ছবি- আল জাজিরা
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পর পর আছড়ে পড়ছে বোমা। ঘনঘন শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের আওয়াজ। সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাস থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে এভাবেই হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েল। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে হচ্ছে একের পর এক সেনাঘাঁটি, অস্ত্রভাণ্ডার। কয়েকদিন আগেই মধ্যপ্রাচের দেশটিতে বিদ্রোহীদের হাতে পতন ঘটেছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের। বদলেছে সরকার। এবার এই টালমাটাল পরিস্থিতিতেই ‘অন্য লড়াই’ শুরু হয়েছে ক্ষতবিক্ষত সিরিয়ায়।
গত ২৬ নভেম্বর থেকে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ ভয়ংকর আকার ধারণ করে। অবশেষে ৮ ডিসেম্বর রবিবার বিদ্রোহীদের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় আসাদ বাহিনী। ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন গদিচ্যুত প্রেসিডেন্ট। প্রথম থেকেই গোটা পরিস্থিতির উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছিল ইজরায়েল। আসাদ সরতেই রবিবার রাত থেকে সিরিয়ায় আক্রমণ শানাতে শুরু করে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)। দামাস্কাস থেকে শুরু করে হোমসের মতো বড়বড় শহরের সেনাঘাঁটিগুলোকে নিশানা করে তারা।
জানা গিয়েছে, রবিবার থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৪৫০টির বেশি হামলা করেছে ইজরায়েলের বিমানবাহিনী। বিবৃতি দিয়ে আইডিএফ জানিয়েছে, সিরিয়ার দামাস্কাস, হোমস, টারতুস, লাতাকিয়া ও পালমিরায়ের বিমানঘাঁটি, জেট-বিধ্বংসী ব্যাটারি, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক এবং অস্ত্র উৎপাদনের কেন্দ্রগুলোতে ৩৫০টি হামলা চালানো হয়েছে। নিশানা করা হয়েছিল নৌঘাঁটিগুলোতেও। সব মিলিয়ে ১৫টি যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, হঠাৎ কেন সিরিয়ায় এমন বিধ্বংসী হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েল?
আইডিএফের দাবি, সিরিয়ার সামরিক পরিকাঠামোগুলোকে একেবারে গুঁড়িয়ে দেওয়াই ইজরায়েলের উদ্দেশ্য। কারণ সেখান থেকে কার্যকলাপ চালাচ্ছে ইরানের সেনা। সিরিয়ার অস্ত্র কারখানায় তৈরি হাতিয়ারগুলোকে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারে ইরানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলো। যদিও সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে তেহরান জানিয়ে দিয়েছে, সিরিয়ায় এখন কোনও ইরানি সেনা মোতায়েন নেই।
আল জাজিরা সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় ইজরায়েল। কারণ এখন সিরিয়ায় ক্ষমতার রাশ রয়েছে তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর হাতে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এই আল-শাম আল কায়দার শাখা সংগঠন হিসেবেই পরিচিত। অর্থাৎ, গৃহযুদ্ধে গণতন্ত্র ফেরানোর যে লড়াই ছিল তা কার্যত হাইজ্যাক করে নেয় জেহাদিরা। এখানেই সিঁদুরে মেঘ দেখেছে তেল আভিভ। তাই যাতে জঙ্গিদের হাতে সহজে নানা হাতিয়ার না পৌঁছয় তাই সমস্ত অস্ত্র কারখানা ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য ময়াদানে নেমেছে ইজরায়েলি সেনা। যাতে পড়শি দেশ থেকে কোনও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ইজরায়েলের বুকে না হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.