Advertisement
Advertisement
PM Modi

সাইপ্রাসে লুকিয়ে তুরস্কের প্রাণভোমরা! সৌজন্য সফরের আড়ালে এরদোগানকে জব্দ করার ছক মোদির?

এই সফরে এক ঢিলে দুই পাখি মারবে ভারত।

PM Modis Cyprus trip is a clear message to Turkey
Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:June 16, 2025 4:18 pm
  • Updated:June 16, 2025 7:38 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত ও তুরস্কের কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝেই সোমবার সাইপ্রাস সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা ও পাক-তুরস্ক ঘনিষ্ঠতার মাঝে ভূমধ্যসাগরের ছোট্ট এই দ্বীপরাষ্ট্রে দুই দশক পর পা পড়ল কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর। ফলে নরেন্দ্র মোদির এই সফরকে নিছক ‘সৌজন্য’ হিসেবে দেখতে নারাজ কূটনৈতিক মহল। ভারত-পাক সংঘাত ও ইসলামাবাদে তুরস্কের উসকানির মাঝে মোদির সাইপ্রাস সফর কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনে করা হয়, ছোট্ট এই দ্বীপরাষ্ট্রে লুকিয়ে রয়েছে তুরস্কের প্রাণভোমরা।

Advertisement

মোদির এই সফরের কূটনৈতিক উদ্দেশ্য বোঝার আগে সাইপ্রাসের অতীত ইতিহাস কিছুটা জানা দরকার। ভারত ও পাকিস্তানের মতোই দীর্ঘদিন ধরে সংঘর্ষে লিপ্ত সাইপ্রাস ও তুরস্ক। ভৌগলিকভাবে এশিয়া মহাদেশের অংশ হলেও সাইপ্রাস ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য। একটা সময়ে এখানে ব্রিটিশদের রাজত্ব ছিল। তুরস্ক ও সাইপ্রাসের মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত ১৯৬০ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভের পর। এখানকার দুই সম্প্রদায় গ্রিক সাইপ্রিয়ট ও তুর্কি সাইপ্রিয়ট নিজেদের মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগি পথে হাঁটলে শুরু হয় মতবিরোধ। স্বাধীনতার মাত্র ৩ বছরের মধ্যে এই মতবিরোধ সংঘর্ষের রূপ নেয়। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর হয়ে ওঠে যে রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীকে ডাকতে হয়। ১৯৭৪ সালে গ্রিক সাইপ্রিয়টরা সাইপ্রাসকে গ্রিসের অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে আন্দোলন শুরু করে। পালটা নামে তুরস্ক। ৫ দিনের যুদ্ধের পর সংঘর্ষ বিরতি তুর্কি বাহিনী পুরোপুরি সাইপ্রাস ছাড়েনি। উত্তর-পূর্বের একটা বড় অংশকে তুরস্কের অধীনস্থ বলে দাবি করে তারা। তবে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এই অংশকে তুরস্কের বলে স্বীকৃতি দেয়নি। সেই সংঘাত আজও বর্তমান।

এই পরিস্থিতির মাঝেই পহেলগাঁও সন্ত্রাসকে কেন্দ্র করে ভারত-পাক সংঘর্ষ ও ইসলামাবাদকে তুরস্কের মদতে ভারতের ‘অস্ত্র’ হতে চলেছে সাইপ্রাস। এই ডামাডোলের মাঝে মোদির সাইপ্রাস সফর আসলে তুরস্কের জন্য কড়া বার্তা। এরদোগান যদি ভারতের বিরুদ্ধে গিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় সেক্ষেত্রে ভারতের অস্ত্র হয়ে উঠবে সাইপ্রাস। নতুন করে অশান্তির মেঘ ঘনাবে তুরস্কের আকাশে। এর পাশাপাশি কূটনৈতিকভাবে এই সফরের আরও বেশকিছু উল্লেখযোগ দিক রয়েছে।

সাইপ্রাসের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নরেন্দ্র মোদি, পিছনে তুরস্ক অধিকৃত সাইপ্রাসের পাহাড়।

ভারতের দীর্ঘদিনের বন্ধু রাষ্ট্র সাইপ্রাস। দেশটির ভৌগলিক অবস্থান এমন জায়গায় যেখান থেকে ভারত, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে অর্থনৈতিক করিডোর গড়ে তুলতে পারবে। বাণিজ্য ও যোগাযোগের দিক থেকে এই করিডোর গড়তে সাইপ্রাসের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে চায় ভারত। যা চিনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ পরিকল্পনার পালটা হিসেবে মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ এই সফরে এক ঢিলে দুই পাখি মারবে ভারত। শুধু তাই নয়, ২০২৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাউন্সিলের সভাপতিত্ব করতে চলেছে সাইপ্রাস। সেখানে ইউরোপের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যকে বুস্ট করতে নয়াদিল্লির সহায় হতে পারেন সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডুলিডেস।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement