সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইজরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর প্রাণে বাঁচতে গোপন আস্তানায় আশ্রয় নিয়েছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। অবশেষে সেই বাঙ্কার থেকে মুক্তি। যুদ্ধের পর প্রথমবার প্রকাশ্যে এলেন খামেনেই। তাঁকে দেখা মাত্রই উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন তাঁর অনুগামীরা।
শনিবার ইরানের টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক দৃশ্যে খামেনেইকে শিয়া মুসলিমদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেখা গিয়েছে। চিরাচরিত কালো পোশাক এবং চোনা মেজাজে মঞ্চে উঠতেই জয়ধ্বনি দিতে শুরু করেন তাঁর অনুগামীরা। হাততালির সঙ্গে দেওয়া হয় স্লোগানও। তবে প্রকাশ্যে আসার পর এদিন খামেনেই কোনও ভাষণ দেননি। কিন্তু তাঁকে দেখতে পেয়ে তাঁর আনুগামীরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন।
গত ১৩ জুন ইরানে হামলা চালায় ইজরায়েল। তারপর থেকেই আর প্রকাশ্যে দেখা য়ায়নি খামেনেইকে। তিনি কোথায় রয়েছেন তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। পড়ে শোনা যায়, যুদ্ধের আঁচ থেকে বাঁচাতে ৮৬ বছরেরে এই নেতাকে বাঁচাতে গোপন বাঙ্কারে রাখা হয়। এমনকী তাঁর আস্তানা কোনওভাবেই যাতে ফাঁস না হয়ে যায়, তাই জন্য তিনি বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম ব্যবহার থেকেও বিরত ছিলেন। তবে যুদ্ধের মাঝে বাঙ্কার থেকে তিনি ভিডিওবার্তায় একাধিকবার আমেরিকা এবং ইজরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। যুদ্ধবিরতির পরও তিনি প্রকাশ্যে আসেননি।
এ প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, আয়াতোল্লা কোনও নাম নয়। এটি একটি পদ। ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া দেশ ইরানের সুপ্রিম লিডার হলেন ‘আয়াতোল্লা’। আসলে ইরানে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী থাকলেও গোটা দেশটি পরিচালনা করে সুরা কাউন্সিল। তার সদস্য ১২ থেকে ২৫ জন মৌলবী। আর তাদের মাথায় থাকেন ‘আয়াতোল্লা’। যার ছাড়পত্র পেলে তবেই দেশের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী কিংবা সেনাপ্রধান পদে মনোনয়ন মেলে। তারপর হয় নির্বাচন। সাড়ে তিন দশক ধরে এই ‘আয়াতোল্লা’ পদে রয়েছেন আলি খামেনেই। আর এই ৩৫ বছরের বেশি সময় ধরে নিজের ক্ষমতার শিঁকড় গেঁড়েছেন ইরানের মাটিতে। সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এনেছেন প্রশাসন, বিচারবিভাগ এবং সামরিক বিভাগের উপর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.