এক দশকেরও বেশি সময় ব্রিটেনে বসবাসকারী আসিয়া ইসলাম কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা নিউনহ্যাম কলেজ থেকে পিএইচডি সম্পূর্ণ করার পরে চলতি বছরেই তিন বছরের জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ অর্জন করেন। তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটস স্কলার, লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিকস-এর বেস্ট ডিগ্রি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড অধিকারী তিনি। আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেধার স্বীকৃতি হিসেবে ডক্টর জাকির হুসেন পদকপ্রাপ্ত আসিয়া ইসলাম।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ