সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইজরায়েল থেকে ইরানের দূরত্ব খাতায় কলমে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার। এই বিরাট দূরত্ব অতিক্রম করে গোটা ইরানকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা একেবারেই সহজ ছিল না ইজরায়েলের জন্য। অত্যন্ত কঠিন এই অভিযানের নেপথ্যে ছিল নিখুঁত পরিকল্পনা। ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে সেই তথ্য। জানা যাচ্ছে, বিমান হামলা চালানোর আগে ইজরায়েলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা। তার জন্য ইউক্রেনের রণনীতি অবলম্বন করেন ইহুদি যোদ্ধারা। ড্রোনের মাধ্যমে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ইরানের মাটিতে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ কোনও হঠাৎ হামলা নয়, দীর্ঘদিন ধরে এই পরিকল্পনা চালিয়েছিল ইজরায়েল। ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করতে ইউক্রেনের মতোই গোপনে ইরানে ড্রোন পাচার করে ইজরায়েল। এরপর হঠাৎ বৃহস্পতিবার রাতে সক্রিয় হয় ড্রোনগুলি। বেছে বেছে টার্গেট করা হয় ইরানের সমস্ত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলিতে। খামেনেই-এর দেশের সমস্ত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করার পর একযোগে হামলা চালায় অন্তত ২০০ ইজরায়েলি বিমান। টার্গেট করা হয় ইরানের সামরিক ঘাঁটি ও পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রগুলিকে। এটাই শেষ নয়, আগামী দিনে ইরানের মাটিতে আরও হামলা চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইজরায়েল।
সম্প্রতি রাশিয়ার ভেতরে ঢুকে ইউক্রেনের মারণ ড্রোন হামলার পর ইজরায়েলের এই হামলা এক সুতোয় বাঁধা বলে মনে করছেন যুদ্ধ বিশেষজ্ঞরা। গত ৩১ মে রাশিয়ার একাধিক বায়ুসেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছিল ইউক্রেনের সিকিয়োরিটি সার্ভিস। এই হামলায় ৪০টিরও বেশি রুশ যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়। প্রায় এক বছরের পরিকল্পনায় রাশিয়ার মাটিতে ট্রাকে করে ড্রোন পাচার করেছিল ইউক্রেন। এরপর হঠাৎ চলে হামলা। এবার সেই একই পন্থায় ইজরায়েলও হামলা চালালো ইরানে।
এই ঘটনায় কূটনৈতিক মহলের অনুমান, যে সূত্রে মারণ হামলার অঙ্ক কষা হয়েছে, তাতে হতে পারে ইউক্রেনের তরফে রাশিয়ার ওই হামলার নেপথ্যেও ছিল মোসাদ। কারণ, এই ধরনের নিখুঁত হামলার পরিকল্পনা সাজানোর ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বে মোসাদের জুড়ি মেলা ভার। সবমিলিয়ে ইউক্রেনের তরফে রাশিয়ার মাটিতে হামলার নেপথ্যে ইজরায়েলের হাত থাকতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.