সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের ক্ষমতায় আসার পর ‘অবৈধ অভিবাসী হঠাও’ নীতি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। জারি করেছেন একের পর এক আদেশনামা। যার ফল ভুগতে হয়েছে ভারতীয়দের। বিশেষ বিমানে তাঁদের শিকল বেঁধে দেশে ফেরানোর ছবিতে বিতর্কও কম হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তে চরম বিপাকে আমেরিকায় থাকা ভারতীয় পড়ুয়ারাও। যাঁদের বৈধ ভিসা তাঁরাও যে নিরাপদ নন, সেই ইঙ্গিতও দিয়েছেন ট্রাম্প। এই পরিস্থিতিতে হঠাৎই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে ভারতীয় পড়ুয়ার ভিসা। স্নাতক হওয়ার আগেই তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারিত করা হচ্ছিল। যা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনকে ভর্ৎসনা করল আমেরিকার ‘ফেডারেল কোর্ট’। পাশাপাশি ওই ছাত্রের অপসারণের উপর সাময়িক স্থগিতাদেশও জারি করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ২১ বছরের ওই ছাত্রের নাম কৃষলাল ইসেরদাসানি। তিনি আমেরিকার উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা করছিলেন। কৃষের অভিযোগ, স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম (SEVIS)-এর ডাটাবেস থেকে তাঁর সমস্ত তথ্য উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যায়ভাবে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে এফ-১ স্টুডেন্ট ভিসাও। যার জেরে পড়াশোনার শেষ হওয়ার আগেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। আগামী মে মাসেই কৃষের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হওয়ার কথা রয়েছে।
এনিয়ে মামলা গড়ায় ফেডারেল আদালতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই ছাত্রের অপসারণে স্থগিতাদেশ দিয়ে কোর্টের নির্দেশ, “ছাত্রটিকে আগে থেকে সাবধান করা হয়নি। নিজের বক্তব্য রাখার কোনও সুযোগ দেওয়া হয়নি। এবং SEVIS-এ তার এফ-১ স্টুডেন্ট ভিসা রেকর্ড বাতিল হওয়ার আগে কোনও ভুল বোঝাবুঝি সংশোধন করার কোনও সুযোগ পাননি তিনি।” গতকাল ১৫ এপ্রিলের এই আদেশ অনুসারে, ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’ বিভাগ কৃষের স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল বা তাঁকে আটক করতে পারবে না। তবে শুধু কৃষই নয়। খাঁড়া ঝুলছে আরও পার্য ১৩০০ পড়ুয়ার উপর। কারণ তাঁদেরও ভিসার রেকর্ড SEVIS-এর ডাটাবেস সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিরাট সংখ্যায় ভারতীয় পড়ুয়া পার্ট টাইম চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন। আমেরিকায় থেকে নিজের খরচ ও পড়াশুনোর খরচ চালাতে এই পার্ট টাইম চাকরিই একমাত্র ভরসা পড়ুয়াদের। ট্রাম্পের কড়াকড়ির জেরে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হওয়ায় বিপাকে পড়ছেন ভারতীয় পড়ুয়ারা। শুরু হয়েছে ধরপাকড়। নিয়ম অনুযায়ী, আমেরিকায় F-1 ভিসা পাওয়া পড়ুয়াদের সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ করার নিয়ম। তাও আবার সেখানকার কলেজে ভর্তির পর প্রথম এক বছরের জন্য তার মেয়াদ থাকে। পরে আবার চাকরির জন্য প্রশাসনের কাছে অনুমতি নিতে হয়। তবে বাস্তবে সে নিয়ম পালিত হয় না। আর সেই সূত্র ধরে বিদেশি পড়ুয়াদের উপর পড়ছে রাষ্ট্রের কোপ। বিভিন্ন রেস্তোরাঁ, পেট্রোল পাম্পের মতো জায়গায় গিয়ে খোঁজ খবর শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.