সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের মুখে পড়ে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত বদল। দেশে সামরিক আইন লাগু করেও জনরোষে তা প্রত্যাহার করে নিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার (South Korea) প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। সবমিলিয়ে রাতভর নাটকীয় রাজনৈতিক অস্থিরতার সাক্ষী হল পূর্ব এশিয়ার এই দেশ।
গত মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে ঐতিহাসিক ঘোষণা করেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট। অভিযোগ তোলেন, উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উনের মদতে ক্ষমতা দখলের ছক কষছে বিরোধীরা। এই পরিস্থিতি থেকে দেশকে রক্ষা করতে সামরিক আইন বা মার্শাল ল জারি করা হয়। বকলমে এই আইন দেশে জরুরি অবস্থা লাগু করার সামিল। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওল লাইভ সম্প্রচারে জানান, রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিকে পরাহত করতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
তবে প্রেসিডেন্টের এই ঘোষণার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে দেশের জনতা। দেশের নানা প্রান্তে শুরু হয় বিক্ষোভ, আন্দোলন। সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পথে নামে গোটা দেশ। বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরাও সংসদ ভবনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভ সামাল দিতে সংসদ ভবন চত্বরে সেনা নামাতে হয় সরকারকে। পুলিশের সঙ্গেও শুরু হয় খণ্ডযুদ্ধ। আইন সামরিক প্রত্যহার তো বটেই ইউন সুক ইওলকে গ্রেপ্তারের দাবি তোলা হয়। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাচ্ছে বুঝতে পেরেই সিদ্ধান্ত বদল করে সরকার। শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় সামরিক আইন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে প্রেসিডেন্টের মসনদে বসেন ইওল। তার পর থেকেই তিনি সংসদের নিজস্ব ব্যবস্থা প্রয়োগ করতে লাগাতার চেষ্টা করে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু সেখানে বিরোধী দলগুলি সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে পড়ে তাঁর দল পিপল পাওয়ার পার্টি তথা পিপিপির থেকে। সম্প্রতি ২০২৫ সালের বাজেট বিলকে কেন্দ্র করে শাসক পিপিপি এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান বিরোধী দলের মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়। এদিকে তাঁর স্ত্রী ও তাঁর সরকারের শীর্ষ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির মামলার স্বাধীন তদন্তের দাবি নাকচ করেও বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েন ইওল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.