Advertisement
Advertisement

Breaking News

ক্রাইস্টচার্চে গুলিতে ঝাঁজরা স্ত্রী, তবুও খুনিকে ক্ষমা করলেন পঙ্গু স্বামী

নিউজিল্যান্ডের সেই মসজিদ থেকে আর বেরোতে পারেননি হুসনা আহমেদ।

Man who lost wife in Christchurch terror attack forgives gunman
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:March 18, 2019 10:47 am
  • Updated:March 18, 2019 10:47 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের সেই মসজিদ থেকে আর বেরোতে পারেননি হুসনা আহমেদ। তার আগেই তাঁকে নৃশংসভাবে গুলি চালিয়ে খুন করে জঙ্গি ব্রেন্টন ট্যারান্ট। তারপরেও বন্দুকবাজ ব্রেন্টন ট্যারান্টকে ক্ষমা করে দিতে চান হুসনার স্বামী ফরিদ আহমেদ। বলতে চান, ক্ষমাই পরম ধর্ম। ক্ষমা করেই এগিয়ে যেতে পারে মানুষ। ফরিদ বলেন, “আমি ওকে বলব, তোমার মধ্যেও একজন অসাধারণ মানুষ হওয়ার ক্ষমতা আছে ব্রেন্টন। এমন একজন মানুষ যে মানুষকে মারার বদলে, তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। মনুষ্যত্বে বিশ্বাস করা ক্ষমাশীল, দয়ামায়ায় পূর্ণ একজন মানুষ।” বন্দুকবাজ হিংস্র জঙ্গি ব্রেন্টন যাতে জীবনের প্রকৃত পথ খুঁজে পায়, তার জন্য প্রার্থনা করবেন বলেও জানাচ্ছেন ফরিদ।

[ক্রাইস্টচার্চে গণহত্যায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫ ভারতীয় নাগরিক, জানাল হাই কমিশন]

Advertisement

১৯৯৮ সালে ফরিদকে পিষে দিয়েছিল এক মদ্যপ ড্রাইভার। সেই থেকে হুইলচেয়ারেই আবদ্ধ ৫৯ বছরের ফরিদের জীবন। স্ত্রী হুসনাই ছিলেন তাঁর একমাত্র বল ভরসা। সেই ভয়ংকর দিনের কথা এখনও স্পষ্ট মনে করতে পারছেন ফরিদ। বন্দুকবাজের হামলা শুরু হতেই মহিলা ও শিশুদের হল থেকে বেশ কয়েকজনকে পালাতে সাহায্য করেন হুসনা। তাঁদের নিয়ে বেরিয়েও যান সামনের বাগানে। তারপরেই আবার ফরিদকে খুঁজতে ফিরে আসেন মসজিদের দরজার কাছে। তখনই তাঁকে গুলি করে মারে ব্রেন্টন।মসজিদের ভেতর এক একজনকে দু’তিনবার করে গুলি করছিল উন্মত্ত ব্রেন্টন। এমনকী বারবার গুলি চালাচ্ছিল নিহতদের দেহেও। তার মধ্যেই কোনওক্রমে বেরিয়ে আসতে পারেন ফরিদ। তারপর আর খুঁজে পাননি হুসনাকে। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিহতদের একটি ছবির মধ্যেই দেখতে পান স্ত্রী হুসনাকে। বুঝতে পারেন হুসনা আর নেই। ক্রাইস্টচার্চের এই মসজিদ থেকেই সামান্য দূরে একটি স্কুল। সেই স্কুলেরই ছাত্র ছিল ১৪ বছরের সায়াদ মিলনে। শুক্রবারের হামলার সময় আল নুর মসজিদে নমাজ পড়তে গিয়েছিল সে। ব্রেন্টনের গুলিতেই প্রাণ হারিয়েছে সায়াদ।

Advertisement

সায়াদের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তার বাবা। তিনি জানাচ্ছেন, “জন্মের সময় বাঁচার কোনও আশাই ছিল না সায়াদের। সারা জীবন ধরেই অসংখ্য সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে ছোট্ট সায়াদ। তারপরেও সব কিছুকে ছাপিয়ে নিজেকে প্রমাণ করছিল ও। সেই সায়াদকেই বীভৎসভাবে খুন হয়ে যেতে হল। এমন একজনের হাতে যার কাছে জীবনের কোনও দামই। নেই।”শুধু সায়াদই নয়। এই স্কুলের অন্য এক ছাত্রও মারা গিয়েছে এই হামলায়। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে আরও একজন। স্কুলের এক প্রাক্তন ছাত্রেরও নাম আছে মৃতের তালিকায়। প্রায় ২০০০ ছাত্র পড়ে ক্রাইস্টচার্চের এই স্কুলে। এদের অনেকেই, রবিবার ছুটির দিনে হাতে ফুলের তোড়া নিয়ে হাজির হয়েছে স্কুলের সামনে। স্কুলের প্রিন্সিপাল মার্ক উইলসন জানাচ্ছেন, স্কুল ফের খুললেই ছাত্রদের জন্য বিশেষ কাউন্সেলরদের নিয়ে আসা হবে। উইলসনের বক্তব্য, “এমন ভয়াবহ ঘটনার শোক সামলে ওঠা সহজ নয়। এমন মুহূর্তে অনেকেই ঘৃণা এবং বিদ্বেষে ভেসে যেতে পারে। কিন্তু সেটা যাতে না হয় সেটা নিশ্চিত করতেই নিয়ে আসা হবে কাউন্সেলরদের। ছাত্রদের বোঝানো হবে ঘৃণা নয়, আসলে ভালবাসার মাধ্যমেই এড়ানো যায় এমন নৃশংস ঘটনাকে।

[ডেডলাইন ২০৩০, বিশ্ববাসীকে প্লাস্টিক বর্জনের আহ্বান রাষ্ট্রসংঘের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ