সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বালোচ বিদ্রোহে কাঁপছে পাকিস্তান। বিদ্রোহীদের কড়া হাতে দমন করার পণ নিয়েছে পাক সেনা। কিন্তু শত চেষ্টা সত্ত্বেও বিদ্রোহ দমন করা যাচ্ছে না। সেনাবাহিনীকে পালটা মার দিচ্ছে বিদ্রোহীরা। সব মিলিয়ে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পড়শি দেশে। আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, বালোচ বিদ্রোহে খণ্ডিত হবে পাকিস্তান? আলাদা রাষ্ট্র হবে বালোচিস্তান? এই সব জল্পনা নিয়ে দেশের নাগরিককে আশ্বস্ত করলেও শঙ্কিত খোদ পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির।
আজ বৃহস্পতিবার প্রবাসী পাকিস্তানিদের একটি সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন আসিম মুনির। সেখানে বালোচিস্তানের প্রসঙ্গ উঠতেই আশঙ্কার সুর শোনা যায়। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের গর্ব বালোচিস্তান। ওরা এত সহজে এটা ছিনিয়ে নেবে আমাদের থেকে? ওদের আগামী ১০ প্রজন্ম বালোচিস্তান ছিনিয়ে নিতে পারবে না। আমরা ওই জঙ্গিদের খুব তাড়াতাড়ি পরাস্ত করব। পাকিস্তান কখনও ভাঙবে না।” প্রসঙ্গত, আসিম মুনিরের বিরুদ্ধেই বালোচ বিদ্রোহীদের গুমখুনের অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সব থেকে বড় প্রদেশ বালোচিস্তান। এখানেই জন্ম বালোচ লিবারেশন আর্মির (বিএলএ)। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের জন্মের পর থেকেই আলাদা হওয়ার দাবি জানিয়েছে বালোচিস্তান। ২০০০ সালের শুরুর দিকে এই প্রদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করার দাবিতে পাক সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বিএলএ। তারপর থেকে পাকিস্তানি শাসনের শৃঙ্খল ভেঙে ফেলতে লড়াই চালাচ্ছে বালোচ বিদ্রোহীরা। পালটা গুমখুন, হত্যা ও ধর্ষণের মতো অমানুষিক অত্যাচার চালিয়ে বিদ্রোহের আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ। বিশেষ করে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর তৈরি হওয়ার পর থেকেই আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে বালোচিস্তান। অভিযোগ, খনিজ সমৃদ্ধ প্রদেশটিকে কার্যত লুট করছে পাক প্রশাসন। প্রতিদানে বালোচ জনতা পাচ্ছে শুধুই নির্যাতন ও দারিদ্র।
প্রসঙ্গত, ২০১৫-তে স্বাক্ষর হওয়া মউয়ের ভিত্তিতে চিন-পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক করিডর বা সিপিইসি নির্মাণকার্য শুরু হয়। চিনের প্রস্তাবিত ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ নীতির উপর ভিত্তি করে, তাদের অর্থ সাহায্যেই এই করিডর তৈরি হচ্ছে। পাকিস্তানের গদর পোর্ট থেকে চিনের শিনজিং প্রদেশ পর্যন্ত মোট ২,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথটি তৈরি করা হয়েছে। এই করিডর নিয়ে প্রথম থেকেই বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আসছেন বালোচিস্তান-সহ গিলগিট-বালতিস্তান ও পিওকে-র নাগরিকরা। অভিযোগ, পেশিশক্তির জোরে তাঁদের বাসভূমি কেড়ে নিয়ে এই করিডর তৈরি করেছে পাকিস্তান। যাতে পূর্ণ মদত দিয়েছে চিন। গত মার্চেই জাফার এক্সপ্রেস হাইজ্যাক করে বিদ্রোহীরা। প্রাণ হারান বহু মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.