সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকদিন। তিন বছর পূর্ণ হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের। কিন্তু তার আগেই এই সংঘাত থামানো নিয়ে আলোচনা চলছে সৌদি আরবে। উপস্থিত রয়েছেন আমেরিকা ও রাশিয়ার আধিকারিকরা। কিন্তু ডাকা হয়নি ইউক্রেনের কোনও প্রতিনিধিকে। স্বাভাবিকভাবেই এনিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন সেদেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। নানা অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু এবার সেই নিয়েই জেলেনস্কিকে ‘চূড়ান্ত ব্যর্থ নেতা’ বলে ভর্ৎসনা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। যুদ্ধরত দুদেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের আলোচনার টেবিলে বসানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। তাই ইউক্রেন নিয়ে আলোচনার জন্য তিনি বেছে নিয়েছেন সৌদি আরবকে। মরুদেশে বৈঠক করছেন আমেরিকা ও রাশিয়ার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। উপস্থিত রয়েছেন মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও। কিন্তু যে দেশকে কেন্দ্র করে এই আলোচনা আশ্চর্যজনকভাবে সেই ইউক্রেনকেই ডাকা হয়নি সৌদিতে। যা নিয়ে নানা জলঘোলা হচ্ছে। ট্রাম্পের মনে কূটনীতির কোন প্যাঁচ চলছে তা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠছে।
বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভপ্রকাশ করেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, “ইউক্রেনকে ছাড়া ইউক্রেন সম্পর্কে কোনও আলোচনা বা চুক্তিকে আমরা স্বীকৃতি দিই না।” এই বক্তব্য নিয়েই এবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে পালটা দিলেন ট্রাম্প। যুদ্ধ শুরু করা নিয়ে দোষারোপ করে তিনি বলেন, “জেলেনস্কি একজন ব্যর্থ নেতা। আলোচনা বা সমঝোতার পথে আসার কোনও ক্ষমতাই নেই তাঁর। তিন বছর পূর্ণ হতে চলল এই যুদ্ধের। জেলেনস্কিরই তো উচিত ছিল অনেক আগেই চুক্তি করে লড়াই বন্ধ করে দেওয়া।” তবে এহেন মন্তব্য ট্রাম্প প্রথমবার করলেন না। এর আগেও তিনি বলেছিলেন, জেলেনস্কিরই সমঝোতার পথে হাঁটা উচিত। রাশিয়া যে অঞ্চলগুলো চাইছে সেগুলো তাদের হাতে তুলে দেওয়া উচিত। তবে প্রথমে ডাক না পেলেও সূত্রের খবর, বুধবার সৌদিতে যেতে পারেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
এদিকে,ট্রাম্পের এই রাশিয়া ‘প্রীতি’ নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং ন্যাটো সিঁদুরে মেঘ দেখছে। হঠাৎ আমেরিকার এই রুশ নীতি পরিবর্তনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আমেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার দূরত্ব কমাতে সৌদির এই আলোচনাকে ব্যবহার করেছেন ট্রাম্প। চিনের সঙ্গে মস্কোর গভীর বন্ধুত্বের কথা তাঁর অজানা নয়। ফের একবার ক্ষমতায় ফিরে তিনি চাইছেন চিনের সঙ্গে রাশিয়ার সখ্য ভাঙতে। যাতে আমেরিকার বিরুদ্ধে দুদেশ জোট বাঁধতে না পারে। আমেরিকাকে প্যাঁচে ফেলতে নয়া কোনও কৌশল না নিতে পারে তারা। আর এক্ষেত্রে ট্রাম্পের হাতিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধ। পাশাপাশি তাঁর হস্তক্ষেপে যদি দুদেশের সংঘাত থেমে যায় তাহলে ইউরোপের দেশগুলোর জন্য বিরাট বার্তা হবে। ট্রাম্প প্রমাণ করে দেবেন বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমেরিকা কতটা শক্তিশালী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.