সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গ্রিন কার্ডেও স্বস্তি নেই আমেরিকায়। ডোনাল্ড ট্রাম্প শাসনে এই কার্ড ধারকদের উপর এবার চাপ বাড়ানো শুরু করল মার্কিন প্রশাসন। সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, গ্রিন কার্ড আত্মসমর্পণ করার জন্য ভারতীয়দের উপর চাপ বাড়াচ্ছে মার্কিন প্রশাসন। বিমানবন্দরেই এই সংক্রান্ত ফর্ম সাক্ষর করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে শুল্ক দপ্তর ও সীমান্ত সুরক্ষা আধিকারিকদের তরফে। যারা রাজি হচ্ছেন না তাঁদের আটক, সাসপেন্ড এমনকী জোর করে আমেরিকা থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ উঠছে, ট্রাম্পের মস্তিষ্কপ্রসূত মার্কিন নাগরিকত্ব বিক্রির পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতেই এই পদক্ষেপ শুরু হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, এই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি করে টার্গেট করা হচ্ছে প্রবীণ ভারতীয়দের। যারা মূলত আমেরিকায় ছুটি কাটাতে আসেন। বিমানবন্দরে তাঁদের রীতিমতো জেরা করা হচ্ছে আধিকারিকদের তরফে। মার্কিন গ্রিন কার্ডধারীদের উপর যে চাপ আসতে চলেছে সে আভাষ অবশ্য আগেই দিয়েছিলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “এক জন গ্রিন কার্ডধারীর আমাদের দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য থাকার অধিকার নেই।” ঠিক তার পরই প্রবীণ গ্রিন কার্ড ধারকদের উপর কড়াকড়ি শুরু করল সেখানকার প্রশাসন। এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ এই কার্ড ধারকরা। ফ্লোরিডার অভিভাসন আইনজীবী অশ্বিনী শর্মা বলেন, ‘ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের পর এই সব প্রশাসনিক আধিকারিকরা নিজেদেরই বিচারক ভাবতে শুরু করেছেন। ওদের লক্ষ্য যে কোনও ভাবে গ্রিন কার্ড আত্মসমর্পণের ফর্ম ৪০৭ সাক্ষর করানো। এর জন্য প্রবীণ ভারতীয়দের আটক এমনকী হুমকি দিতেও দ্বিধা করছেন না তাঁরা।’
উল্লেখ্য, অবৈধ বাসিন্দাদের তাড়িয়ে আমেরিকায় নাগরিকত্বের ব্যবসা শুরুর পরিকল্পনা ফেঁদেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি নিজের সেই পরিকল্পনার কথাও প্রকাশ্যে জানানো হয়েছে। ট্রাম্প বলেন, “আমেরিকায় গোল্ড কার্ড বিক্রি করার পরিকল্পনা করেছি। এতে গ্রিন কার্ডের সুবিধাও মিলবে, যা আমেরিকায় নাগরিকত্বের নতুন পথ খুলে দেবে। ধনী ব্যক্তিরা এই কার্ড কিনে আমাদের দেশে আসতে পারবেন। এখানে এসে তাঁরা প্রচুর অর্থ ব্যয় করবেন, কর দেবেন, সেই সঙ্গে কর্মসংস্থানও তৈরি করবেন।” পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ৪৩ কোটি টাকা দিলে মিলবে ‘গোল্ড কার্ড’। অর্থাৎ মার্কিন নাগরিকত্ব। এর ফলে গ্রিন কার্ড ব্যবস্থার পরিবর্তন হবে। এই গোল্ড কার্ডকে বলা যায় ‘গ্রিন কার্ড’-এরই ‘প্রিমিয়াম’ সংস্করণ। ফলে বিনামূল্যে যারা গ্রিন কার্ড পেয়ে বসবাস করছেন ব্যবসায়ী ট্রাম্পের চোখে তা লোকসান ছাড়া আর কিছু নয়। তাঁদের দেশছাড়া করতেই শুরু হয়েছেন এই অন্যায় তৎপরতা।
তবে মার্কিন প্রশাসনের পাতা ফাঁদে পা না দেওয়ার বার্তা দিচ্ছেন সেখানকার ভারতীয় বংশোদ্ভূত অভিবাসন আইনজীবীরা। তেমনই এক আইনজীবী কৃপা উপাধ্যায় বলেন, “যদি কোনও গ্রিন কার্ড ধারক ৩৬৫ দিনের বেশি আমেরিকায় থাকেন তাহলে তিনি আমেরিকা ত্যাগ করেছেন বলে ধরে নেওয়া হয়। যদিও সেই অভিযোগ আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যেতে পারে। তবে যদি কেউ বিমানবন্দরে ফর্ম ৪০৭ সাক্ষর করেন তাহলে তিনি সেই অধিকার হারাবেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.